Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
Education

পরীক্ষা এড়াতে দিল্লিকে লিখছেন উপাচার্যেরাও

শুক্রবার উপাচার্য পরিষদের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, বর্তমান পরিস্থিতিতে কোনও ভাবেই পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব নয়।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ জুলাই ২০২০ ০৩:৪২
Share: Save:

করোনার কামড় উত্তরোত্তর জোরদার হওয়ায় কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের চূড়ান্ত বর্ষ ও চূড়ান্ত সিমেস্টারের পরীক্ষা রদের আবেদন জানিয়ে রাজ্য সরকার ইতিমধ্যে কেন্দ্রকে চিঠি লিখেছে। এ বার রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উপাচার্যেরা একই সুরে ইউজিসি বা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনকে চিঠি দিতে চলেছেন। পরীক্ষা রদের বিষয়ে রাজ্যের সঙ্গে একমত রাজ্যের বাম নেতৃত্বাধীন কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতিও (ওয়েবকুটা)।

শুক্রবার উপাচার্য পরিষদের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, বর্তমান পরিস্থিতিতে কোনও ভাবেই পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব নয়। ইউজিসি-র ২৯ এপ্রিলের ‘গাইডলাইন’ বা নির্দেশিকা মেনে রাজ্য সরকার সব বিশ্ববিদ্যালয়ে যে-‘অ্যাডভাইজ়রি’ বা পরামর্শ-নির্দেশিকা পাঠিয়েছে, তার ভিত্তিতেই কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের চূড়ান্ত বর্ষ ও চূড়ান্ত সিমেস্টারের পরীক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করা হোক। বিশ্ববিদ্যালয়গুলি যে এই কাজে অনেকটা এগিয়েও গিয়েছে, উপাচার্যেরা এ বার সেটা ইউজিসি-র চেয়ারম্যানকে জানাবেন।

অতিমারির বিপদের মধ্যে পরীক্ষা রদের ব্যাপারে সুর মিলিয়েছে শিক্ষক সংগঠনও। ওয়েবকুটা-র সাধারণ সম্পাদক কেশব ভট্টাচার্য এ দিন এক লিখিত বিবৃতিতে জানান, তাঁদের সংগঠন মনে করছে, এই পরিস্থিতিতে সেপ্টেম্বরের মধ্যে অনলাইন বা অফলাইন কোনও পদ্ধতিতেই ছাত্রছাত্রীদের চুড়ান্ত সিমেস্টারের পরীক্ষা নেওয়া সমীচীন নয়। অতিমারির প্রেক্ষিতে অধিকাংশ দেশেই চূড়ান্ত সিমেস্টারের মূল্যায়ন হচ্ছে ইন্টারনাল অ্যাসেসমেন্ট বা অভ্যন্তরীণ মূল্যায়ন কিংবা শেষ সিমেস্টারে প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে। বর্তমান পরিস্থিতিতে নিরবচ্ছিন্ন মূল্যায়নের রেকর্ড অনুযায়ী অভ্যন্তরীণ মূল্যায়ন, পূর্ববর্তী পরীক্ষার ফল এবং প্র্যাক্টিক্যাল ক্লাসের ভিত্তিতে চূড়ান্ত মূল্যায়ন সেরে নিয়ে নির্দিষ্ট সময়ে ফল প্রকাশ করে উচ্চতর শিক্ষা ও চাকরির চেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে ছাত্রছাত্রীদের সাহায্য করাই শ্রেয় বলে মনে করে ওয়েবকুটা। রাজ্য সরকার বিশ্ববিদ্যালয়গুলির কাছে যে-অ্যাডভাইজ়রি পাঠিয়েছে, পরীক্ষার বদলে তাতে এ ভাবেই ৮০-২০ ফর্মুলায় মূল্যায়ন করতে বলা হয়েছে।

এ দিকে, পরীক্ষার ব্যাপারে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় ১৫ জুলাই উপাচার্যদের নিয়ে অনলাইনে যে-বৈঠক করতে চাইছেন, তাকে ঘিরে জলঘোলা হয়েই চলেছে। রাজ্যপাল ওই ভার্চুয়াল বৈঠকে উপস্থিত থাকার জন্য সরাসরি উপাচার্যদের কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন। কিন্তু রাজ্য সরকারের বর্তমান বিধি অনুযায়ী আচার্য-রাজ্যপাল কোনও বিষয়ে উপাচার্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে চাইলে সেটা করতে হবে উচ্চশিক্ষা দফতরের মাধ্যমে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে সেই বিধি মানা হয়নি। এ দিন উপাচার্য পরিষদের বৈঠকে স্থির হয়েছে, উপাচার্যেরা বিষয়টি রাজ্যপালকে জানাবেন।

রাজ্যপাল কয়েক দিন ধরেই টুইট করে জানাচ্ছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে ছাত্রছাত্রীরা খুবই উদ্বিগ্ন বলে নানা সূত্রে তাঁর কাছে খবর আসছে। পড়ুয়াদের নিয়ে তিনিও চিন্তিত। তাই তিনি উপাচার্যদের সঙ্গে বৈঠকের পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও এই বিষয়ে কথা বলতে চাইছেন। মুখ্যমন্ত্রীকে তিনি একটি চিঠিও দিয়েছেন। তাতে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে একযোগে ইউজিসি এবং কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন ধনখড়। এ দিন তিনি টুইটে জানান, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর ঘরোয়া ভাবে কথা হয়েছে। ছাত্রছাত্রীদের সমস্যা নিয়ে আলোচনা করতে উচ্চশিক্ষা সচিব আজ (শুক্রবার) রাজভবনে আসছেন। ১৫ জুলাই উপাচার্যদের সঙ্গে বৈঠকের পরে যৌথ ভাবে তাঁরা ইউজিসি-র সঙ্গে কথা বলবেন বলে টুইটে জানান রাজ্যপাল। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, এ দিন রাজ্যপালের সঙ্গে উচ্চশিক্ষা সচিবের বৈঠক হয়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Education
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE