ফাইল চিত্র।
সাধারণত শিল্প প্রকল্প আটকে থাকে জমি না-মেলায়, লগ্নি না-আসায়।
ওই দু’টি উপকরণ থাকা সত্ত্বেও প্রকল্প যে ঝুলে থাকে, তার প্রমাণ নোনাডাঙা আইটি বা তথ্যপ্রযুক্তি পার্ক প্রকল্প। সরকারের কোষাগারে অর্থাভাব নয়। স্রেফ দুই দফতরের টানাপড়েনে পরিকাঠামো গড়ে না-ওঠায় রাজ্যের তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের মানচিত্রে নোনাডাঙা আইটি পার্ক এখনও ব্রাত্য। দুই দফতর বলতে নগরোন্নয়ন দফতরের অধীন কেএমডিএ এবং তথ্যপ্রযুক্তি দফতর।
সাত বছর আগে জমি কিনেও ওই প্রকল্পে কাজ শুরু করতে পারেনি এইচএসবিসি, রোল্টা ইন্ডিয়া এবং এইচসিএল। কারণ, কাজ শুরু করার মতো ন্যূনতম পরিকাঠামোই নেই সেখানে। আটকে গিয়েছে ৫০০ কোটি টাকার বিনিয়োগ এবং কমপক্ষে ১২ হাজার কর্মসংস্থানের সুযোগ।
তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পমহল ছাড়াও খাস তথ্যপ্রযুক্তি দফতরের অভিযোগ, প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী নিকাশি, জল, রাস্তা ও বিদ্যুৎ-সংযোগের মতো জরুরি পরিকাঠামো তৈরি করে দেয়নি কেএমডিএ। ফলে নিশ্চিত বিনিয়োগ মজুত থাকা সত্ত্বেও প্রকল্পটি প্রায় হিমঘরে চলে গিয়েছে। ২০১০ সালে নোনাডাঙায় ক্যাম্পাস তৈরির পরিকল্পনা করে লিজে জমি নেয় এইচএসবিসি, রোল্টা ইন্ডিয়া এবং এইচসিএল। ন্যূনতম পরিকাঠামোর অভাবে সাত বছরেও কাজ শুরু করতে পারেনি ওই তিন সংস্থা।
আরও পড়ুন: পুজোয় অনিশ্চিত উত্তরবঙ্গের ট্রেন
রাজ্য সরকারের নির্ধারিত দামেই (একর-প্রতি এক কোটি কুড়ি লক্ষ টাকা) ওই প্রকল্পে লিজে জমি নেয় নোনাডাঙা তথ্যপ্রযুক্তি পার্কে জমি নিয়েছে এইচএসবিসি, রোল্টা এবং এইচসিএল। ২০০৮-’০৯ সালের মন্দা কাটিয়ে ছন্দে ফিরতে শুরু করেছিল তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প। স্থগিত সম্প্রসারণ পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করতে চাইছিল এইচএসবিসি, রোল্টা এবং এইচসিএল। রাজ্যের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী জমি পাওয়ার পাঁচ বছরের মধ্যে প্রকল্প চালু করে দেওয়ার কথা। কিন্তু পরিকাঠামোর অভাবেই কাজে এগোনো যায়নি বলে অভিযোগ।
নোনাডাঙায় সাড়ে তিন একর জমিতে ক্যাম্পাস তৈরির পরিকল্পনা করেছে এইচএসবিসি। জমি নেওয়ার সময়ে তারা জানিয়েছিল, প্রকল্প চালু হলে এখানে কর্মী-সংখ্যা দাঁড়াবে প্রায় চার হাজার। ২৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগে নোনাডাঙায় সাড়ে পাঁচ একর জমিতে ক্যাম্পাস গড়ার পরিকল্পনা রয়েছে রোল্টা ইন্ডিয়ার। তাদের প্রকল্পে পাঁচ হাজারেরও বেশি কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে। আর দেড় একর জমির উপরে নিজস্ব কেন্দ্র তৈরি করতে চায় এইচসিএল।
বিশেষ আর্থিক অঞ্চল নয়। ছোট ছোট জমিতে তথ্যপ্রযুক্তি হাব গড়ে তুলতে লগ্নিকারীদের ডাক দিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অথচ খাস কলকাতাতেই এই ধরনের একটি প্রকল্প বছরের পর বছর আটকে আছে। অন্য প্রকল্পের জন্য রাস্তা বানাতে গিয়ে নোনাডাঙায় লগ্নিকারী রোল্টা ইন্ডিয়ার জমি দখল করে ফেলেছিল কেএমডিএ। অভিযোগ ওঠায় রাস্তা তৈরির কাজ বন্ধ হয়ে যায়। তখনও কেএমডিএ বলেছিল, শীঘ্রই তারা নোনাডাঙার পরিকাঠামো তৈরি করে দেবে। তার পরেও তিন বছর কেটে গিয়েছে। কাজ হয়নি।
এই পরিস্থিতিতে এক চিলতে রুপোলি রেখা দেখতে পাচ্ছে সংশ্লিষ্ট শিল্পমহল। তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প দফতরের সচিব দেবাশিস সেন নগরোন্নয়ন সচিব থাকাকালীন গোটা বিষয়টি জানতেন। রাজ্য সরকারি সূত্রের খবর, সমস্যার সমাধান করতে আলোচনা শুরু করেছেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy