ভরসা: সামিনুর বিবিদের পাশে নিভাদেবীরা। নিজস্ব চিত্র
মৃত্যু কী, তার অর্থ বোঝে না ছোট ছোট ছেলেমেয়েগুলো। তবে দু’দিন ধরে বাড়ির সবকিছুই যে অন্য রকম হয়ে গিয়েছে, সেটা দিব্যি ধরতে পারছে ওরা। বাড়ির সামনে প্রতিদিনের খেলাটাও তাই বন্ধ। খিদে পেলেও মায়েদের কাছেও ওরা আবদার করতে পারছে না।
শোকের আবহে দু’দিন ধরে হাঁড়ি চড়েনি মানিকচকের এনায়েতপুরের পাঁচটি বাড়িতে। সামান্য চা-জলও মুখে তুলতে চাইছেন না রিমা, মুন্নি ও সামিনুর বিবিরা। উত্তরপ্রদেশে কার্পেট কারখানায় বিস্ফোরণে স্বামী হারিয়েছেন ওঁরা। এই পরিস্থিতিতে তাঁদের কচিকাঁচাদের সামলাচ্ছেন গ্রামেই তাঁদের প্রতিবেশী গীতা চৌধুরী, নিভা মহালদারেরা। শনিবার দুঃসংবাদ আসার পর থেকেই এই পরিবারগুলির পাশে রয়েছেন গীতাদেবীরা। তাঁরাই খাবারের ব্যবস্থা করছেন। বাচ্চাদের বাড়ি নিয়ে গিয়ে খাইয়ে দিচ্ছেন। নিভাদেবী বলেন, “উৎসব-অনুষ্ঠানে সকলে সমান ভাবে আমরা অংশ নিয়েছি। এমন বিপদের দিনে অসহায় পরিবারগুলির থেকে দূরেই বা থাকি কেমন করে।” গীতাদেবী বলেন, “সমানে কেঁদে চলেছেন ওঁরা। আমরা চা, সরবত নিয়ে ওঁদের জোর করে খাইয়ে দিচ্ছি।”
শনিবার উত্তরপ্রদেশের ভদোহীর রোহতাবাজারে কার্পেট কারখানায় বিস্ফোরণে মানিকচকের দুই গ্রামের নয় শ্রমিকের মৃত্যু হয়। রিমা বিবির স্বামী জাহাঙ্গির আনসারি ও দেওর কাদির আনসারি মারা গিয়েছেন। রিমার দেড় মাসের শিশুকন্যা রয়েছে। মুন্নি বিবির স্বামী আলমগির আনসারি মারা গিয়েছেন। তাঁদের মেয়ে দু’বছরের, ছেলেটি তিন বছরের। স্বামী আব্দুল কালাম মোমিনকে হারিয়েছেন সামিনুর বিবি। তাঁর তিন মেয়ে। কারও বয়স পাঁচের বেশি নয়। নিভাদেবী বলেন, “বাচ্চাদের তো বোঝার ক্ষমতা নেই, যে তারা বাবাকে হারিয়েছে। খিদেয় কাঁদছে। বাড়িতে নিয়ে গিয়ে আমাদের যা জুটছে তা-ই খাওয়াচ্ছি।”
মালদহ জেলা পরিষদের সভাধিপতি গৌরচন্দ্র মণ্ডল বলেন, “প্রতিবেশীরা একে অপরের পাশে দাঁড়ানোয় বাড়ির ছোটদের দেখভাল হচ্ছে। এ ভাবেই আমরা সব সময় একে অপরের পাশে থাকি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy