কান্না: ভেঙে পড়েছেন সুজিত সিংহের দাদা বিরজু সিংহ। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়।
লাগাতার তল্লাশিতে ভদ্রেশ্বরের তেলেনিপাড়ার জেটি-দুর্ঘটনায় আরও তিন জনের দেহ মিলল বৃহস্পতিবার। এই নিয়ে ওই দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে হল ৬। অন্তত দশ জন এখনও নিখোঁজ বলে মনে করছেন প্রশাসনের কর্তারা। তাই তল্লাশিও জারি রয়েছে। গ্রেফতার করা হয়েছে ঘাটের ইজারাদার-সহ চার জনকে। আগামী ছ’মাসের মধ্যে পুরনো ওই বাঁশের জেটির পরিবর্তে নতুন কংক্রিটের জেটি তৈরির আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন।
বুধবার সকালে জোয়ারের ধাক্কায় তেলেনিপাড়া ফেরিঘাটের বাঁশের জেটিটি ভেঙে অন্তত ৫০ জন তলিয়ে যান। তিন জনের দেহ মেলে। নিখোঁজ ছিলেন প্রায় ১৩ জন। বৃহস্পতিবার সহদেব কুরেশি (১৮), শামিম কুরেশি (৫২) এবং সুজিত সিংহ (২১) নামে তিন জনের দেহ মেলে। সহদেব এবং সুজিত তেলেনিপাড়ারই বাসিন্দা। শামিম ভদ্রেশ্বর পুরসভার কর্মী ছিলেন। দুর্ঘটনার পরে বুধবার যে বৃদ্ধার দেহ মিলেছিল, এ দিন তাঁর পরিচয় জানা গিয়েছে। পুলিশ জানায়, কৌশল্যা কাহার (৬৪) নামে ওই বৃদ্ধা কাঁকিনাড়ায় থাকতেন।
দুর্ঘটনার পরে বাঁশের জেটিটির রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। রাতেই জেটিটির ইজারাদার সুকোমল চক্রবর্তী এবং তাঁর তিন সহযোগী দীপঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়, সুজিত গঙ্গোপাধ্যায় ও সুভাষ পালকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁদের বিরুদ্ধে জেটি দেখভালে গাফিলতি-সহ ৬টি ধারায় মামলা রুজু করে পুলিশ। ধৃতদের বৃহস্পতিবার চন্দননগর আদালতে হাজির করানো হয়। বিচারক তাঁদের ন’দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।
মন্ত্রী তপন দাশগুপ্ত জানান, অস্থায়ী জেটিগুলিতে জোয়ারের সময় পারাপারে নিষেধ রয়েছে। সেই সময়ে জেটিতে যাত্রীদের দাঁড়ানোতেও নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। প্রতি ঘাটে পাঁচটি লাইফ জ্যাকেট ও পাঁচটি টিউব রাখার কথা ইজারাদারদের। এর কিছুই তেলেনিপাড়া ঘাটের ক্ষেত্রে মানা হয়নি। কার গাফিলতি, তা দেখা হচ্ছে।
এ দিন নবান্ন থেকে পরিবহণ দফতরের দু’টি দল উত্তরপাড়া, শ্রীরামপুর, কোন্নগর-সহ হুগলির কিছু ফেরিঘাট পরিদর্শন করে। একটি দলে ছিলেন রাজ্য পরিবহণ নিগমের ম্যানেজিং ডিরেক্টর নারায়ণস্বরূপ নিগম। তিনি তেলেনিপাড়া ফেরিঘাটেও যান। পরে ভদ্রেশ্বর পুরসভায় জেলাশাসক সঞ্জয় বনশল, পুলিশ সুপার সুকেশ জৈন-সহ প্রশাসনের কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে যোগ দেন ওই পরিবহণ কর্তা। প্রশাসন সূত্রে খবর, বৈঠকে ঠিক হয়েছে, ৬ মাসের মধ্যে ভেঙে যাওয়া জেটির জায়গায় সাড়ে ৫ কোটি টাকায় কংক্রিটের জেটি বানাবে পরিবহণ দফতর। নির্মাণকাজ চলাকালীন পারাপারে যাতে সমস্যা না-হয়, সে কারণে একটি অস্থায়ী জেটিও তৈরি করা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy