Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

বার ডান্সার বানাতে পাচার দিল্লির তিন তরুণী, উদ্ধার শিলিগুড়িতে

বছরভর নানা রাজ্যে গণধর্ষিত হওয়ার পরে দিল্লিতে পাওয়া গিয়েছে ডায়মন্ড হারবারের কিশোরী আয়েশা (পরিবর্তিত নাম)-কে। আর দিল্লির পাচার হয়ে যাওয়া তিন তরুণীকে উদ্ধার করা হল শিলিগুড়িতে।

দীক্ষা ভুঁইয়া
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০১৬ ০৩:১৯
Share: Save:

বছরভর নানা রাজ্যে গণধর্ষিত হওয়ার পরে দিল্লিতে পাওয়া গিয়েছে ডায়মন্ড হারবারের কিশোরী আয়েশা (পরিবর্তিত নাম)-কে। আর দিল্লির পাচার হয়ে যাওয়া তিন তরুণীকে উদ্ধার করা হল শিলিগুড়িতে।

তিন তরুণীকে যে-ঘরে আটকে রাখা হয়েছিল, একটি মেয়ে মোবাইল থেকে হোয়াটসঅ্যাপ করে দাদাকে সেই ঘরের ছবি পাঠিয়েছিলেন। আর সূত্র ধরেই শিলিগুড়ি থেকে উদ্ধার করা হয় তিন তরুণীকে। তাঁদের বয়স ২১ থেকে ২৭। তরুণীদের খোঁজে বুধবার শিলিগুড়ির বিভিন্ন বার-এ অভিযান চালানো হয়। এক তরুণী সেই ঘর থেকে কোনও ভাবে বেরিয়ে এসে দাদাকে ঘরটির ছবি পাঠান। কোনও পাচারকারী ধরা পড়েনি।

তিন তরুণীর এক জন দিল্লি হাইকোর্টের এক আইনজীবীর বোন। পুলিশের কাছে দেওয়া বয়ানে ওই তরুণীরা জানান, কয়েক মাস আগে এক দিল্লির ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সংস্থার এক তরুণীর সঙ্গে তাঁদের পরিচয় হয়। সেই তরুণীই একটি বড় ইভেন্টে কাজের সুযোগ আছে বলে তাঁদের আশ্বাস দেন এবং পরিচয় করিয়ে দেন এক যুবকের সঙ্গে। অভিযোগ, এক মাসের জন্য প্রত্যেককে ৪০ হাজার টাকা দেওয়ার চুক্তিতে ওই তিন তরুণীকে শিলিগুড়ি নিয়ে যাওয়া হয়।

তিন তরুণী পুলিশকে জানান, দিল্লি থেকে বাগডোগরা পর্যন্ত তাঁদের বিমানের টিকিট কেটে দেওয়া হয়। ৫ জানুয়ারি তাঁরা বাগডোগরায় পৌঁছন। সেখানে তাঁদের জন্য গাড়ির ব্যবস্থা ছিল। শিলিগুড়িতে পৌঁছনোর পরে সেবক রোডে়র একটি হোটেলে ঠাঁই হয় তাঁদের। সেখান থেকে তিন জনকেই নিয়ে যাওয়া হয় ভক্তিনগর এলাকার একটি দোতলা বাড়িতে।

আরও পড়ুন:
বছরভর ধর্ষণ, বাংলার মেয়ে ধুঁকছে দিল্লিতে
দিনে দশ বার করে ধর্ষণ, দিল্লির হাসপাতালে ধুঁকছে ডায়মন্ড হারবারের মেয়ে

তিন তরুণীর অভিযোগ, ওই বাড়িতে তাঁদের একটি ঘরে আটকে রাখা হয়। মোবাইল কেড়ে না-নিলেও তা ব্যবহারও করতে দেওয়া হচ্ছিল না। তার পরেই তিন তরুণী জানতে পারেন, তাঁদের নিয়ে আসা হয়েছে বারে নর্তকীর কাজ করানোর জন্য। দিল্লির ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সংস্থা তাঁদের বিক্রি করে দিয়েছে।

এক তরুণী (আইনজীবীর বোন) মঙ্গলবার গভীর রাতে মোবাইল থেকে লুকিয়ে দিল্লিতে দাদার মোবাইলে হোয়াটসঅ্যাপ করে সব জানান। ওই আইনজীবী বিষয়টি জানান দিল্লিরই এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে। বুধবার বিকেলে আইনজীবীর বোনকে উদ্ধার করে ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। অন্য দু’জনকে বারে নাচানোর জন্য পাঠানো হয়েছিল বলে অভিযোগ। ভক্তিনগর পুলিশ বুধবার রাত পর্যন্ত শিলিগুড়ির বিভিন্ন বারে তল্লাশি চালায়। উদ্ধার করা হয় অন্য দুই তরুণীকেও।

পুলিশ জানাচ্ছে, ভক্তিনগর এলাকায় এ ভাবে প্রচুর মেয়েকে এনে ব্যবসায় নামানো হয়। তাঁদের উদ্ধারের জন্য তল্লাশি চলছে। শিলিগুড়ি কমিশনারেটের এক কর্তা বলেন, ‘‘মনে হচ্ছে, পাচার চক্রের জাল বহু দূর ছড়ানো। ওই চক্র মহারাষ্ট্র, দিল্লিতেও সক্রিয়। তারা তরুণীদের কাজের টোপ দেয়। পরে বেচে দেয় এবং দেহ ব্যবসায় নামায়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE