ছবি: সংগৃহীত
দেওচড়াই মোড় এলাকায় তিনটি ইটভাটায় কর্মী নিয়োগ হওয়ার কথা ছিল শনিবার সকালে। ভালয় ভালয় তা মিটেও যায়। কিন্তু গোলমাল বাধে তার পরে দু’টি রাজনৈতিক দলের মিছিল ঘিরে। শান্তিপূর্ণ ভাবে কাজ মিটে যাওয়ায় মিছিল বার করে বিজেপি। দলের একটি অংশের দাবি, এ বারে ইটভাটায় তাদের সমর্থকদের বড় অংশ কাজ পেয়েছে। সেটা বোঝাতেই মিছিল বার হয়। উল্টো দিকে একটি মিছিল বার করে তৃণমূলও। অভিযোগ, এর পরেই এলাকা উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। বোমাবাজি শুরু হয়। সংঘর্ষে তৃণমূলের দু’জন আহত হয়েছেন বলে মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষের দাবি। তিনি দাবি করেন, বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা পুলিশের উপরে বোমা ছোড়ে এবং পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করে। যদিও বিজেপি এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। গোলমাল শুরু হতেই এলাকার দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। বন্ধের চেহারা নেয় গোটা এলাকা। পুলিশ এই ঘটনায় এক জনকে আটক করেছে।
দিনভর একাধিক সংঘর্ষ হয় তৃণমূল আর বিজেপির। এর মধ্যে একটি সংঘর্ষে আহত প্রিতাপ বর্মণ নামে এক তৃণমূল সমর্থক মারা গিয়েছেন বলে রাতে দাবি করেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। যদিও জেলার এসপি বা অন্য পুলিশ কর্তারা জানান, এমন কোনও খবর তাঁদের কাছে নেই।
দেওচড়াই গ্রামটি রবীন্দ্রনাথ ঘোষের বিধানসভা এলাকার মধ্যে। দু’দিন পরে উত্তরবঙ্গ সফরে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী। তার আগে এই এলাকায় মরিয়া হয়ে রাজনৈতিক জমি পুনর্দখলের জন্য তৃণমূল পাল্টা মিছিল করল কিনা, সেই প্রশ্নও উঠেছে। শুধু দেওচড়াইতেই নয়, শনিবার দিনভর কোচবিহার জেলার আরও কয়েকটি জায়গা তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে রইল। যেমন, বলরামপুর-১ বা বক্সিরহাটের শালবাড়ি-২ পঞ্চায়েত এলাকা। সব মিলিয়ে চার জন জখম।
দেওচড়াই মোড়ের ঘটনা পুলিশের সঙ্গে মারামারি পর্যন্ত গড়ায়। দুই দলের মধ্যে গোলমাল সামলাতে পুলিশ লাঠিচার্জও করে। বিজেপি পুরো বিষয়টির জন্য তৃণমূলকে দোষারোপ করেছে। স্থানীয় বিজেপি নেতা রাজীব সরকার জানান, ‘‘তৃণমূল আমাদের দু’জন কর্মীকে মারধর করে। প্রতিবাদ করলে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। তাতে আমাদের ৭ জন আহত হন।’’ বিজেপির নাটাবাড়ির পর্যবেক্ষক পুষ্পেণ সরকার জানান, ‘‘বোম-গুলির রাজনীতি করছে তৃণমূল।’’ যদিও রবীন্দ্রনাথের দাবি, ‘‘বহিরাগত দুষ্কৃতীদের নিয়ে এসে ইটভাটায় কর্মসংস্থান নষ্ট করার চেষ্টা করছে বিজেপি।’’ এলাকায় পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছে।
তুফানগঞ্জ-২ ব্লকের তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষে মোট পাঁচ জন জখম অবস্থায় তুফানগঞ্জ মহাকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এঁদের মধ্যে কানু অধিকারী বলেন, ‘‘আমি বিজেপি কর্মী। তল্লিগুড়িতে দলীয় কার্যালয়ে মিটিং চলাকালীন হামলা করে তৃণমূল।’’ আর এক জখম ব্যক্তি, সুশীল বর্মণ বলেন, ‘‘আমরা তৃণমূল করি। রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় আমাদের চার জনের উপর হামলা চালায় বিজেপির লোকজন।’’
বলরামপুর-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি সামিউল ইসলাম বলেন, ‘‘শনিবার বিকেলে আমরা মহামিছিল করি। সেই মিছিল ভেস্তে দেওয়া এবং অশান্তির জন্য বিজেপি নিজেদের কার্যালয়ের সামনে নিজেরাই বোমাবাজি করে। আমাদের মিছিল শান্তিপূর্ণ ভাবে করেছি।’’ তুফানগঞ্জ বিধানসভার বিজেপির পর্যবেক্ষক উৎপল দাস পাল্টা বলেন, ‘‘আমাদের সংকল্প যাত্রা নিয়ে মিটিং চলছিল। তখনই অতর্কিত হামলা করে তৃণমূল।’’
তুফানগঞ্জ মহকুমার এসডিপিও জ্যাম ইয়াং জিম্বা ফোন ধরেননি। এসএমএসেরও উত্তর দেননি। তবে পুলিশের একাংশ থেকে জানা গেছে প্রতিটি বিষয়ের উপর নজর রাখা হচ্ছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy