উত্তপ্ত: জয়নগর থানার সামনে তৃণমূল কর্মীদের মধ্যে হাতাহাতি। শুক্রবার। ছবি: সুমন সাহা
জয়নগরে তৃণমূল বিধায়কের গাড়ি লক্ষ করে বেপরোয়া হামলা ও খুনের ঘটনায় অস্বস্তি এড়াতে পারছে না শাসক শিবির। প্রকাশ্যে বিরোধীদের তোলা গোষ্ঠী-দ্বন্দ্বের অভিযোগ অস্বীকার করলেও শুক্রবার ঘটনাস্থলে গিয়ে সেই উত্তাপ টের পেয়েছেন দলের নেতারাই। পাশাপাশি এই ঘটনার পর আইনশৃঙ্খলা নিয়েও প্রশ্নের মুখে পড়েছে স্থানীয় প্রশাসন।
বৃহস্পতিবার ভরসন্ধ্যায় বিধায়কের গাড়ি ঘিরে বোমা,গুলিতে তিন জনের মৃত্যু নিয়ে চাপানউতোর চলছিলই। বিরোধীরা গোষ্ঠী-দ্বন্দ্বের অভিযোগ করলেও তাদের দিকেই পাল্টা আঙুল তুলেছিলেন শাসক দলের নেতারা। তবে এ দিন ঘটনাস্থলের কাছেই দলীয় বৈঠকে যোগ দিতে এসে এই খুনের ঘটনা নিয়ে গোষ্ঠী-দ্বন্দ্বের অভিযোগ পেয়েছেন জেলা সভাপতি শুভাশিস চক্রবর্তী। সেখানে উপস্থিত দলীয় নেতা-কর্মীদের একাংশ প্রকাশ্যেই এই ঘটনা নিয়ে ক্ষোভ জানাতে থাকেন। দলের এক কর্মীকে ধরে টানাহেঁচড়াও চলে। সেখানেই ক্ষোভের আঁচ টের পেয়েছেন জেলা যুব তৃণমূলের সভাপতি তথা বিধায়ক শওকত মোল্লাও। গোষ্ঠী-দ্বন্দ্বের অভিযোগ সম্পর্কে জেলা সভাপতি শুভাশিসবাবু অবশ্য বলেন, ‘‘এটা দুষ্কৃতীদের কাজ। তারা নিজেদের স্বার্থসিদ্ধিতে বাধা পেয়েই এ কাজ করেছে। এই ঘটনায় কোনও রাজনীতি নেই।’’
খুনের ঘটনা প্রসঙ্গে এ দিনও সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘জয়নগর শহরে বিধায়কের গাড়িতে গুলি, বোমা চলল। তৃণমূলের অন্তর্দ্বন্দ্বে তিন জন মারা গেলেন। শুক্রবারও দিনের আলোয় গুলি করে পুরুলিয়ায় খুন হলেন এক জন। ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটছে। নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন সকলে। এর দায় মুখ্যমন্ত্রীকেই নিতে হবে।’’ কংগ্রেস নেতা মনোজ চক্রবর্তীর মন্তব্য, ‘‘তৃণমূলের হাতেই তৃণমূল নিরাপদ নয়। আরও ভয়ঙ্কর দিন আসছে। যদুবংশ এ ভাবেই ধ্বংস হবে!’’
বিরোধীদের এই অভিযোগ অস্বীকার করে তাদের বিরুদ্ধেই অশান্তি তৈরির পাল্টা অভিযোগ করেছেন তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘যারা এ সব বলছে, তারাই মারছে।’’ যদিও বিরোধীদের পাল্টা বক্তব্য, জয়নগরের সব স্তরে রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ এখন শাসক দলেরই হাতে। প্রশ্নের জবাবে পার্থবাবুও জানিয়েছেন, গোষ্ঠী-দ্বন্দ্বের বিষয়টিও দল খোঁজখবর করে দেখছে।
শাসক দলের অন্তর্দ্বন্দ্বের জেরে রাজ্য আগ্নেয়াস্ত্রের কারখানায় পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তাঁর মন্তব্য, ‘‘পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে বোমা-বন্দুকের আওয়াজ শোনা যাচ্ছে। তৃণমূলের গোষ্ঠী-দ্বন্দ্বে রাজ্য তো আগ্নেয়াস্ত্রের কারখানায় পরিণত হয়েছে!’’ যদিও অভিযোগ খণ্ডন করে পার্থবাবু বলেন, ‘‘সারা ভারতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই আক্রমণের লক্ষ্য। ফলে এ রাজ্যে গোলমাল পাকানোই ওদের (বিরোধীদের) কাজ।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy