কান্দি পুরসভা আপাতত দখল করা হচ্ছে না তৃণমূলের। কলকাতা হাইকোর্টে জোর ধাক্কা খেল রাজ্য সরকার। মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত কান্দিতে চেয়ারম্যান নির্বাচন হবে না। জানিয়ে দিলেন বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায়। মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপারকে কড়া বার্তা দিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ, মার্চের ৩ তারিখের মধ্যে কান্দির কাউন্সিলর অপহরণ কাণ্ডের বিশদ রিপোর্ট জমা দিতে হবে হাইকোর্টে। পুলিশ সুপারের তরফে কর্তব্যে কোনও গাফিলতি দেখা গেলে বিষয়টির তদন্তভার সিবিআই-এর হাতে তুলে দেওয়া হতে পারে বলেও বৃহস্পতিবার হুঁশিয়ারি শুনিয়েছেন বিচারপতি।
২০১৫-এ হওয়া পুরসভা নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে কান্দি পুরসভার বোর্ড গঠন করে কংগ্রেস। এক বছর কাটতে না কাটতেই কংগ্রেস ভাঙিয়ে বোর্ড গঠনের চেষ্টা শুরু করে তৃণমূল। কংগ্রেস ছেড়ে পাঁচ কাউন্সিলর প্রথমে তৃণমূলে যান। পরে আরও এক কাউন্সিলরকে তৃণমূল ভাঙিয়ে নেয়। এতে কংগ্রেসের বোর্ড সংখ্যালঘু হয়ে পড়ে। কিন্তু দুই বাম সমর্থিত নির্দল কাউন্সিলরের সমর্থন আদায় করে কংগ্রেস ফের ম্যাজিক ফিগার জোগাড় করে ফেলে। ফলে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে তৃণমূল যে অনাস্থা প্রস্তাব এনেছিল, তাতে তৃণমূলের পরাজয় নিশ্চিত ছিল। কিন্তু অনাস্থা প্রস্তাবের উপর ভোটাভুটির আগেই এক বাম সমর্থিত নির্দল কাউন্সিলর দেবজ্যোতি রায়কে অপহরণ করা হয়। কংগ্রেস তখনই হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল। কলকাতা হাইকোর্ট মুর্শিদাবাদ পুলিশকে নির্দেশ দেয়, ভোটাভুটির দিন দুপুর ১২টার মধ্যে কান্দি পুরসভার অপহৃত কাউন্সিলরকে উদ্ধার করে পুরসভায় হাজির করতে। পুলিশ তা করতে পারেনি। ফলে তৃণমূলের আনা অনাস্থা প্রস্তাব পাস হয়ে যায়। কান্দির পুরবোর্ড হাতছাড়া হয় কংগ্রেসের।
আরও পড়ুন:
১ মার্চেই কেন্দ্রীয় বাহিনী, বলছে কংগ্রেস
এই ঘটনার কথা জানিয়ে ফের হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল কংগ্রেস। বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় বৃহস্পতিবার দু’পক্ষের কথাই শোনেন। তার পর তিনি জানিয়ে দেন, আপাতত কান্দি পুরসভায় চেয়ারম্যান নির্বাচন স্থগিত রাখতে হবে। মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত চেয়ারম্যান নির্বাচন হবে না। মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপারকে বিচারপতি নির্দেশ দিয়েছেন, মার্চের ৩ তারিখের মধ্যে কাউন্সিলর অপহরণ কাণ্ডের বিশদ রিপোর্ট জমা দিতে। দেবজ্যোতি রায়কে ভোটাভুটি থেকে দূরে রাখতে কেউ অপহরণ করে আটকে রেখেছিল, নাকি তিনি নিজেই আত্মগোপন করে ছিলেন, পুলিশ সুপারকে সে বিষয়ে বিশদ রিপোর্ট দিতে বলেছেন বিচারপতি। সময় মতো সন্তোষজনক রিপোর্ট পাওয়া না গেলে এই মামলার তদন্তভার সিবিআই-এর হাতে তুলে দেওয়া হবে বলেও বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় এ দিন জানান। সিবিআই তদন্তের সম্ভাবনার কথা উঠতেই অস্বস্তি বাড়ে রাজ্য সরকারের কৌঁসুলিদের। তাঁরা বিচারপতিকে অনুরোধ করেন, সিবিআই তদন্ত সংক্রান্ত বিষয়টি আদালতের রেকর্ডে আপাতত না রাখতে। বিচারপতি সে দাবি মেনে নিয়েছেন। তবে কান্দি কাণ্ডে পুলিশ-প্রশাসনের ভূমিকার উপর যে কলকাতা হাইকোর্ট কড়া নজর রাখছে, তা বিচারপতি এ দিন স্পষ্ট করে দিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy