তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের উচ্ছ্বাস ভাটপাড়া পুরসভায়। মঙ্গলবার। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়
ভাটপাড়া পুরসভায় অনাস্থা প্রস্তাবের উপরে ভোটাভুটিতে মঙ্গলবার হাজির হলেন না বিজেপির পুরপ্রধান-সহ কাউন্সিলরেরা। পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে ভোট দিলেন তৃণমূলের ১৯ জন। এই পরিস্থিতিতে পুরসভার দখল কার্যত সময়ের অপেক্ষা বলেই দাবি করছে তৃণমূল শিবির। যদিও মঙ্গলবার ভোটাভুটির ফল প্রকাশ করেনি প্রশাসন। হাইকোর্টের বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত এবং প্রতীকপ্রকাশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ সোমবার নির্দেশ দিয়েছিল, ভোটাভুটির ফল মুখবন্ধ খামে ওই বেঞ্চেই জমা দিতে হবে। বেঞ্চ পরবর্তী নির্দেশ দেবে।
হাইকোর্টের নির্দেশেই এ দিনের ভোটাভুটি। ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংহ জানান, পদ্ধতিগত ত্রুটির জন্য মঙ্গলবার হাইকোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করা যায়নি। সুপ্রিম কোর্ট পুরপ্রধানকে হলফনামা জমা দিতে বলেছে। বুধবার আপিল মামলা দায়ের হবে। অর্জুনের কথায়, ‘‘পুরো প্রক্রিয়া যখন আইনি পথে চলছে, তখন আমরা এর শেষ দেখে ছাড়ব।’’ কিন্তু বিজেপির কাউন্সিলররা আদালতে গেলেও ভোটাভুটিতে নেই কেন? বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘ওরা যা অবস্থান নিয়েছে, তা-ই করেছে।’’
এক সময়ে তৃণমূল শিবিরের দাপুটে নেতা অর্জুনের ‘গড়’ বলেই পরিচিত ভাটপাড়া। তৃণমূলের টিকিটে জিতে পুরপ্রধান ছিলেন তিনি। পরে বিজেপি শিবিরে যোগ দিয়ে সাংসদ হন। পুরপ্রধানের পদ খোয়ান। পুরসভার ক্ষমতা ধরে রাখা অর্জুনের কাছে কার্যত সম্মানের লড়াই।
তৃণমূলের জেলা সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক জানান, মামলায় পক্ষ হতে চেয়ে তাঁরা সুপ্রিম কোর্টে ‘ক্যাভিয়েট’ করেছেন। ফলে তাঁদের কথা না শুনে সুপ্রিম কোর্ট একতরফা কোনও নির্দেশ দেবে না বলেই তাঁরা মনে করছেন। জ্যোতিপ্রিয়র কথায়, ‘‘আদালতে যে কেউ যেতেই পারেন। তাতে ভোটের ফল বদলাবে না। কিন্তু প্রমাণ হয়ে গিয়েছে, অর্জুনের হাতে সংখ্যা নেই। সেই ভয়ে ওঁরা আদালতের আড়াল খুঁজছেন।”
৩৫ আসনের ভাটপাড়া পুরসভায় আপাতত সদস্য সংখ্যা ৩৩। পুরপ্রধান সৌরভ সিংহকে অপসারিত করতে তৃণমূলের দরকার ১৭ জন কাউন্সিলরের সমর্থন। সৌরভের বিরুদ্ধে গত ৬ ডিসেম্বর অনাস্থা আনে ঘাসফুল শিবির। ২০ ডিসেম্বর তলবি সভার নোটিস করেন পুরপ্রধান। সেই বৈঠক ডাকা হয়েছে ২০ জানুয়ারি। তলবি সভার জন্য এত দিন সময় নেওয়া যায় না, এই যুক্তিতে তৃণমূলের তিন কাউন্সিলর সভা ডেকে দেন। ২ জানুয়ারি ভোটাভুটি হয়। সেখানেও তৃণমূলের পক্ষে ফল হয় ১৯-০। তৃণমূলের ডাকা তলবি সভার নোটিসের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে ওই দিনই হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় বিজেপি। নোটিস বৈধ নয় বলে জানিয়ে দেয় আদালত। পর দিন ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন করে তৃণমূল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy