খাগড়াগড় বিস্ফোরণে তদন্তের সূত্রে ভারতে জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি)-র কোমর ভেঙে দেওয়া গিয়েছে বলে দাবি জাতীয় তদন্তকারী সংস্থার (এনআইএ)। পশ্চিমবঙ্গের বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে যে ভাবে দেশ জুড়ে জাল নোটের কারবার ছড়িয়ে পড়ছে, এ বার সেটা দমন করাই লক্ষ্য। বৃহস্পতিবার শহরে এই ইঙ্গিত দিলেন এনআইএ-র ডিজি শরদ কুমার।
জাল নোটের অনুপ্রবেশ ও তার কারবারিদের কতটা গুরুত্ব দিচ্ছে এনআইএ, তা এ দিন তাঁদের শীর্ষ কর্তার কথাতেই স্পষ্ট হয়েছে। ডিজি এ দিন জানিয়েছেন, মালদহে এনআইএ-র অফিস হচ্ছে। মালদহের বৈষ্ণবনগর ও কালিয়াচক থানা এলাকার বিভিন্ন তল্লাট দিয়ে সীমান্ত পেরিয়ে ঢোকে জাল ভারতীয় নোট। তার পরে তা ছড়িয়ে পড়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। এমনকী অনেক ক্ষেত্রে জঙ্গি কার্যকলাপেও সেই জাল নোটের কারবার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিচ্ছে। কার্যত এ দিন তা স্বীকার করে নিয়ে ডিজি জানান, জাল নোটের কয়েকটি মামলায় জঙ্গি কার্যকলাপের যোগসূত্র মিলেছে। কলকাতায় একের পরে এক সন্দেহভাজন আইএসআই চর গ্রেফতার হওয়ার ঘটনার তদন্তভার এনআইএ নেবে কি না, সে ব্যাপারে এ দিন ডিজি জানান, এখনও তেমন কোনও পরিকল্পনা নেই।
সেই নিরিখে জাল নোটের কারবারিদের দমনে তাই কৌশলগত ভাবে মালদহে অফিস চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে এনআইএ। তার ফলে এক দিকে মালদহকে কেন্দ্র করে উত্তরবঙ্গ, অন্য দিকে দক্ষিণবঙ্গে বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকায় আরও নিবিড় ভাবে নজরদারি চালানো সম্ভব হবে বলেই মনে করছেন এনআইএ কর্তারা।
এ দিন বিকেলে কলকাতা বিমানবন্দরে নেমে শরদ কুমার সোজা চলে যান সল্টলেকে সংস্থার দফতরে। সঙ্গে ছিলেন আইজি সঞ্জীব সিংহ।
খাগড়াগড় কাণ্ডের পরে এসেছিলেন ডিজি। তার পরে ফের এ দিন তিনি শহরে এলেন। এ দিন এনআইএ-র অফিসে বসে তিনি জানান, খাগড়াগড় কাণ্ডে চার্জশিট দেওয়া হয়েছে। সেই ঘটনায় তদন্ত চলছে। ওই ঘটনায় জড়িত আরও বেশ কয়েক জনকে শীঘ্রই গ্রেফতার করা হবে। যদিও খাগড়াগড়ের ঘটনায় বাংলাদেশের কওসর, হাতকাটা নাসিরুল্লার মতো জেএমবি-র চাঁই, বীরভূমের কদর কাজী, বর্ধমানের মহম্মদ ইউসুফ-সহ ডজন খানেক অভিযুক্ত আজও অধরা। তবে ওই ঘটনায় দ্রুত যাতে বিচার প্রক্রিয়া শুরু করা যায়, সেই চেষ্টা চলছে বলে এনআইএ সূত্রের খবর।
জাল নোট নিয়ে পশ্চিমবঙ্গে ইতিমধ্যে এনআইএ ৩টি মামলা রুজু করেছে। তার মধ্যে ২টি ক্ষেত্রে ইতিমধ্যে তারা চার্জশিট দিয়েছে। ডিজি জানান, বাংলাদেশ কিংবা এ রাজ্যেও ধরপাকড় চলছে। ইতিমধ্যে একাধিক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পাশাপাশি বাংলাদেশের পুলিশ যাতে জাল ভারতীয় নোট সহজেই শনাক্ত করতে পারে, সেই জন্য এনআইএ-র তত্বাবধানে তাদের প্রশিক্ষণও দেওয়া হচ্ছে।
বস্তুত ২৬/১১-র জঙ্গি হানার পরে জঙ্গি দমনে বিশেষ সংস্থা হিসেবে এনআইএ-র জন্ম। খাগড়াগড়ের তদন্তে খানিকটা এগিয়ে পশ্চিমবঙ্গে সব চেয়ে বেশি নজর দিয়েছে জাল নোটের কারবার দমনে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy