কংগ্রেস রইল কংগ্রেসেই!
দলের বিধায়কদের ভোটাভুটির মাধ্যমে ক’দিন আগেই কংগ্রেস পরিষদীয় দলের নেতা নির্বাচিত হয়েছেন আবদুল মান্নান। কিন্তু পরিষদীয় দলে সেটাই তো একমাত্র পদ নয়! প্রশ্ন, বিধানসভায় দলের মুখ্য সচেতক কে হবেন? কেই বা হবেন উপ দলনেতা? তা ছাড়া সংখ্যার জোরে বিধানসভার পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যান (পিএসি) পদটিও এ বার পাওয়ার কথা কংগ্রেসেরই। সেক্ষেত্রে পিএসি-র চেয়ারম্যানই বা কে হবেন কৌতুহল রয়েছে তা নিয়েও।
এমনিতে এ সব ব্যাপারে কংগ্রেসের বরাবরই আঠারো মাসে বছর। সাধারণত পরিষদীয় দলনেতা নির্বাচনের পর তিনিই প্রদেশ সভাপতির সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে উপ দলনেতা, মুখ্য সচেতক ইত্যাদি পদে মুখ বেছে নেন। কিন্তু শাসক দল সেই সব পর্ব মিটিয়ে ফেললেও, কংগ্রেস রইল পিছিয়ে।
সঙ্কটের পরিস্থিতিতেও কংগ্রেসের অভ্যন্তরীণ রেষারেষি এমন যে ওই সব পদে নেতা বাছাইয়ের দায়িত্বটাও নিতে চান না আবদুল মান্নান-অধীর চৌধুরীরা। তাই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার ছেড়ে দিতে চাইছেন হাইকম্যান্ডের ওপর। এ ব্যাপারে প্রশ্নের জবাবে মান্নান বৃহস্পতিবার বলেন,‘‘ওই পদগুলির দায়িত্ব কাকে দেওয়া হবে তা দিল্লিই ঠিক করে
দেবে। ৪৪ জন বিধায়কেরই জীবনপঞ্জি দিল্লির কাছে পাঠানো হয়েছে। দিল্লি যাঁকেই দায়িত্ব দিক না কেন, আমার কারও সঙ্গেই কাজ করে অসুবিধা হবে না।’’
সর্বভারতীয় কংগ্রেসে এমন ঘটনা ব্যতিক্রমী বইকি। রাজ্য বিধানসভায় কে দলের মুখ্য সচেতক হবেন, কাকে উপ দলনেতা করা হবে তা নিয়ে হাইকম্যান্ড কস্মিন কালে মাথায় ঘামায় না। যেহেতু পিএসি পদটির সাংবিধানিক গুরুত্ব রয়েছে, তাই কখনও সখনও পিএসি-র চেয়ারম্যান নিয়োগের ব্যাপারে অতীতে হস্তক্ষেপ করেছেন অহমেদ পটেলরা। কিন্তু মোটামুটি ভাবে প্রদেশ নেতৃত্বই এ সব ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেন। তার পর রাজ্যের দায়িত্বপ্রাপ্ত সর্বভারতীয় কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদকের কাছে প্রদেশ সভাপতি একটি রিপোর্ট পাঠিয়ে দেন মাত্র।
কিন্তু এ বার প্রতি পদে হাইকম্যান্ডের শরণাপন্ন হচ্ছে রাজ্য কংগ্রেস। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, তার মোদ্দা কারণ একটাই। কংগ্রেস রয়েছে কংগ্রেসেই। সংকটের মধ্যেও কংগ্রেসে গোষ্ঠী দ্বন্দ্বে বিরাম নেই। একটা দলের মধ্যে অনেক দল। তাই দলে ঐক্য রাখতে কৌশলী পথে হাঁটছেন অধীর-মান্নানরা। পরিষদীয় দলনেতা নির্বাচনের দায়িত্ব যে কায়দায় দিল্লির ওপর ছেড়ে দিয়েছিলেন অধীর, মান্নানও তাই করছেন।
প্রশ্ন হল, এ ভাবেও ঐক্য রাখা যাবে কি! তির্যক মন্তব্য করে তৃণমূলের এক বিধায়ক, ক্ষমতায় না এসেও এই অবস্থা, তা হলে জিতলে কী হত!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy