Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

রেললাইনে ট্রাক বিকল, ৪ ঘণ্টা বন্ধ ট্রেন

ঘটনার জেরে শিয়ালদহ-বনগাঁ ও শিয়ালদহ-হাসনাবাদ শাখায় আপ ও ডাউন লাইনে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পাথর বোঝাই ট্রাকটির পাতি (চাকার লাগোয়া অংশ) ভেঙে সেটি রেললাইনের উপরেই বসে যায়।

ভোগান্তি: বারাসত স্টেশনে দাঁড়িয়ে একাধিক ট্রেন, অপেক্ষায় যাত্রীরা। (ইনসেটে) রেললাইনের উপরে বসে গিয়েছে পাথর বোঝাই সেই লরিটি। রবিবার। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক

ভোগান্তি: বারাসত স্টেশনে দাঁড়িয়ে একাধিক ট্রেন, অপেক্ষায় যাত্রীরা। (ইনসেটে) রেললাইনের উপরে বসে গিয়েছে পাথর বোঝাই সেই লরিটি। রবিবার। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০১৯ ০৩:২৭
Share: Save:

রেললাইনের উপরে পাথর বোঝাই ট্রাক বিকল হয়ে গিয়ে চার ঘণ্টা বন্ধ থাকল ট্রেন ও যান চলাচল। দুর্ভোগে পড়লেন বহু মানুষ। রবিবার সকালে বারাসতের ১১ নম্বর রেলগেট এলাকায় ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে ওই ঘটনা ঘটে।

ঘটনার জেরে শিয়ালদহ-বনগাঁ ও শিয়ালদহ-হাসনাবাদ শাখায় আপ ও ডাউন লাইনে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পাথর বোঝাই ট্রাকটির পাতি (চাকার লাগোয়া অংশ) ভেঙে সেটি রেললাইনের উপরেই বসে যায়। তাতে ক্ষতি হয় রেললাইনের। রেলকর্মী, রেলপুলিশ ও বারাসত থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে। ক্রেন দিয়ে পাথর নামিয়ে ট্রাকটি সরানো হয়। রেলকর্মীরা লাইনটিও মেরামত করেন।

ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের দু’দিকে প্রায় দু’কিলোমিটার রাস্তায় সার দিয়ে গাড়ি দাঁড়িয়ে। কার্যত স্তব্ধ যশোর রোড, ৩৫ নম্বর জাতীয় সড়ক। ডাকবাংলো মোড় থেকে মধ্যমগ্রাম পর্যন্ত যশোর রোডে যানবাহনের গতি শ্লথ হয়ে পড়ে।

ঘটনার জেরে অনেকেই সকালে কাজে বেরিয়েও গন্তব্যে নির্দিষ্ট সময়ে পৌঁছতে পারেননি। বাস অটো, ট্রেকার বা ছোট গাড়ি থেকে নেমে অনেকেই হেঁটে গন্তব্যের দিকে রওনা দেন। দুর্ভোগে পড়ে ক্ষোভ দেখাতে থাকেন যাত্রীরা। দুর্ঘটনার পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে কেন দীর্ঘ সময় লাগবে, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন ক্ষুব্ধ যাত্রীরা। তাঁদের অভিযোগ, ওই রেলগেট এলাকায় এমনিতেই রোজ যানজট লেগে থাকে। রাস্তাও বেহাল। অভিযোগ, রেল বা প্রশাসন সমস্যা মেটাতে উদাসীন।

পঙ্কজ পাল নামে ক্ষুব্ধ এক যাত্রীর অভিযোগ, ‘‘এখানে গাড়ি বা ট্রাক খারাপ হয়ে পড়াটা নিত্যদিনের ঘটনা। রাস্তা এতটাই বেহাল যে সাইকেল নিয়েও যাতায়াত করা যায় না। তার জেরেই এই অবস্থা।’’ বারাসতের এক মহিলার অভিযোগ, ‘‘গাড়ি ভাড়া করে কৃষ্ণনগরে কাজে যাচ্ছিলাম। সকাল দশটার মধ্যে পৌঁছনোর কথা ছিল। বাড়ি ফিরে যাচ্ছি। শুধু শুধু গাড়ি ভাড়ার টাকাটা গেল।’’ গাড়ি ভাড়া করে কলকাতায় ডাক্তার দেখাতে যাওয়া এক প্রবীণকে দেখা গেল আটকে পড়তে। সড়ক যানজট মুক্ত হওয়ার পরে তিনি বললেন, ‘‘জানি না আজ আর ডাক্তার দেখাতে পারব কি না।’’

নদিয়া ও উত্তর ২৪ পরগনা জেলার একাংশের মানুষকে সড়কপথে কলকাতা যেতে হলে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কই ধরতে হয়। এ দিন তাঁরাও দুর্ভোগে পড়েন। অ্যাম্বুল্যান্সে চেপে কলকাতায় যেতে চাওয়া রোগীকেও আটকে পড়তে দেখা যায়। দুর্ভোগে পড়ে সাধারণ মানুষ ও যানচালকেরা ফের ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণ ও রাস্তা মেরামতির দাবি তোলেন। যানচালকেরা জানালেন, সড়ক সম্প্রসারণ না করলে দুর্ভোগই তাঁদের ভবিতব্য।

রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, এ দিন বনগাঁ থেকে বারাসত এবং শিয়ালদহ থেকে মধ্যমগ্রাম পর্যন্ত ট্রেন চালানো হয়েছে ওই সময়ে। যদিও জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ সূত্রের খবর, শীঘ্রই রাস্তা সারানো হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Barasat Indian Railway Truck
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE