Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

কাঁকসার জঙ্গল-পথে পুজোর মুখেই ট্রেকিং

পশ্চিম বর্ধমানের কাঁকসায় গড় জঙ্গল বলে খ্যাত এলাকায় ১০ কিলোমিটার রাস্তা জুড়ে ট্রেকিং-রুট তৈরি করেছে বন দফতরের বর্ধমান ডিভিশন। পুজোর সময় থেকে ওই রুট খুলে দেওয়া হবে বলে বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। আপাতত দফতরের দুর্গাপুরের রেঞ্জ অফিস বা শিবপুর বিট অফিস থেকে ‘স্পট বুকিং’ হবে। তার পরে অনলাইনের মাধ্যমে ট্রেকিংয়ের জন্য আবেদন নেওয়া হবে।

সৌমেন দত্ত
বর্ধমান শেষ আপডেট: ০১ অক্টোবর ২০১৮ ০১:৫২
Share: Save:

এ বার ঘরের কাছে জঙ্গলে ট্রেকিংয়ের সুযোগ।

পশ্চিম বর্ধমানের কাঁকসায় গড় জঙ্গল বলে খ্যাত এলাকায় ১০ কিলোমিটার রাস্তা জুড়ে ট্রেকিং-রুট তৈরি করেছে বন দফতরের বর্ধমান ডিভিশন। পুজোর সময় থেকে ওই রুট খুলে দেওয়া হবে বলে বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। আপাতত দফতরের দুর্গাপুরের রেঞ্জ অফিস বা শিবপুর বিট অফিস থেকে ‘স্পট বুকিং’ হবে। তার পরে অনলাইনের মাধ্যমে ট্রেকিংয়ের জন্য আবেদন নেওয়া হবে।

বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, দুর্গাপুর স্টেশন থেকে ২৯ কিলোমিটার বা বীরভূমের ইলামবাজার থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে বন দফতরের শিবপুর বিট অফিস থেকে ট্রেকিং শুরু হবে। শেষ হবে ১০ কিলোমিটার দূরে অজয়ের ধারে ইছাই ঘোষের দেউলে। জানা গিয়েছে, ট্রেকিংয়ের জন্য মাথা পিছু ২৫০ টাকা করে নেবে বন দফতর। আর পাঁচ জনের দলে এক জন গাইড বাধ্যতামূলক। বন সুরক্ষা কমিটির সদস্যেরাই গাইডের ভূমিকা পালন করবেন। গাইডের জন্য পর্যটকদের দিতে হবে একশো টাকা। এর থেকে বন দফতর আয়ের ৬০ শতাংশ খরচ করবে ট্রেকিং পথের উন্নয়নের জন্য। ওই রাস্তার পাশে পর্যাপ্ত পানীয় জল, শৌচাগার ও ভ্যাট রাখা থাকবে।

ট্রেকিংয়ের জন্য কাঁকসার ওই জায়গা বেছে নেওয়ার কারণ কী? বন দফতর জানাচ্ছে, বেশ কয়েকটি কারণে এই জায়গা বেছে নেওয়া হয়েছে। শাল-পিয়াল-মহুলা-সহ গভীর জঙ্গলে নানা রকম গাছ রয়েছে। কাকাতুয়া, বুলবুলি, ময়না, টিয়া, কাঠঠোকরার মতো দেশি পাখি যেমন দেখা যাবে, তেমনই শীতে ওই পথে ছোট-বড় নানা জলাশয়ে পরিযায়ী পাখিরও দেখা মিলবে। দফতরের বর্ধমান ডিভিশনের অতিরিক্ত বনাধিকারিক সুজিত দাসের কথায়, “ঘন জঙ্গলের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যও অপরূপ। ছোট-বড় টিলায় ঢেউ খেলানো রাস্তায় ট্রেকিংয়ে মজা পাবেন পর্যটকেরা। ওই রাস্তায় বন্যপ্রাণী নিয়েও কোনও ভয় নেই।’’

প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ছাড়াও এই জঙ্গলের ঐতিহাসিক গুরুত্ব রয়েছে বলে বন দফতরের কর্তারা জানান। দফতরের বর্ধমান বিভাগের প্রচারপত্রে জানানো হয়েছে, ভাগবত ও পুরাণ অনুযায়ী মহামুনি মেধাসের নির্দেশে সত্যযুগে রাজা সুরাট গড় জঙ্গলের ভিতরে দুর্গাপুজোর প্রচলন করেছেন। রাজা সুরাটের তৈরি মন্দিরে আধুনিক যুগে ফের পুজো শুরু করেন যোগীরাজ গিরি। ট্রেকিং-রুটে ঐতিহাসিক মন্দিরের পাশাপাশি টেরাকোটা সমৃদ্ধ প্রায় ১২০০ বছরের পুরনো মন্দির দেখতে পাবেন পর্যটকেরা। শেষ প্রান্তে রয়েছে ইছাই ঘোষের দেউল, গোলাপের বাগান। মিলতে পারে দলমার হাতির দেখাও।

বর্ধমান ডিভিশনের বনপাল দেবাশিস শর্মা বলেন, ‘‘২০১৭ সালের মে থেকে ওই জঙ্গল এলাকা সংরক্ষিত করা হয়েছে। কোনও পর্যটক একা ট্রেকিং করতে পারবেন না। সকালের দিকে দু’টি পর্যায়ে ট্রেকিং শুরু হবে। আকর্ষণ বাড়াতে জলাশয়ের উপরেও ট্রেকিংয়ের সুবিধা থাকবে। ট্রেকিং চলাকালীন জঙ্গলের বিধিনিষেধ মানতে হবে পর্যটকদের।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Trekking Forest Kanksa
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE