Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

‘রাজনীতিতে পরিবারতন্ত্র চলতে পারে না ’: মুকুল

মুকুলের কাছে স্বভাবতই প্রশ্ন ছিল, এ বার তিনি কী করবেন? সে প্রশ্নের স্পষ্ট উত্তর এ দিন মেলেনি। তিনি বলেন, ‘‘কালীপুজো পর্যন্ত ছুটি কাটাব। তার পর সিদ্ধান্ত নেব কোন দলে যাব।’’ সেই সঙ্গেই তিনি জানান, ‘‘দল ছাড়ার সিদ্ধান্ত কৌশলগত।’’

মুকুল রায়।

মুকুল রায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি ও কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০১৭ ০৩:৩০
Share: Save:

তৃণমূলের আদি-পর্ব থেকে তিনি ছিলেন দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতা। দীর্ঘদিন সংগঠনে কর্তৃত্বের লাগাম কার্যত ছিল তাঁর হাতেই। বুধবার রাজ্যসভার সদস্যপদ এবং দল ছেড়ে সেই মুকুল রায় বললেন, ‘‘এক নেতা সর্বস্ব কোনও রাজনৈতিক দল দেশের জন্য খারাপ। রাজনৈতিক দলের কর্মীরা কমরেড। তাঁরা কারও দাস নন।’’

পূর্ব ঘোষণা মতোই বুধবার রাজ্যসভার সদস্যপদ থেকে ইস্তফা দেন মুকুল। এ দিন রাজ্যসভার চেয়ারম্যান, তথা উপরাষ্ট্রপতি বেঙ্কাইয়া নায়ডুর সঙ্গে দেখা করে তিনি ইস্তফাপত্র তুলে দেন। তার পর দিল্লিতে নিজের বাড়িতে সাংবাদিক সম্মেলন করেন। সেখানে রাজনীতিতে ‘পরিবারতন্ত্রে’র বিরুদ্ধেও মুখ খোলেন তিনি। মুকুলের বক্তব্য, ‘‘রাজনীতিতে পরিবারতন্ত্র চলতে পারে না।’’ সরাসরি কারও নাম করে কিছু না-বললেও মুকুল-ঘনিষ্ঠ অনেকের মতে, তাঁর এই মন্তব্যের লক্ষ্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাইপো ও সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূলে মুকুল এবং অভিষেকের ‘সম্পর্ক’ বরাবরই চর্চার বিষয় ছিল।

আরও পড়ুন: ‘কাঁচরাপাড়ার কাঁচা ছেলের হাত থেকে দল বাঁচল’: পার্থ

পরিবারতন্ত্র নিয়ে মুকুলকে পাল্টা জবাব দিয়েছেন তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তাঁর বক্তব্য, ‘‘মুকুলের ছেলে শুভ্রাংশুই তো তৃণমূল বিধায়ক। শুভ্রাংশু বিধায়ক হওয়ার আগে রাজনীতি করতেন নাকি! দেশের কাজ করতে যে কেউ রাজনীতিতে আসতে পারেন। আর পরিবারের এক জন রাজনীতির কোনও মাথা বলে সেখান থেকে অন্য কেউ রাজনীতিতে এলে, তা অপরাধ হতে পারে না।’’ রাজনৈতিক কর্মীরা কারও ‘দাস’ নন বলে মুকুলের মন্তব্য প্রসঙ্গে পার্থবাবুর কটাক্ষ, ‘‘রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে আমরা সবাই স্বেচ্ছাসেবী। এটা মুকুলের না জানার কথা নয়।’’ মুকুলের বিদায়ে দল বাঁচল বলেই মন্তব্য করেন পার্থ।

মুকুলের কাছে স্বভাবতই প্রশ্ন ছিল, এ বার তিনি কী করবেন? সে প্রশ্নের স্পষ্ট উত্তর এ দিন মেলেনি। তিনি বলেন, ‘‘কালীপুজো পর্যন্ত ছুটি কাটাব। তার পর সিদ্ধান্ত নেব কোন দলে যাব।’’ সেই সঙ্গেই তিনি জানান, ‘‘দল ছাড়ার সিদ্ধান্ত কৌশলগত।’’

মুকুল বিজেপিতে যোগ দেবেন কিনা, জল্পনা মূলত তা নিয়েই। সূত্রের খবর, তাঁকে সরাসরি দলে নেওয়ার ব্যাপারে আরএসএস-এর একটি বড় অংশের ঘোর আপত্তি রয়েছে। তাঁদের বক্তব্য, সারদা এবং নারদ দুর্নীতির অভিযোগ লেগে রয়েছে মুকুলের গায়ে। তাঁকে দলে নিলে বিজেপির ভাবমূর্তি ধাক্কা খাবে। বিজেপির পক্ষ থেকেও মুকুলকে এখনও হ্যাঁ বা না বলা হয়নি। তবে মুকুল যে বিজেপি-তে যোগ দেওয়ার প্রশ্নে আশাবাদী, তা আজ স্পষ্ট হয়েছে তাঁর কথায়। বিজেপি যে সাম্প্রদায়িক দল নয় তা বোঝাতে বাজপেয়ীর প্রসঙ্গ তুলে আনেন মুকুল। বলেন, ‘‘আমার সঙ্গে আরএসএস, বিজেপি, কংগ্রেস — সব দলেরই যোগ রয়েছে। অরুণ জেটলি, কৈলাস বিজয়বর্গীয়ের সঙ্গে আমার সম্পর্ক ভাল। রাহুল গাঁধী কিংবা সীতারাম ইয়েচুরির সঙ্গেও ভাল সম্পর্ক।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE