জল চেয়ে চেয়ে যাত্রীরা ক্লান্ত হয়ে পড়লেও কল, বেসিন থেকে এক গড়াল না বিন্দুও। খোদ রেলমন্ত্রীকে টুইটারে যাত্রীরা লিখলেন, ‘‘স্যার, দুর্ভোগের মাত্রা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। এটু সাহায্য করুন।’’ পদক্ষেপের আশ্বাস মিললেও, জল পড়ল না কল থেকে। রাত ভর ছুটে চলল ট্রেন। পেরিয়ে গেল ৪৭০ কিলোমিটার। নির্জলা রইল ট্রেনের বাতানুকুল কামরা। এমনই অভিযোগ উঠেছে শনিবারে ডিব্রুগড়-চণ্ডীগড় এক্সপ্রেসে।
রেলকর্মী থেকে বিভিন্ন স্টেশন কর্তৃপক্ষকে বারবার অভিযোগ জানিয়েও কোনও ফল মেলেনি বলে অভিযোগ। রেল মন্ত্রক, রেলমন্ত্রী এমনকী খোদ প্রধানমন্ত্রীর ট্যুইটার হ্যান্ডেলে নালিশ জানান যাত্রীদের একাংশ। জলের অভাবে রাতভর ভোগান্তি পোহাতে হলেও কোনও রেল আধিকারিক খোঁজও নিতে আসেনি বলে অভিযোগ।
যাত্রীদের যে কোনও সমস্যা ট্যুইটারে জানানো হলে দ্রুত পদক্ষেপ হয় বলে রেলের দাবি। যদিও প্রকাশ শুক্লর অভিজ্ঞতা ভিন্ন।
গত শুক্রবার বিকেলে গুয়াহাটির থেকে ডিব্রুগড় চণ্ডীগড় এক্সপ্রেসের বাতানুকুল তৃতীয় শ্রেণির কামরায় ওঠেন। ডিব্রুগড় থেকে আসা ট্রেনটির তিনটি বাতানুকূল কামরায় জল সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায় গুয়াহাটি স্টেশনে ঢোকার কিছু আগে। যাত্রীরা অভিযোগ জানাতে গেলে আশ্বাস মেলে, ট্রেন চলতে শুরু করলেই ঠিক হয়ে যাবে। গুয়াহাটি থেকে ছাড়ার পরও জল সরবরাহ ঠিক হয়নি বলে অভিযোগ। সন্ধে থেকে রাত গড়ায়। যদিও যাত্রীদের দাবি, রেলকর্মীদের বারবার বলেও কিছু হয়নি।
গুয়াহাটির বাসিন্দা প্রকাশ শুক্ল রেল মন্ত্রকের ট্যুইটারে অভিযোগ জানান। কাটিহারের ডিআরএমের তরফে দ্রুত পদক্ষেপের আশ্বাস দেওয়া হয়। ঘণ্টা কয়েক অপেক্ষার পরে খোদ রেলমন্ত্রীর থেকে প্রধানমন্ত্রীর কাছে সাহায্য চেয়ে ট্যুইট করতে থাকেন প্রকাশ। ‘স্যার নিদারুণ কষ্টে রয়েছি, একটু সাহায্য করুন’ এমন ট্যুইট বার্তা পাঠানো হলে কয়েক মুহূর্তে উত্তরে আশ্বাস মিলেছে। কিন্তু যাত্রীদের অভিযোগ বাইশ ঘণ্টার বেশি কেটে গেলেও জল মেলেনি।
রেলের কাটিহার বিভাগের এক কর্তা বলেন, ‘‘রেলের বাস্তুকাররা পরীক্ষা করেছিল। এমন সমস্যা হয়েছিল যে সেটা তৎক্ষণাৎ মেরামত করা সম্ভব ছিল না।’’
উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক প্রণবজ্যোতি শর্মা বলেন, ‘‘যাত্রী পরিষেবাই আমাদের অগ্রাধিকার। যে কোনও অভিযোগ এলে দ্রুত পদক্ষেপ হয়। এ ক্ষেত্রে কেন সমস্যা সমাধান করা যায়নি তার খোঁজ নেওয়া হবে।’’
গত শনিবার ভোর সাড়ে ৬টায় নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে পৌঁছয় ট্রেনটি। যাত্রীদের একাংশ স্টেশনে বিক্ষোভও দেখান। সে সময়ে দু’টি কামরার জল সরবরাহ কিছুটা স্বাভাবিক হলেও বি ওয়ান কোচে জল সরবরাহ ঠিক করা যয়ানি। রেলের দাবি, ইঞ্জিনিয়ররা পরীক্ষা করেও জল সরবরাহ স্বাভাবিক করতে পারেনি। ত্রুটি নিয়েই ট্রেন ছাড়ে। তারপরে আরও ১০ ঘণ্টা কেটে গেলেও জল সরবরাহ স্বাভাবিক হয়নি বলে যাত্রীদের অভিযোগ। দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে কেন কোচ বদলে দেওয়া হল না, সে প্রশ্নও তুলেছেন যাত্রীরা। ট্রেনের যাত্রী নির্মল কুমারের অভিযোগ, ‘‘কোচে মহিলা, শিশুরা ছিল। শৌচাগারে জল না থাকলে যা যা ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা হওয়া সম্ভব সকলের তাই হয়েছে। জল চেয়ে বারবার কাতর আবেদন করলেও রেলের কোনও সাড়া পেলাম না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy