Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

রাজ্য কমিটিতেও উঠে গেল পৃথক পথের দাবি

আলিমুদ্দিনে সোমবার থেকে শুরু হওয়া দু’দিনের রাজ্য কমিটির বৈঠকে ইয়েচুরি-প্রশ্নে কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্ত ব্যাখ্যা করেছেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। কিন্তু কেন রাজ্য সিপিএম ইয়েচুরিকে সংসদে চেয়েছিল, তার ব্যাখ্যাও জোরালো ভাবে দিয়েছেন সূর্যবাবু।

সীতারাম ইয়েচুরি। ছবি: সংগৃহীত

সীতারাম ইয়েচুরি। ছবি: সংগৃহীত

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৮ অগস্ট ২০১৭ ০৪:১৩
Share: Save:

রাজ্যসভায় সীতারাম ইয়েচুরিকে ফের প্রার্থী করার প্রস্তাব খারিজ করে দিয়েছিল কেন্দ্রীয় কমিটি। যা সিপিএমে সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারক কমিটি। কিন্তু সেই সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রবল বিতর্ক অব্যাহত থাকল রাজ্য সিপিএমে। এবং এই প্রথম বার বাংলার সিপিএমের জন্য প্রয়োজনে আলাদা পথের দাবি উঠে এল দলের কোনও আনুষ্ঠানিক মঞ্চে!

আলিমুদ্দিনে সোমবার থেকে শুরু হওয়া দু’দিনের রাজ্য কমিটির বৈঠকে ইয়েচুরি-প্রশ্নে কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্ত ব্যাখ্যা করেছেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। কিন্তু কেন রাজ্য সিপিএম ইয়েচুরিকে সংসদে চেয়েছিল, তার ব্যাখ্যাও জোরালো ভাবে দিয়েছেন সূর্যবাবু। আবার কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্তকে প্রকাশ্যে চ্যালেঞ্জ করায় দলের রাজ্য নেতা গৌতম দেবের কেন শাস্তি হবে না, রাজ্য কমিটিতে সেই সওয়াল করেছেন বর্ধমানের নেতারা। এই চাপানউতোরের মধ্যেই উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার দুই নেতা সরাসরিই বলেছেন, বাংলায় দলের স্বার্থ বারংবার উপেক্ষিত হচ্ছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তাত্ত্বিক অবস্থানে! সংখ্যাগরিষ্ঠের মতের নামে অনন্ত কাল এই জিনিস মেনে নেওয়া যায় না। প্রয়োজনে এ বার বাংলার দলের জন্য আলাদা পথ ভাবতে হবে বলে দাবি তোলেন তিনি।

আরও পড়ুন: ঐক্যের বার্তায় রাখি আজ ফের রাজনৈতিক

প্রকাশ কারাট শিবিরের সঙ্গে মতবিরোধের জেরে বাংলার জন্য নতুন পথ বেছে নেওয়ার চর্চা এখন শুরু হয়েছে সিপিএমের একাংশে। কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য গৌতমবাবুও কয়েক দিন আগে একটি বৈদ্যুতিন চ্যানেলে সেই ইঙ্গিত দিয়েছেন। কিন্তু রাজ্য কমিটির মতো সিপিএমের আনুষ্ঠানিক কোনও মঞ্চে সেই দাবির উঠে আসা এই প্রথম! দলের সাধারণ সম্পাদক ইয়েচুরি অবশ্য তখনও আলিমুদ্দিনে এসে পৌঁছননি। তবে দলের মধ্যে দুই মতের তীব্র টানাপড়েনের সাক্ষী থাকছেন তিনিও।

সিপিএম সূত্রের খবর, রাজ্য কমিটিতে প্রথম দিনে প্রায় ১৬ জন মুখ খুলেছেন। তার মধ্যে অধিকাংশ নেতাই ইয়েচুরিকে নিয়ে দলের সিদ্ধান্ত ঠিক হয়নি বলে মত দিয়েছেন। পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমানের নেতারা আবার হেঁটেছেন অন্য পথে। কংগ্রেসের সঙ্গে জোটপন্থী শিবিরের এক নেতা যেমন আলাদা পথের সওয়াল পর্যন্ত করে ফেলেছেন, তেমনই জোটপন্থীদের অন্যতম হোতা গৌতমবাবুর শাস্তি চেয়ে সরব হয়েছেন বর্ধমানের নেতারা। কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হয়েও তাদের সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রকাশ্যে প্রশ্ন তোলায় কেন উত্তর ২৪ পরগনার জেলা সম্পাদকের শাস্তি হবে না, তা নিয়ে কেন্দ্রীয় কমিটিকে চিঠি পাঠিয়েছেন তাঁরা। যদিও রাজ্য কমিটিতেও এ দিন বিশেষ কাউকে তাঁরা পাশে পাননি।

দু’দিন আগেই দলীয় অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্তের দিকে ইঙ্গিত করে রাজ্য সম্পাদক সূর্যবাবু বলেছিলেন, কোনও নেতা কোথাও কী মন্তব্য করলেন, সেটা শেষ কথা নয়। দলীয় সূত্রের ব্যাখ্যা, দলের একাংশ গৌতমবাবুর কথা নিয়ে হইচই করতে পারেন আঁচ করেই প্রচ্ছন্ন সর্তকতা জারি করেছিলেন তিনি। কিন্তু শেষমেশ বিতর্ক তাতে থেমে থাকল না!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE