Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

কাঁথির ধুন্ধুমারে ধৃত দুই

সোমবার কাঁথি সেন্ট্রাল বাসস্ট্যান্ডের ওই ধুন্ধুমার কাণ্ডের   খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে সংবাদ মাধ্যমও আক্রান্ত হয় বলে অভিযোগ।   সোমবার রাতে কাঁথি থানায় তিন সাংবাদিক সে নিয়ে অভিযোগ দায়ের করেছেন।

মঙ্গলবার খুলেছে ‘সংহতি’ ভবনের দোকান। নিজস্ব চিত্র

মঙ্গলবার খুলেছে ‘সংহতি’ ভবনের দোকান। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কাঁথি শেষ আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৩:৫০
Share: Save:

বিজেপি’র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের গাড়িতে হামলা এবং কাঁথি শহর উত্তপ্ত হওয়ার ২৪ ঘণ্টা পরে গ্রেফতার হল দুই ব্যক্তি। পুলিশের উপরে হামলার অভিযোগে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যদিকে, মঙ্গলবার চেনা ছন্দে ফিরেছে কাঁথি বাস স্ট্যান্ড চত্বর।

পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতরা হল ভূপতিনগরের বাসিন্দা গোবিন্দ দোলাই এবং কাঁথির পানিয়া গ্রামের বাসিন্দা স্বপ্নদীপ মণ্ডল। পুলিশকে আক্রমণের জন্য তাদের কাঁথি থানার পুলিশ গ্রেফতার করেছে। মঙ্গলবার তাদের কাঁথি আদালতে তোলা হয়।

পুলিশ জানিয়েছে, সোমবার কাঁথি থানার এক সাব ইনস্পেক্টরের নেতৃত্বে পুলিশ এবং সিভিক ভলান্টিয়ারেরা ওই এলাকায় ডিউটি করছিলেন। পরিকল্পিতভাবে বিজেপির কর্মীরা পুলিশের উপর হামলা চালায় বলে অভিযোগ। ঘটনায় তিন পুলিশকর্মী-সহ এক সিভিক ভলান্টিয়ার আহত হন। তাঁদের কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। ওই সাব ইনস্পেক্টর এবং পুলিশকর্মীকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে হয়। সোমবার রাতে ওই সাব ইন্সপেক্টর কাঁথি থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। অন্য দিকে সুমন প্রধান নামে এক সিভিক ভলান্টিয়ার এখনও কাঁথি মহকুমা হাসপাতাল চিকিৎসাধীন। পুলিশের দাবি, সুমনের নাকের হাড় ভেঙেছে।

উল্লেখ্য, সোমবার কাঁথি সেন্ট্রাল বাসস্ট্যান্ডের ওই ধুন্ধুমার কাণ্ডের খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে সংবাদ মাধ্যমও আক্রান্ত হয় বলে অভিযোগ। সোমবার রাতে কাঁথি থানায় তিন সাংবাদিক সে নিয়ে অভিযোগ দায়ের করেছেন। ওই তিন সাংবাদিককেও কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়। প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়।

বিজেপি’র দাবি, গ্রেফতার হওয়া দুই যুবক তাদের কর্মী। পুলিশ মিথ্যা অভিযোগ করছে। উল্টে বিজেপি কর্মীদের উপর হামলার প্রতিবাদে মঙ্গলবার বাজকুলে দিঘা-নন্দকুমার ১১৬ বি জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন বিজেপি’র কর্মী-সমর্থকেরা। এ দিন বাজকুলে প্রায় আধ ঘণ্টা অবরোধ চলে। ফলে জাতীয় সড়কে তীব্র যানজট হয়। পুলিশ ও ট্রাফিক পুলিশের আধিকারিকেরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেন। অবরোধ হয় পিছাবনি এবং খেজুরির ঠাকুরনগরেও। কাঁথি সাংগঠনিক জেলা বিজেপি সভাপতি তপন মাইতি বলেন, ‘‘রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় দলীয় নেতা-কর্মীরা শাসক দলের হাতে বিভিন্নভাবে আক্রান্ত হচ্ছেন। আর তা বন্ধ না হলে আমরা আন্দোলন আরও তীব্র করব।’’

যদিও জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইন্দ্রজিৎ বসু বলেন, “সোমবারের ঘটনায় দুই জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সেই ঘটনার তদন্ত হচ্ছে। সাংবাদিকদের অভিযোগের ভিত্তিতেও আলাদা মামলা চালু হয়েছে।’’

এ দিকে, সোমবার যে এলাকা ছিল রণক্ষেত্র, এ দিন সেখানের পরিস্থিতি ছিল স্বাভাবিক। সোমবার ওই ঘটনার সময় বাসস্ট্যান্ড এবং ‘জনমঙ্গল সমবায় সমিতি’র সভাকক্ষ ‘সংহতি’তে থাকা অনেক দোকানপাট বন্ধ হয়ে গিয়েছিলো। এ দিন সেই সব দোকান খোলেন ব্যবসায়ীর। এলাকার ব্যবসায়ী এক শেখ রাজ বলেন, “ঝামেলার সময় ভয়ে দোকান বন্ধ করে পালিয়ে গিয়েছিলাম। আজ তো পরিস্থিতি একেবারে স্বাভাবিক। তাই দোকান খুলেছি।’’

শুধু দোকান নয়, এ দিন এলাকায় বাসের পার্কিং, যাত্রীদের আনাগোনা, জিনিসপত্র বিক্রিবাটার ছবি ছিল একেবারে স্বাভাবিক দিনের মতোই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE