গত বছরই ধান-চাল কিনে চাষিদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরকারি সহায়ক মূল্য দেওয়া শুরু হয়েছে। এর মধ্যেই সামনে এল বড়সড় কেলেঙ্কারির অভিযোগ। ই এম বাইপাস সংলগ্ন ধাপা এলাকার বাসিন্দা তারক মণ্ডল নামে এক চাষির অভিযোগের ভিত্তিতে চাল কেনা-বেচার কেলেঙ্কারিতে জড়িত সন্দেহে কলকাতা পুলিশ শহরের দুই ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে।
পুলিশ সূত্রের দাবি, হিতেশ চন্দক এবং দীপেশ চন্দক নামে দুই ব্যবসায়ী ভাইকে পুজোর সময় গ্রেফতার করেছে ভবানীপুর থানা। গত সেপ্টেম্বরে দায়ের করা অভিযোগে তারক পুলিশকে জানান, হিতেশ ও দীপেশ হাওড়া জেলার চাষিদের থেকে চাল কেনেন। কিন্তু সেই ক্রয় পুরোটাই কাগজ-কলমে হয়েছে। সেই চাষিদের কোনও অস্তিত্ব নেই।
পুলিশ সূত্রের দাবি, তদন্তে দেখা যায়, অভিযুক্তরা চাষিদের ভুয়ো নামে অ্যাকাউন্ট খুলে প্রচুর ধান কিনেছেন। সেই ধান ভাঙিয়ে সরকারি গুদামে চাল না দিয়ে খোলা বাজারে বিক্রি করেছেন। পরে ভিন দেশ থেকে কম দামে নিম্ন মানের চাল কিনে সরকারি গুদামে দিয়েছেন। এর ফলে সরকারি ভর্তুকি গরিব চাষিদের বদলে ওই ব্যবসায়ীদের পকেটে গিয়েছে।
প্রাথমিক তদন্তের পর আদালতে পুলিশের দাবি, খাদ্য দফতরের শীর্ষ কর্তাদের একাংশের যোগসাজশেই ধৃতেরা এই কারবার চালাতেন। খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেছেন, ‘‘যা অভিযোগ উঠেছে তা সত্যি হলে কঠোরতম ব্যবস্থা নেওয়া হবে। চাষিদের নামে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলে টাকা হাতিয়ে নেওয়া মানা যায় না।’’
প্রসঙ্গত, দীপেশের নাম এর আগে বহুচর্চিত পশুখাদ্য কেলেঙ্কারিতেও জড়িয়েছিল। পরে ওই মামলায় তিনি রাজসাক্ষী হন বলে পুলিশ সূত্রের দাবি। ওই মামলায় সিবিআইয়ের তদন্তকারী অফিসার ছিলেন রাকেশ আস্থানা। সম্প্রতি ছুটিতে যাওয়া সিবিআই অধিকর্তা অলোক বর্মা সিবিআইয়েরই স্পেশ্যাল ডিরেক্টর আস্থানার নামে যে সব অভিযোগ এনেছিলেন তাতে পশুখাদ্য কেলেঙ্কারির প্রসঙ্গও ছিল। সেই পশুখাদ্য কেলেঙ্কারির রাজসাক্ষীকে কলকাতা পুলিশের গ্রেফতারের ঘটনায় নানা মহলে চর্চা শুরু হয়েছে।
কলকাতা পুলিশ সূত্রের খবর, হিতেশ ও দীপেশের হাওড়ায় চালকল রয়েছে। ধান কেনা-বেচার ব্যবসাতেও জড়িত তাঁরা। তবে এই কেলেঙ্কারিতে এখনও কোনও রাজ্য সরকারি কর্তাকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করেনি বলেই সূত্রের দাবি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy