কোনওটার নাম ‘ইউথ এডুকেশন’। কোনওটার বা ‘কাউন্সিল ফর এডুকেশন’। এ-রকম গালভরা নাম দিয়ে রীতিমতো অফিস খুলে চলত শিক্ষাগত শংসাপত্র জালিয়াতির ব্যবসা। এই ধরনের অজস্র সংস্থা রাজ্যে জাল ছড়িয়েছে বলে গোয়েন্দাদের সন্দেহ। আপাতত একটি সংস্থার পাণ্ডাকে গ্রেফতারের পরে তার এক সহযোগী এবং অন্য একটি সংস্থার কর্তাকে পাকড়াও করেছে সিআইডি।
পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার ধৃত ওই দু’জনের নাম সুমিত পাল ও শুভেন্দু হালদার। সুমিত ধরা পড়ে মধ্যমগ্রামে। সে ‘কাউন্সিল ফর এডুকেশন’ নামে একটি সংস্থার মাথা। বারুইপুরে ধৃত শুভেন্দু ওই এলাকায় দফতর খুলে বসা ‘ইউথ এডুকেশন’ সংস্থার অন্যতম চাঁই। ওই সংস্থার কর্ণধার অচল নস্করকে গ্রেফতার করা হয় দিন সাতেক আগে। তাকে জেরা করেই সুমিত-শুভেন্দুর হদিস মেলে। জানা গিয়েছে আরও কিছু জালিয়াত সংস্থার কথাও। সিআইডি-র গোয়েন্দারা এখন সেই সব সংস্থার কর্তাদের কব্জা করতে মরিয়া।
সিআইডি সূত্রের খবর, কয়েক সপ্তাহ আগে পদোন্নতির জন্যে রাজ্য সরকারের গ্রুপ-ডি স্তরের এক কর্মী তাঁর দফতরে মাধ্যমিকের শংসাপত্র জমা দেন। দফতরের অফিসারদের সন্দেহ হয়। তাঁরা যোগাযোগ করেন মধ্যশিক্ষা পর্ষদে। সেখানে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, যে-সংস্থার কাছ থেকে ওই শংসাপত্র নেওয়া হয়েছে, সেই নামে কোনও বৈধ সংস্থাই নেই!
তড়িঘড়ি সিআইডি-কে তদন্তভার দেয় মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। তার পরেই ঝুলি থেকে বিড়াল বেরিয়ে পড়ে। দেখা যায় লক্ষ লক্ষ টাকার বিনিময়ে শুধু মাধ্যমিক নয়, রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন বোর্ডের বিভিন্ন শ্রেণির শংসাপত্র দিচ্ছে বারুইপুরের একটি সংস্থা। তার পরেই ওই সংস্থার কর্ণধার অচলকে গ্রেফতার করা হয়। জেরার মুখে সে এই ধরনের ব্যবসায় জড়িত বেশ কয়েকটি সংস্থার নাম জানিয়ে দেয় সিআইডি-কে।
শিক্ষা-শংসাপত্র নিয়ে কী ভাবে জালিয়াতি করছে ওই সব সংস্থা?
গোয়েন্দারা জানান, মাধ্যমিক পাশ না-হলেও চাকরির সুযোগ রয়েছে, এই ধরনের বিজ্ঞাপনের টোপ দিয়ে কর্মপ্রার্থীদের নিজেদের অফিসে ডাকে ওই সব সংস্থা। রাজ্যের শিক্ষা দফতর এবং কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক তাদের অনুমোদন দিয়েছে বলে দাবি করে তারা। দফায় দফায় টাকা নিয়ে প্রার্থীদের বিভিন্ন বোর্ডের পাঠ্যক্রম সম্পর্কে প্রশিক্ষণ দেয় ওই সব সংস্থা। তার পরে পরীক্ষায় পাশ করিয়ে জাল শংসাপত্র হাতে তুলে দেয়। ধৃতদের জেরা করে গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, বেশ কয়েকটি সংস্থা এ ভাবে কয়েক হাজার প্রার্থীর কাছ থেকে এ ভাবে লক্ষ লক্ষ টাকা নিয়েছে। অন্য সংস্থাগুলির খোঁজ চালাচ্ছে সিআইডি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy