Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

মুখ্যমন্ত্রীর দু’টি সভা, দিনভর যানজটের আশঙ্কা শহর জুড়ে

শহরের মধ্যস্থলে আজ, বুধবার পরপর দুটি সভা করবেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রথমটি হবে বেলা দু’টোয় সংস্কৃতি লোকমঞ্চে প্রশাসনিক সভা। দ্বিতীয়টি হবে বেলা চারটের সময় পুলিশ লাইনে। প্রশাসন সূত্রের খবর, সভাস্থল থেকেই সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পে উপভোক্তাদের হাতে শংসাপত্র থেকে আর্থিক অনুদানের চেক তুলে দেবেন মুখ্যমন্ত্রী।

পুলিশ লাইনের মাঠে চলছে প্রস্তুতি।

পুলিশ লাইনের মাঠে চলছে প্রস্তুতি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০১৫ ০১:৫৪
Share: Save:

শহরের মধ্যস্থলে আজ, বুধবার পরপর দুটি সভা করবেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রথমটি হবে বেলা দু’টোয় সংস্কৃতি লোকমঞ্চে প্রশাসনিক সভা। দ্বিতীয়টি হবে বেলা চারটের সময় পুলিশ লাইনে। প্রশাসন সূত্রের খবর, সভাস্থল থেকেই সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পে উপভোক্তাদের হাতে শংসাপত্র থেকে আর্থিক অনুদানের চেক তুলে দেবেন মুখ্যমন্ত্রী।

তবে দুটি সভা ঘিরে শহরে জনজীবন স্তব্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন বিরোধীরা। তাঁঁদের দাবি, হাজারেরও বেশি আমন্ত্রিত অতিথি আসায় ব্যাপক যানজট হবে শহরে। তার জেরে শহরের বাসিন্দা ও জেলার সদর দফতরে বিভিন্ন কাজে আসা মানুষজনকে দুর্ভোগ পোয়াতে হবে। আইনজীবীদের একাংশও মনে করছেন, সংস্কৃত লোকমঞ্চে এই প্রশাসনিক সভার জন্য পুলিশের কড়াকড়ি থাকবে, তাতে বিচারপ্রার্থীরাও আদালতে আসতে সমস্যায় পড়বেন। যদিও প্রশাসনের কর্তারা জানিয়েছেন, সাধারণ মানুষের রাস্তায় চলাচলের ক্ষেত্রে কোনও অসুবিধা হবে না। যান চলাচলের নিয়ন্ত্রণের জন্য রাস্তায় প্রচুর সংখ্যক পুলিশ থাকবে।

মঙ্গলবার জেলা পরিষদের সভাধিপতি দেবু টুডু দাবি করেন, মুখ্যমন্ত্রীর শততম প্রশাসনিক সভার জন্য জেলা পরিষদের বিরোধীদেরও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। প্রতিটি সদস্যকেই এই সভায় আসার জন্য বলা হয়েছে। যদিও দাবি মানতে চাননি সিপিএমের জেলা সম্পাদক অচিন্ত্য মল্লিক। তিনি বলেন, “আমাদের জেলা পরিষদের কোনও সদস্যকে, বিধায়কদের, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। আর আমরা জনগণের টাকা নয়ছয় করার অনুষ্ঠানে যেতামও না।” এ দিনের সভায় মুখ্যমন্ত্রী ১০০জন উপভোক্তাকে শংসাপত্র থেকে আর্থিক সাহায্যের অনুদান দেবেন বলেও জানা গিয়েছে। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ১০০ জনের মধ্যে কৃষি দফতর থেকে ১৫ জন, উদ্যান পালন দফতর ৩ জন, সংখ্যালঘু দফতর ৯ জন, পারিবারিক পেনশন ২ জন, গীতাঞ্জলি প্রকল্পে ২ জনকে সাহায্য করা হবে। এ ছাড়াও শ্রম দফতরের মাধ্যমে ৮ জন নির্মাণ শ্রমিককে অনুদান, ২জন ক্ষুদ্র শিল্পীকে পরিচয়পত্র, মৎস্য দফতর থেকে ৬ জনকে তাপনিয়ন্ত্রণ বাক্স তুলে দেবেন মুখ্যমন্ত্রী। এ ছাড়াও ৬ জনকে কৃষি বিপণন দফতর, ৪ জনকে বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর, ৪ জনকে পাট্টা, ৫ জন লোকশিল্পীকে পরিচয়পত্র সহ বিভিন্ন জনকে শংসাপত্র ও আর্থিক সাহায্য করা হবে। এই সব উপভোক্তাদের সাহায্যের অনুষ্ঠানটি হবে পুলিশ লাইনের মাঠে।


সংস্কৃতি লোকমঞ্চে চলছে মুখ্যমন্ত্রীর শততম প্রশাসনিক সভার তোড়জোড়। মঙ্গলবার তোলা নিজস্ব চিত্র।

পুলিশের ধারণা, অন্তত তিরিশ থেকে পঁয়ত্রিশ হাজার মানুষের ভিড় হবে পুলিশ লাইনের মাঠে। জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে যে সব বাস আসবে, শহরের ১৮টি জায়গায় বাসগুলি দাঁড় করানো হবে। এই দুটি সভার জন্য বুধবার সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত শহরের ভিতর দিয়ে যাওয়া জিটি রোডের উল্লাস মোড় থেকে বাদামতলা মোড় পর্যন্ত যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হবে। পুলিশ সুপার কুণাল অগ্রবাল জানিয়েছেন, স্কুল বাস ও ব্যক্তিগত গাড়ির ক্ষেত্রে এই নিয়ন্ত্রন শিথিল করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, এই দুটি সভার নিরাপত্তা ও যান নিয়ন্ত্রণের জন্য বর্ধমানে এক হাজার পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

বিরোধীদের অভিযোগ, এই দুটি সভার কারণে এক দিকে যানজট তৈরি হবে, তেমনি সাধারণ মানুষ দুর্ভোগের মধ্যে পড়বেন। সংস্কৃতি লোকমঞ্চের কাছেই রয়েছে স্কুল, জেলা পরিষদ দফতর, আদালত-সহ একাধিক সরকারি দফতর। পুলিশের কড়াকড়ির জন্য শহর সহ অন্য জায়গা থেকে জেলা সদর দফতরে আসা মানুষজনের নানা অসুবিধার সম্মুখীন হবেন। সিপিএমের জেলা সম্পাদকের টিপ্পনী, “মুখ্যমন্ত্রী আসছেন। আর জন্য মানুষকে একটু কষ্ট সহ্য করতে হবে না!” যদিও তৃণমূলের জেলা সভাপতি স্বপন দেবনাথের দাবি, ‘‘মানুষ স্বতস্ফূর্ত ভাবে অনুষ্ঠানে আসবেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE