চন্দ্রকোনায় অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের পথ অবরোধ। নিজস্ব চিত্র
অগস্টের শেষে বিজ্ঞপ্তি জারি করে রাজ্য সরকার বলেছিল, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী এবং সহায়কদের অতিরিক্ত সাম্মানিক ভাতার পরিমাণ ১০০০ টাকা করে বাড়ানো হবে। দু’মাসের মধ্যেই পাল্টে গেল মতটা। পয়লা নভেম্বর নতুন বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সরকার জানিয়ে দিল, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের অতিরিক্ত সাম্মানিক ভাতা বাড়বে মাত্র ৪০০ টাকা, আর সহায়কদের ৭০০ টাকা। ফলে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের মধ্যে। অবশ্য নতুন বিজ্ঞপ্তি জারির পরেও নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজার মন্তব্য, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশমতো সাম্মানিক এক হাজার টাকা বৃদ্ধি হয়েছে। তার মধ্যে কোনও ভুল নেই।’’
সুসংহত শিশুবিকাশ প্রকল্পে (আইসিডিএস) অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ও সহায়কদের সাম্মানিক দেওয়া হয় কেন্দ্র ও রাজ্যের যৌথ বরাদ্দ থেকে। এত দিন কর্মীরা প্রতি মাসে ৩০০০ টাকা এবং সহায়করা ১৫০০ টাকা করে পেতেন। এর অতিরিক্ত ১৮৫০ টাকা করে সাম্মানিক দিত রাজ্য। গত ২৩ অগস্ট রাজ্য সরকারের নারী ও শিশুকল্যাণ দফতরের বিজ্ঞপ্তিতে (নং. ৪৫৩৭/এসডব্লিউ/পি/৩এসএফ-১৪/১২ পার্ট ১) বলা হয়, ওই ভাতা ১ অক্টোবর থেকে ১০০০ টাকা করে বাড়ানো হবে। ফলে সাম্মানিকের পরিমাণ হবে ২৮৫০ টাকা। কিন্তু ১ নভেম্বর নতুন বিজ্ঞপ্তি (নং. ৫৮৬৭-এসডব্লিউ/পি/৩এসএফ-১৪/১২ পার্ট ১) জারি করে ভাতা বৃদ্ধির সংশোধিত হার ঘোষণা করা হয়। ফলে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা এখন অতিরিক্ত ভাতা হিসেবে ২২৫০ টাকা (১৮৫০+৪০০) এবং সহায়করা ২৫৫০ (১৮৫০+৭০০) টাকা পাবেন।
ইতিমধ্যে অবশ্য অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ও সহায়কদের মূল ভাতার পরিমাণ যথাক্রমে ১৫০০ টাকা ও ৭৫০ টাকা বাড়িয়েছে কেন্দ্র। যার ফলে কর্মীদের মূল ভাতা দাঁড়াচ্ছে ৪৫০০ টাকা এবং সহায়কদের মূল ভাতা হচ্ছে ২২৫০ টাকা। ফলে রাজ্য সরকারের নুতন বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের মোট ভাতা হবে মাসিক ৬৭৫০ টাকা। আর সহায়কদের ক্ষেত্রে তা হবে ৪৮০০ টাকা। ২৩ অগস্টের বিজ্ঞপ্তি মানলে যা হত ৭৩৫০ টাকা ও ৫১০০ টাকা।
রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা সিটু নেতা অনাদি সাহু বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গে এই প্রথম ঘোষণার তুলনায় সাম্মানিক কমার ঘটনা ঘটল। পুজো, ক্লাব ইত্যাদি খাতে যখন অকাতরে সরকারি অর্থ খরচ হচ্ছে, তখন এই ধরনের সামাজিক প্রকল্পে সাম্মানিক কমার ঘটনা দুর্ভাগ্যজনক।’’ সরকারি সিদ্ধান্ত বদল না হওয়া পর্যন্ত সিটু আন্দোলন চালিয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন তিনি। নতুন বিজ্ঞপ্তি জারি করে সাম্মানিকের পরিমাণ কমানোয় বিতর্ক দেখা দিয়েছে রাজ্য প্রশাসনের অন্দরেও। নারী ও শিশুকল্যাণ দফতরের এক আধিকারিককে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘শেষ বিজ্ঞপ্তি নিয়ে কোনও মন্তব্য করব না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy