Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

রেললাইনে শুটিং, ছিন্নভিন্ন দুই অভিনেতার দেহ

সোমবার দুপুরে দমদম-বেলঘরিয়া স্টেশনের মাঝখানে তা মোবাইলবন্দি করছিলেন আর এক বন্ধু সৌম্যদীপ সাঁতরা। কানে যায়নি ট্রেনের বাঁশি। আপ বজবজ-নৈহাটি লোকাল ছিন্নভিন্ন করে দিয়ে গেল শৈশব-সুনীলকে।

দুর্ঘটনার আগের মুহূর্ত। সোমবার। ছবি: এবিপি আনন্দের সৌজন্যে

দুর্ঘটনার আগের মুহূর্ত। সোমবার। ছবি: এবিপি আনন্দের সৌজন্যে

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৩:৫২
Share: Save:

পরীক্ষায় ফল খারাপ হয়েছে, অবসাদে রেললাইনে বসে কাঁদছেন এক কলেজ পড়ুয়া। সান্ত্বনা দিচ্ছেন বন্ধু। শর্টফিল্মে এমনই দৃশ্যে অভিনয় করছিলেন যাঁরা, তাঁরাও কলেজছাত্র— শৈশব দলুই (২০) ও সুনীল তাঁতি (১৯)। সোমবার দুপুরে দমদম-বেলঘরিয়া স্টেশনের মাঝখানে তা মোবাইলবন্দি করছিলেন আর এক বন্ধু সৌম্যদীপ সাঁতরা। কানে যায়নি ট্রেনের বাঁশি। আপ বজবজ-নৈহাটি লোকাল ছিন্নভিন্ন করে দিয়ে গেল শৈশব-সুনীলকে। লাফ মেরে কোনও ক্রমে বেঁচেছেন সৌম্যদীপ।

লাইনে শুয়ে স্টান্ট, চলন্ত ট্রেনের সামনে নিজস্বী, মোবাইল কানে লাইন পারাপার— ট্রেনে বিপদ ডেকে আনার এমন অজস্র উদাহরণের সঙ্গে এ বার যোগ হল অসাবধানী শ্যুটিংও।

এদিন সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ পানিহাটি পাটবাড়ির লেনের বাসিন্দা তিন বন্ধু সোদপুর থেকে ট্রেনে উঠে বেলঘরিয়ায় নামেন। সেখান থেকে এক কিলোমিটার হেঁটে দমদম স্টেশনের দিকে সিসিআর ব্রীজের নীচে যান। পুলিশ সূত্রের খবর, সৌম্যদীপ জানিয়েছেন, একটি শর্টফিল্মের শ্যুটিং করছিলেন তারা। দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ তিন নম্বর লাইনে আসে বজবজ-নৈহাটি লোকাল। ছিটকে পড়েন শৈশব এবং সুনীল। এক জনের শরীর খানিকটা হিঁচড়ে নিয়ে যায় ট্রেনের চাকা। অন্য জনের মাথায় আঘাত লাগে। স্থানীয় লোকজনই জিআরপি’তে খবর দেন। তারাই দেহ উদ্ধার করে। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, একাধিক বার হর্ন দিয়েছিলেন ট্রেনচালক। কিন্তু শ্যুটিংয়ে ব্যস্ত থাকায় তা সুনীলদের কানে যায়নি ।

আরও পড়ুন: নীল-সাদা নয়, গেরুয়ায় অনড় মথুরাপুরের স্কুল

বঙ্গবাসী কলেজের কলা বিভাগে স্নাতক প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিলেন শৈশব। বাবা শান্তি দলুই বেসরকারি নিরাপত্তাকর্মী। বলেন, ‘‘কবে থেকে শৈশব এ সব শ্যুট করছে জানি না।’’ সৌম্যদীপও বঙ্গবাসীর ছাত্র। সুনীল পড়তেন সুরেন্দ্রনাথ কলেজের বাণিজ্য শাখার স্নাতক স্তরের দ্বিতীয় বর্ষে। বাবা, পেশায় ওয়েল্ডিং কর্মী রাজেন। মা স্বপ্নার কথায়, ‘‘সকালে শৈশব বলেছিল, কাকিমা ছোট কাজ আছে, শেষ করেই ফিরব। আর ফিরল না।’’ সৌম্যদীপের বাড়ি অন্ধকার। পুলিশকে সব জানিয়ে ছাড়া পেয়েছেন। কিন্তু আতঙ্ক তাড়া করছে। বললেন, শৈশব-সুনীলই বলেছিল ছবি তুলে দিতে! ‘‘কী যে হয়ে গেল’’, বিহ্বল সৌম্যদীপ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE