প্রতীকী ছবি।
যক্ষ্মা হারবে, জিতবে দেশ। সেপ্টেম্বরে এই স্লোগান দিয়ে ২০২৫ সালের মধ্যে ভারতকে যক্ষ্মামুক্ত করে তোলার লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন। শনিবার বাজেট-প্রস্তাবে সেই স্লোগান দিয়েই কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন জানান, যক্ষ্মা নির্মূলীকরণ কর্মসূচিকে আরও শক্তিশালী করা হবে। এ রাজ্যে যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির সঙ্গে যুক্ত স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর ঘোষণা স্বাগত। তবে সমাজের সব স্তরের মধ্যে সমন্বয় এবং সচেতনতা ছাড়া ঘোষিত লক্ষ্যে পৌঁছনো কার্যত অসম্ভব বলে মনে করছেন তাঁরা।
স্বাস্থ্য ভবন সূত্রের খবর, ৫০ লক্ষের বেশি বাসিন্দা আছে, এমন রাজ্যগুলির মধ্যে যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণে তৃতীয় স্থানে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। প্রথম স্থানে হিমাচল প্রদেশ এবং দ্বিতীয় গুজরাত। নতুন ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী ২০২৫ সালের মধ্যে প্রতি এক লক্ষ জনসংখ্যায় যক্ষ্মারোগীর সংখ্যা ৪৪-এ নামিয়ে আনতে হবে। এখন প্রতি এক লক্ষ জনসংখ্যায় যক্ষ্মারোগীর সংখ্যা ১৯৯। স্বাস্থ্য ভবনের এক কর্তা জানান, সমাজের সর্বস্তরে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে না-পারলে লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছনো মুশকিল। তাঁর বক্তব্য, বস্তি এলাকা, জেল, বৃদ্ধাশ্রমে যক্ষ্মারোগ নিয়ন্ত্রণে যথাযথ পদক্ষেপের অভাব রয়েছে। যক্ষ্মা কী এবং তার মোকাবিলা কেন প্রয়োজন, স্কুল স্তর থেকে সেই বিষয়ে সচেতনতা গড়ে তোলা জরুরি। যক্ষ্মারোগীদের একটি বড় অংশ চিকিৎসার জন্য বেসরকারি স্বাস্থ্য ক্ষেত্রের মুখাপেক্ষী। আগের তুলনায় সেই সব রোগীর তথ্য জানানোর
হার বেড়েছে। কিন্তু এখনও ৯০ হাজার রোগী নজরদারির বাইরে রয়েছে বলে মনে করছেন যক্ষ্মারোগের চিকিৎসক-বিশেষজ্ঞেরা।
প্রাক্তন রাজ্য টিউবারকিউলোসিস অফিসার ব্রজকিশোর সাহা বলেন, ‘‘বাজেটে উল্লেখ করায় যক্ষ্মা নিরাবণ কর্মসূচির গুরুত্ব যে বাড়ল, সেই বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। কিন্তু লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে কী ভাবে এগোতে হবে, সেটা ঠিক করা জরুরি।’’
‘মিশন ইন্দ্রধনুষ’ প্রকল্পে আরও পাঁচটি নতুন টিকা যুক্ত হবে বলে এ দিন জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। এই বিষয়ে স্বাস্থ্য ভবনের এক কর্তা জানান, নিউমোকক্কাস ছাড়া এই প্রকল্পের আওতাভুক্ত সব টিকাই দেওয়া হয় পশ্চিমবঙ্গে। নতুন পাঁচটি টিকা সম্পর্কে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের কাছ থেকে কোনও বার্তা এখনও আসেনি বলে জানিয়েছেন ওই কর্তা।
স্বাস্থ্য-শিক্ষা প্রসঙ্গে বাজেট-প্রস্তাবে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন, চিকিৎসক-ঘাটতি মেটাতে পিপিপি মডেলে এক-একটি জেলা হাসপাতালকে সঙ্গে নিয়ে নতুন মেডিক্যাল কলেজ গড়া হবে। যে-সব রাজ্য হাসপাতালের পরিষেবা এবং কম দামে জমি দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করবে, তারা এই ক্ষেত্রে কেন্দ্র থেকে আর্থিক সহায়তা পাবে।
নার্স, প্যারা-মেডিক্যাল এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের দক্ষতার মানোন্নয়নে ব্রিজ কোর্সের প্রস্তাব দিয়েছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী।
পিপিপি মডেলে বিভিন্ন জেলায় মেডিক্যাল কলেজ গড়াটা ঘুরিয়ে স্বাস্থ্যের বেসরকারিকরণ বলেই মন্তব্য করেছেন তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy