Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

গাদিয়াড়ার লজে বৃদ্ধের অপমৃত্যু

নিজেই গাড়ি চালিয়ে স্ত্রীকে নিয়ে বুধবার গাদিয়াড়ায় বেড়াতে গিয়েছিলেন টালিগঞ্জের এক বৃদ্ধ। ফেরার কথা ছিল শুক্রবার।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শ্যামপুর শেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৫:২৮
Share: Save:

নিজেই গাড়ি চালিয়ে স্ত্রীকে নিয়ে বুধবার গাদিয়াড়ায় বেড়াতে গিয়েছিলেন টালিগঞ্জের এক বৃদ্ধ। ফেরার কথা ছিল শুক্রবার। কিন্তু ওই দুপুরে সরকারি লজের ঘর থেকে মিলল তাঁর মৃতদেহ। গুরুতর অসুস্থ তাঁর স্ত্রী।

মৃতের নাম পরাগ পালচৌধুরী (৭১)। তাঁর স্ত্রী তাপসীদেবীকে উলুবেড়িয়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। দম্পতির একমাত্র ছেলে সিডনিতে থাকতেন। গত বছর অসুখে মারা যান। তার পর থেকেই দাদা-বৌদি মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন বলে জানিয়েছেন পরাগবাবুর ভাই কোরক পালচৌধুরী। পুলিশের অনুমান, মানসিক অবসাদে অত্যধিক মাত্রায় ঘুমের ওষুধ খেয়ে পরাগবাবু আত্মঘাতী হয়েছেন। একই কারণে তাপসীদেবীও স্বামীর সঙ্গে আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা করেছিলেন।

হাওড়া জেলা (গ্রামীণ) পুলিশের এক কর্তা জানান, অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে। শনিবার উলুবেড়িয়া হাসপাতালে ময়নাতদন্তের পরে বৃদ্ধের দেহটি তাঁর ভাইয়ের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, তিনি বেশি পরিমাণে ঘুমের ওষুধ খেয়েছিলেন। তাপসীদেবী সুস্থ হয়ে উঠলে তাঁর সঙ্গে কথা বলা হবে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কর্মসূত্রে পরাগবাবু দীর্ঘদিন দিল্লিতে ছিলেন। বছর দশেক আগে অবসরের পরে কলকাতায় ফেরেন। স্ত্রীকে নিয়ে পাটুলিতে একটি ভাড়াবাড়িতে থাকতেন। কয়েকটি বেসরকারি কলেজে পড়াতেনও। তাঁদের ছেলে প্রতীক সিডনিতে ব্যবসা করতেন। গত বছর ছেলের মৃত্যুর পরে টালিগঞ্জের মুদিয়ালিতে শ্বশুরবাড়িতে এসে সস্ত্রীক বসবাস শুরু করেন পরাগবাবু। গত বুধবার দুপুরে তাঁরা গাদিয়াড়ায় গিয়ে সরকারি লজে ওঠেন।

লজের কর্মীরা জানিয়েছেন, শুক্রবার দুপুরে পরাগবাবু যাবতীয় বিল মিটিয়ে দেন। তার পরে জামাকাপড় পাল্টানোর কথা বলে লজের ঘরে ফিরে যান। দম্পতি দীর্ঘক্ষণ না-বেরনোয় তাঁরা ডাকতে যান। কিন্তু সাড়া না-মেলায় পুলিশে খবর দেন। পুলিশ গিয়ে দরজা ভেঙে দেখে, দম্পতি অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে রয়েছেন। স্থানীয় কমলপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা পরাগবাবুকে মৃত ঘোষণা করেন।

দাদার মৃত্যুর খবর পেয়ে শনিবার দিল্লি থেকে উলুবেড়িয়া হাসপাতালে আসেন পরাগবাবুর ভাই কোরকবাবু। তিনি বলেন, ‘‘মানসিক অবসাদে দাদা-বৌদি আমাদের সকলের সঙ্গে কথা বলাও বন্ধ করে দিয়েছিলেন। অবসাদেই দাদা আত্মঘাতী হল বলে মনে হচ্ছে।’’ পরাগবাবুদের পড়শিরাও জানিয়েছেন, ছেলে মারা যাওয়ার পর থেকে দম্পতি কারও সঙ্গে মেলামেশা করতেন না। তবে তাঁদের বেড়ানোর নেশা ছিল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Unnatural death Death Old mn
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE