Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

দুই কেন্দ্রে দাপিয়ে বেড়াল শাসকই

উলুবেড়িয়া লোকসভা কেন্দ্রে সোমবার বিকাল ৫টা পর্যন্ত ভোট পড়েছে প্রায় ৭৮%। আর নোয়াপাড়া বিধানসভা কেন্দ্রে ৮২%। কিন্তু সিপিএম, বিজেপি এবং কংগ্রেসের অভিযোগ, সুষ্ঠু ভোট হয়নি কোথাও।

প্রতিবাদ: ভোটে অশান্তির প্রতিবাদে উলুবেড়িয়ার গঙ্গারামপুরে বিজেপির পথ অবরোধ। ছবি: সুব্রত জানা

প্রতিবাদ: ভোটে অশান্তির প্রতিবাদে উলুবেড়িয়ার গঙ্গারামপুরে বিজেপির পথ অবরোধ। ছবি: সুব্রত জানা

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ জানুয়ারি ২০১৮ ০৩:৫৪
Share: Save:

বিরোধীদের আশঙ্কা ছিলই। শেষ পর্যন্ত সোমবার জোড়া উপনির্বাচনে দেদার বুথ দখল ও ভোট লুঠের অভিযোগ উঠল শাসক দলের বিরুদ্ধে।

উলুবেড়িয়া লোকসভা কেন্দ্রে সোমবার বিকাল ৫টা পর্যন্ত ভোট পড়েছে প্রায় ৭৮%। আর নোয়াপাড়া বিধানসভা কেন্দ্রে ৮২%। কিন্তু সিপিএম, বিজেপি এবং কংগ্রেসের অভিযোগ, সুষ্ঠু ভোট হয়নি কোথাও। নোয়াপাড়ায় বুথের ভিতরে দাঁড়িয়ে তৃণমূলের প্রতীকে ভোট দেওয়ার ‘নির্দেশ’ দিচ্ছেন কেউ, সেই ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ্যে এসেছে। ওই কেন্দ্রের মধ্যেই উত্তর ব্যারাকপুর পুরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের ৫৭ নম্বর বুথে ভোট লুঠ রুখতে গিয়ে সিপিএমের কর্মী আঘাতে জখম হয়েছেন বলে অভিযোগ। নোয়াপাড়া ও উলুবেড়িয়ায় সোমবার সকাল ১০টার মধ্যে বিরোধীদের এজেন্ট বার করে দিয়ে কোন কোন বুথ ‘দখল’ করা হয়েছে, তার তালিকা নির্বাচন কমিশনে দিয়েছে বাম ও বিজেপি। দিনের শেষে তাদের অভিযোগ, কমিশন বা প্রশাসন কেউই ভোটের নামে ‘প্রহসন’ ঠেকাতে সক্রিয় হয়নি।

শাসক দলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা অবশ্য বিরোধীদের দুর্বল সংগঠনকেই পাল্টা দোষ দিচ্ছেন। নোয়াপাড়া বিধানসভা কেন্দ্রের সীমানা লাগোয়া একটি হোটেলে বসে দিনভর ভোটে নজরদারি চালিয়েছেন ভাটপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক অর্জুন সিংহ। অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে তাঁর বক্তব্য, ‘‘কোথাও কোনও বাইরের লোক আসেনি। বিরোধীদের লোক কোথায়? নিজেদের দুর্বলতা ঢাকতে নানা রকম অভিযোগ খাড়া করছে ওরা!’’ একই সুর উলুবেড়িয়া লোকসভার অন্তর্গত বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক সমীর পাঁজা, পুলক রায়দের। তাঁদের দাবি, সিপিএম এবং বিজেপি-র কর্মী নেই বলে তারা বুথে এজেন্ট দিতে পারেনি। যদিও বামেরা তথ্য দিয়েছে, উলুবেড়িয়া লোকসভার ৩৯১টি বুথে তাদের এজেন্ট বসতে দেওয়া হয়নি। আর ১৪১০টি বুথ থেকে সকাল ১০টার মধ্যে এজেন্টদের বার করে দেওয়া হয়েছে।

রাজ্যের মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক হাসিমুখেই দাবি করেছেন, ‘‘ভোট হয়েছে শান্তিপূর্ণ।’’ তাঁরা আত্মবিশ্বাসী, মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নের কর্মসূচির পক্ষেই রায় দেবেন। নোয়াপাড়া পুনরুদ্ধার করতে অর্জুনের পাশাপাশি জ্যোতিপ্রিয়, পার্থ ভৌমিক, শীলভদ্র দত্ত, রথীন ঘোষ, সুনীল মুখোপাধ্যায়ের মতো তৃণমূল নেতারা আশেপাশে ঘাঁটি গেড়েছিলেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এলাকার বিয়েবাড়ি, লজ রবিবার থেকেই ভর্তি ছিল। একই ভাবে পূজালীর আছিপুর থেকে নদী পেরিয়ে সশস্ত্র বাহিনী উলুবেড়িয়ায় ঢোকানো হয়েছিল বলে প্রশাসনকে জানিয়েছিল বিরোধীরা। তাদের বক্তব্য, এই উপনির্বাচনে কে কত শতাংশ ভোট পাবে, তা আসলে ঠিক করে দিয়েছে শাসকের বাহিনীই!

দিনের শেষে বিরোধী নেতা আব্দুল মান্নান, বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী ও সিপিএমের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদক গৌতম দেব, বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ এক সুরে অভিযোগ করেছেন, গণতন্ত্রকে জবাই করা হয়েছে! যা অক্ষমের অজুহাত বলে উড়িয়ে দিয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। ফল জানা যাবে ১ ফেব্রুয়ারি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE