—ফাইল চিত্র
ক্লাসঘরে বসে পড়ুয়ারা। কিন্তু শিক্ষকের আসন খালি। তিনি নেই, আবার আছেনও!
এই ক্লাসে সশরীর নয়, বরং শিক্ষক আসবেন ইন্টারনেটের মাধ্যমে। এমন ভার্চুয়াল-ক্লাসঘর বিদেশের স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে বিরল নয়। দেশের কেন্দ্রীয় সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও এমনটা দেখা যায়। আইআইটি, এনআইটিতেও এমন ক্লাসের ব্যবস্থা আছে। তবে এ বার এমনটা দেখা যাবে রাজ্যের সরকারি কলেজগুলোয়। চক-ব্ল্যাকবোর্ডের প্রথাগত শিক্ষা পদ্ধতির গণ্ডি পেরিয়ে ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে হাতেখড়ি হতে চলেছে এ রাজ্যের।
সম্প্রতি উচ্চশিক্ষার পাঠ্যসূচি নির্ধারণে কর্পোরেট পরামর্শদাতা সংস্থার সাহায্য নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। আর ভার্চুয়াল ক্লাসরুম চালু হলে কলেজগুলো কর্পোরেট আবহ তৈরির পথে আরও এক ধাপ এগোবে বলে দাবি উচ্চ শিক্ষা দফতরের কর্তাদের।
ভার্চুয়াল ক্লাস মানে ঠিক কী?
শিক্ষা দফতরের কর্তারা বলছেন, ‘ভার্চুয়াল’ শব্দের অর্থ এমন কোনও জিনিস যা কি না অনেকটা বাস্তবের মতো। কিন্তু চেনা ছকের সঙ্গে যার মিল নেই। ‘ভার্চুয়াল ক্লাসরুম’ তেমনই। পড়ুয়ারা সেখানে সশরীর থাকলেও শিক্ষক থাকবেন না। বিশ্বের বহু জায়গায় এমনও হয় যেখানে শিক্ষক বা পড়ুয়া— কেউই ক্লাসে উপস্থিত থাকেন না। পড়াশোনা চলে ইন্টারনেটের মাধ্যমে।
উচ্চ শিক্ষা দফতরের এক কর্তা জানিয়েছেন, প্রাথমিক ভাবে ৬৫টি সরকারি কলেজে স্নাতক স্তরে ভার্চুয়াল ক্লাসরুম তৈরি করা হচ্ছে। প্রতি কলেজে দু’টি করে ঘর এ জন্য বরাদ্দ থাকবে। প্রথমে বিজ্ঞান বিভাগ, পরে বাণিজ্য ও কলা বিভাগে এই প্রক্রিয়া চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে।
উচ্চ শিক্ষা দফতরের কর্তাদের মতে, দেশ-বিদেশ থেকে নামী অধ্যাপকেরা এলে মূলত রাজ্যের প্রথম সারির প্রতিষ্ঠানগুলোতেই যান। জেলা বা মফস্সলের কলেজ পড়ুয়ারা তাঁদের দেখা পান না।
ভার্চুয়াল ক্লাসের মাধ্যমে ভৌগোলিক দূরত্ব পেরিয়ে নিমেষে এই অধ্যাপকেরা পৌঁছে যেতে পারেন গ্রামের কলেজেও। দফতরের এক কর্তার বক্তব্য, সময়ের অভাব আর খরচ বেড়ে যাওয়ার কারণে বাইরের অনেক অধ্যাপকই রাজ্যে আসতে পারেন না। তবে ‘‘এ বার এই প্রযুক্তির মাধ্যমে তাঁরা পৌঁছে যেতে পারেন কলকাতা থেকে কোচবিহার’’ মন্তব্য ওই শিক্ষা-কর্তার। প্রয়োজনে কোনও শিক্ষকের পড়ানোর ভিডিও পড়ুয়াদের ডিভি়ডি বা পেন ড্রাইভে করে দিয়েও দেওয়া যাবে।
শিক্ষা জগতের অনেকেই বলছেন, আইআইটি, এনআইটি, ইউজিসি ছাড়াও বিশ্বের বহু বিশ্ববিদ্যালয়েই ভার্চুয়াল ক্লাসরুমের জন্য নিজস্ব সফ্টওয়্যার সিস্টেম রয়েছে। তার মাধ্যমে এক প্রতিষ্ঠানের পড়ুয়ারা সহজেই অন্য প্রতিষ্ঠানের অধ্যাপকদের ক্লাস করার সুযোগ পান। উচ্চ শিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, কলেজ পিছু ৩ লক্ষ টাকা খরচ করে প্রজেক্টর, স্ক্রিন, ব্রডব্যান্ড সংযোগ, মাইক্রোফোন বসিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তবে কোন সময়ে কোন অধ্যাপকের ক্লাস করানো হবে, সেই সিদ্ধান্ত নেবেন সংশ্লিষ্ট কলেজ কর্তৃপক্ষই। চাইলে এ রাজ্যের কলেজগুলোও সেই একই ভাবে আইআইটি বা ভিন দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে এই ভার্চুয়াল ক্লাসরুমের মাধ্যমে গাঁটছড়া বাঁধতেই পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy