বৈঠক শেষে বিশ্বভারতীর আধিকারিকেরা। নিজস্ব চিত্র
এ যেন বোধনেই বিসর্জনের বাজনা। করোনা আতঙ্কের জেরে বিশ্বভারতী বসন্তোৎসব বাতিল করার জেরে হতাশা ছড়িয়েছে গোটা বিশ্ববিদ্যালয় জুড়ে। পরিস্থিতির বিচারে সিদ্ধান্ত ঠিক বলে জানালেও হতাশা গোপন করছেন না ছাত্র-ছাত্রী ও ব্যবসায়ীরা। সব মিলিয়ে এক মিশ্র প্রতিক্রিয়া গোটা শান্তিনিকেতন জুড়ে। সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানানোর পাশাপাশিই, হতাশা ছড়িয়ে পড়েছে সকলের মধ্যে।
সঙ্গীতভবনের ছাত্রী অনিন্দিতা রাউত বলেন, ‘‘এই সিদ্ধান্তে আমরা অত্যন্ত হতাশ। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে বাঁচতে এই সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ সঠিক। কিন্তু করোনাভাইরাসের সংক্রমণ তো আজ থেকে শুরু হয়নি, গত ডিসেম্বর থেকেই করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হয়ে গিয়েছিল। তাই, এই ঘোষণা যদি আরো কিছুদিন আগেই করা হত, তাহলে হতাশা কিছুটা কম হত। প্রস্তুতি ছিল শেষ পর্যায়ে, আজ সন্ধ্যাতেও রিহার্সাল করেছি। তার পর এই সিদ্ধান্ত খুব কষ্ট দিয়েছে।’’
অন্যদিকে বসন্তোৎসব বাতিলের জেরে বিপুল ক্ষতির সম্মুখীন হতে চলেছেন ব্যবসায়ীরা। মূলত হোটেল ব্যবসায়ী, পরিবহণ ব্যবসার-এর সঙ্গে যুক্তরা, আবির ব্যবসায়ী, কাপড় ব্যবসায়ী এবং হস্তশিল্প ব্যবসায়ীরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে চলেছেন বলে ব্যবসায়ী সমিতি সূত্রে খবর। ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক সুনীল সিংহের মতে, ক্ষতির পরিমাণ কয়েক কোটি টাকা। তিনি বলেন, ‘‘এই সিদ্ধান্তের ফলে, ব্যবসায়ীরা বিরাট ক্ষতির মুখোমুখি হতে চলেছেন। যে বিপুল আয়োজন আমরা করেছিলাম, তার ক্ষতিকে পূরণ করা অত্যন্ত কঠিন। তবে, সাধারণের স্বাস্থ্যের স্বার্থে আমরা এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই। তবে এই প্রায় কয়েক কোটি টাকার ক্ষতিকে সামলে ওঠা আমাদের পক্ষেও অত্যন্ত কষ্টের।’’
বসন্তোৎসবকে কেন্দ্র করে সম্পূর্ণ সেজে উঠেছিল শান্তিনিকেতন এবং বোলপুর। কয়েক মাস আগে থেকেই হোটেলগুলি পুরো বুক হয়ে গিয়েছিল। পর্যটকদের একটা বড় পরিমাণ টাকা গচ্ছিত রয়েছে হোটেল মালিকদের কাছে। সেই টাকার ভবিষ্যৎ নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। এই প্রসঙ্গে শান্তিনিকেতনের এক হোটেল মালিক সজল ঘোষ বলেন, ‘‘নেওয়া টাকা ফেরত দেওয়া প্রায় অসম্ভব। কারণ সেই টাকা নানা খাতে খরচ হয়ে যায়। তবে আমরা চেষ্টা করব, ওই দর্শনার্থীরা যদি পরবর্তীকালে কখনও এখানে আসেন, তবে বিশেষ কিছু সুবিধা দেওয়ার।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy