বৈঠক সেরে বেরিয়ে আসছেন উপাচার্য ও দুই কোর্ট সদস্য। নিজস্ব চিত্র
পৌষমেলা নিয়ে এ বার বল গড়াতে চলেছে প্রধানমন্ত্রীর কোর্টে।
পৌষমেলা পরিচালনের দায়িত্ব কেন্দ্রীয় সরকার নিক, রবিবার এই মর্মে প্রস্তাব গৃহীত হল বিশ্বভারতীর কোর্ট বৈঠকে। এ দিনের বৈঠক শেষে আচার্য মনোনীত বিশ্বভারতীর কোর্ট সদস্য তথা প্রধানমন্ত্রী মনোনীত রাজ্যসভার সাংসদ স্বপন দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘দিল্লি গিয়েই বিশ্বভারতীর আচার্য হিসেবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখব। চিঠির প্রতিলিপি দেব কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রককে। বিশ্বভারতীর হয়ে কেন্দ্রীয় সরকার যাতে পৌষমেলার দায়িত্ব নেয়, সেই আবেদন রাখব।’’ বিশ্বভারতী সূত্রের খবর, এই প্রস্তাবে সহমত হয়েছেন কোর্টের বাকি সদস্যেরাও।
গত মঙ্গলবার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিলেন, এ বার থেকে তাঁরা শুধু পৌষ উৎসব করবেন। কিন্তু, পৌষমেলা পরিচালনা করা তাঁদের পক্ষে সম্ভব নয়। এর পরেই পৌষমেলা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। বিশ্বভারতীর সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিশ্বভারতীর প্রাক্তনী থেকে বিভিন্ন স্তরের মানুষজন। এমন আবহে পৌষমেলার পরিচালনা নিয়ে সম্প্রতি বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর সঙ্গে কথা হয় রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের। রবিবার পার্থবাবু বলেন, ‘‘পৌষমেলা বাঙালির সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য। সেই কারণেই উপাচার্যের সঙ্গে আলোচনা করে মুখ্যমন্ত্রীকে সব জানাতে চেয়েছিলাম। আমরা চাই, যে ভাবেই হোক, যে-ই করুক না কেন, পরিবেশ ও অন্য সব কিছু বজায় রেখেই পৌষমেলা হোক।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘এই মেলা বন্ধ হোক, এটা কারও কাম্য নয়। আমারা সব সময় সহযোগিতা করব।’’
এ দিন বিশ্বভারতীর কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সম্মেলন কক্ষে কোর্ট বৈঠক হয়। উপাচার্য বিদ্যুৎবাবু সহ কোর্ট সদস্যেরা ছিলেন। বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত জনসংযোগ আধিকারিক অনির্বাণ সরকার জানান, নিয়ম অনুযায়ী একটি বার্ষিক কোর্ট বৈঠক করতেই হয়। বৈঠকের অনুমতি দেন আচার্য স্বয়ং। সেই অনুমোদন পাওয়ার পরে বৈঠকটি হয়।
উপাচার্যের কথায়, ‘‘আচার্য অনুমোদিত কোর্ট বৈঠকে বাজেট, অ্যাকাউন্ট, বার্ষিক রিপোর্ট নিয়ে আলোচনার মধ্যে পৌষমেলা নিয়েও কথা ওঠে। এর পরেই স্বপনবাবু তাঁর প্রস্তাবের কথা জানান। রীতি মেনে আমরা পৌষ উৎসব করব। কিন্তু, মেলা পরিচালনার দায়িত্ব কোনও ভাবেই বিশ্বভারতীর পক্ষে নেওয়া সম্ভব নয়।’’
কেন কেন্দ্রীয় সরকার?
স্বপনবাবুর যুক্তি, বিশ্বভারতী একটি কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠান। সুতরাং, কেন্দ্রেরই এই মেলার দায়িত্ব নেওয়া উচিত। ঐতিহ্যের কথা মাথায় রেখে পৌষমেলাকে সংরক্ষণ করাও উচিত বলে মনে করেন তিনি। কোর্ট সদস্যদের মতে, পৌষমেলা এবং পৌষ উৎসবের আলাদা বিষয়। সেটা সকলকেই বুঝতে হবে। পৌষ উৎসব পুরোপুরি বিশ্বভারতীর। সেখানে কোনও সরকারি হস্তক্ষেপ হবে না। কিন্তু, বিশ্বভারতীর মাঠেই হওয়া পৌষমেলার দায়িত্ব কেন্দ্রীয় সরকার চাইলে নিতেই পারে। পরিচালনার দায়িত্ব য়ার হাতেই থাক, পৌষমেলা হোক—একান্ত ভাবে এটা চাইছেন স্থানীয় বাসিন্দা, পড়ুয়া-প্রাক্তনী, ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে সব মহল।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy