Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

গুরুঙ্গের নামে পরোয়ানা, নয়া মামলায় সাঁড়াশি চাপ

প্রশাসনের একটি সূত্র মনে করছে, এই সাঁড়াশি চাপে গুরুঙ্গকে আরও নিঃসঙ্গ করে দেওয়া যাবে। এই পরোয়ানা হাতে নিয়ে সিকিম পুলিশের উপরে নতুন করে চাপ তৈরি করাও যাবে।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

কৌশিক চৌধুরী ও প্রতিভা গিরি
কার্শিয়াং ও দার্জিলিং শেষ আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৪:০৩
Share: Save:

এক দিকে পাহাড়বাসীদের আস্থা বাড়াতে সক্রিয় প্রশাসন, তৃণমূল ও আলোচনাপন্থীরা। অন্য দিকে, বিমল গুরুঙ্গকে ঘিরে আইনের ফাঁস আটোসাঁটো করার কাজও শুরু হয়ে গিয়েছে। তাই যে দিন দার্জিলিঙে মোমবাতি মিছিল করছেন বিনয় তামাঙ্গ, নাম না করে গুরুঙ্গকে তালিবান বলছেন, সে দিনই দার্জিলিং মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে মোর্চা সভাপতির নামে নয়া গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হচ্ছে।

প্রশাসনের একটি সূত্র মনে করছে, এই সাঁড়াশি চাপে গুরুঙ্গকে আরও নিঃসঙ্গ করে দেওয়া যাবে। এই পরোয়ানা হাতে নিয়ে সিকিম পুলিশের উপরে নতুন করে চাপ তৈরি করাও যাবে। আস্থা ফেরানো যেতে পারে পাহাড়বাসীর মনেও।

গত ৮ জুন দার্জিলিঙে রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকের সময় ভানুভবন থেকে মিছিল বার হয়ে শৈলশহরে গোলমাল, অশান্তি শুরু করে বলে অভিযোগ। সেই হাঙ্গামার পরের দিন দার্জিলিং সদর থানায় পুলিশ বিমল গুরুঙ্গ, রোশন গিরি, প্রকাশ গুরুঙ্গ, অমৃত ইয়নজন, অশোক ছেত্রী, ডিকে প্রধান, তিলক রোকা এবং আশা গুরুঙ্গের নামে মামলা দায়ের করে। এ দিন সকলের নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পরে বিভিন্ন থানায় তা পাঠানো হচ্ছে। অভিযুক্তদের দেখামাত্র ধরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মোর্চার গুরুঙ্গপন্থী এক কেন্দ্রীয় কমিটি সদস্য জানান, তাঁরা আইনি পথেই এর মোকাবিলা করবেন।

আরও পড়ুন: কাউকে তোষণ করি না, বললেন মমতা

কিন্তু রাজনৈতিক ভাবেও তো ধীরে ধীরে পাহাড়ে জমি দখল করছে গুরুঙ্গ-বিরোধী শক্তি। দার্জিলিঙের চকবাজারে এ দিন মোমবাতি মিছিল করেন বিনয়। একই সঙ্গে জানান, সব বন্ধ করে রাখার তালিবানি হুমকি, পাহাড়বাসী আর মেনে নেবেন না। তিনি বলেন, ‘‘অনেক হুমকি সত্ত্বেও মোমবাতি মিছিলে কিছুটা সাড়া পেয়েছি। ৯ সেপ্টেম্বর চকবাজারে সভা করব। কেন বন্‌ধ-বন্দুক এড়িয়ে আলোচনার পথে গোর্খ্যাল্যান্ড আদায়ে জোর দিচ্ছি, তা ফের বলব।’’

এ দিনই সকালে পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব কার্শিয়াঙের গাড়িধুরায় যান। সঙ্গে গাড়ি বোঝাই করে চাল-আটার প্যাকেট। বন্‌ধে বিপর্যস্ত বাসিন্দাদের মধ্যে তা বিলি করেছেন। তাঁর ডাকে সাড়া দিয়ে তখনকার মতো বেশ কিছু দোকানপাটও খোলে। মোর্চার এক দল সমর্থক তৃণমূলের পতাকা হাতে নিয়ে বন্‌ধ-বিরোধী স্লোগানও দেন। গৌতমবাবু বলেন, ‘‘আমরা স্থানীয়দের পাশে থেকে ভরসা দিচ্ছি। আতঙ্কের কারণ নেই। পানিটাঘাট, মিরিক-সহ তিন জায়গায় দোকান খুলেছে। আশা করছি, পুজোর আগেই পাহাড় স্বাভাবিক হয়ে যাবে।’’

পাহাড়ে অবশ্য বিক্ষিপ্ত গোলমাল এখনও চলছে। এ দিন রাতে মিরিকে পূর্ত দফতরের বাংলোর সামনে বিস্ফোরণের খবর মিলেছে। তবে কোনও হতাহতের খবর নেই। ডাউহিল বন বাংলো, পুরনো সার্কিট হাউস এবং একাধিক পুলিশের গাড়িতে আগুন ধরানো, গোলমাল বাধানোর অভিযোগে এ দিন কার্শিয়াং থেকে মোর্চা নেতা অনিল রাই ও সমীর শেরপাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

সেই সঙ্গে পাতলেবাস লাগোয়া টাকভর চা বাগানের জমি দখল করে স্কুল তৈরির অভিযোগে বিমল গুরুঙ্গ-সহ কাঞ্চনজঙ্ঘা পাবলিক স্কুলের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্যদের বিরুদ্ধেও মামলা দায়ের হয়েছে। অভিযুক্তদের মধ্যে বিমলের ছেলে অবিনাশ, মেয়ে নন্দা এবং স্ত্রী আশার নামও রয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE