Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

প্লাস্টিক ঠেকাতে শালপাতা

প্রকল্প বাঁচাতে এ বার গাঁধীগিরি!পুরুলিয়া পাম্প স্টোরেজ বিদ্যুৎ প্রকল্প এলাকায় প্লাস্টিক ও থার্মোকলের দূষণ ঠেকাতে এ বার পিকনিক দলকে শালপাতার থালা-বাটি সরবরাহ করবে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা।

পিনাকী বন্দ্যোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০১৭ ০৩:২৫
Share: Save:

প্রকল্প বাঁচাতে এ বার গাঁধীগিরি!

পুরুলিয়া পাম্প স্টোরেজ বিদ্যুৎ প্রকল্প এলাকায় প্লাস্টিক ও থার্মোকলের দূষণ ঠেকাতে এ বার পিকনিক দলকে শালপাতার থালা-বাটি সরবরাহ করবে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা।

শীতের সময় ওই বিদ্যুৎ প্রকল্পের বিস্তীর্ণ এলাকায় বনভোজন করতে আসেন অসংখ্য মানুষ। সঙ্গে আনেন প্লাস্টিকের প্যাকেট ও থার্মোকলের থালা-গ্লাস, বাটি। পিকনিকের পরে সেগুলি ছড়িয়ে থাকে প্রকল্পের জমিতেই। বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার এক কর্তা জানান, প্লাস্টিকের সেই সব প্যাকেট ও থার্মোকলের থালা-বাটি-গ্লাস জমা হয় প্রকল্পের জলাধারে। তাতে জল তো দূষিত হচ্ছেই। সেই সঙ্গে প্লাস্টিক, থার্মোকলের ওই সব জিনিস টার্বাইনে ঢুকে বড় ধরনের বিপর্যয়ের আশঙ্কা বাড়াচ্ছে।

ওই সব জিনিস নিয়ে লোকজন প্রকল্পের এলাকায় ঢুকছেন কী করে? সংরক্ষিত এলাকায় পিকনিকের অনুমতিই বা দেওয়া হচ্ছে কী ভাবে?

বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার ওই কর্তা জানান, ওই এলাকায় বনভোজন হচ্ছে প্রকল্প তৈরির আগে থেকেই। সেই পিকনিক-প্রবণতা বন্ধ করা যায়নি। প্লাস্টিক, থার্মোকলের ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে জেলা প্রশাসন। তবু কাজ হচ্ছে না। তাই গাঁধীগিরির পথই বেছে নিয়েছেন প্রকল্প-কর্তৃপক্ষ। ঠিক হয়েছে, পিকনিক পার্টির কাছ থেকে থার্মোকলের থালা-বাটি রেখে দিয়ে শালপাতার থালা-বাটি বিলি করা হবে। বিনিময়-মূল্যও নেওয়া হতে পারে। আগামী শীতেই এই ব্যবস্থা পাকাপাকি ভাবে চালু করতে চলেছে পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন।

বাঁকুড়ার শুশুনিয়া পাহাড়ে পিকনিকে আসা গাড়ি পরীক্ষা করা হয়। থার্মোকলের থালা-বাটি বা প্লাস্টিক থাকলে সেগুলো রেখে দিয়ে শালপাতার থালা ও কাগজের কাপ বিক্রি করা হয়। স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে কাজে লাগিয়ে প্রশাসন এই কাজ করছে। পুরুলিয়ার জেলাশাসক তন্ময় চক্রবর্তীর উদ্যোগে পুরুলিয়া পাম্প স্টোরেজ প্রকল্প এবং আশপাশের পিকনিক স্পটগুলিতে শালপাতার থালা-বাটি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এতে প্লাস্টিক-দূষণ থেকে অযোধ্যা পাহাড়, পাম্প স্টোরেজ প্রকল্প রক্ষা করা যাবে বলে আশা বিদ্যুৎকর্তাদের।

প্রশাসনের হিসেবে প্রতি বছর পর্যটক ও পিকনিকপ্রেমী-সহ প্রায় দু’লক্ষ মানুষ আসা-যাওয়া করেন অযোধ্যা পাহাড়ে। জলাধারগুলির আশেপাশে হয় বনভোজন। কিন্তু প্রকল্পের সংরক্ষিত এলাকায় অবাধ প্রবেশ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন প্রকল্পের অনেক কর্মীই। তবে প্রশ্ন থাকলেও এখনই প্রকল্প-এলাকায় পিকনিক নিষিদ্ধ হচ্ছে না বলে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা সূত্রের খবর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE