উল্লাস: ততক্ষণে আসতে শুরু করেছে কংগ্রেস প্রার্থীদের জয়ের খবর। তিন রাজ্যে বিজেপিকে হারিয়ে কংগ্রেসের উত্থানে আবিরে মেতেছেন কংগ্রেস কর্মীরা। মঙ্গলবার শিলিগুড়িতে। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক
পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা ভোটের ধাক্কা সামাল দিতে দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্রের সমতল এলাকায় রামমন্দির ও রথযাত্রাকে হাতিয়ার করতে সচেষ্ট হয়ে উঠেছেন বিজেপির স্থানীয় নেতৃত্ব। দল সূত্রের খবর, এর মধ্যেই রামমন্দির নির্মাণ, হিন্দুরাষ্ট্র গঠনের পক্ষে উত্তরবঙ্গে আসরে নেমেছে সঙ্ঘ পরিবার। তার উপরে উচ্চ আদালতে বিচারাধীন মামলার রায় অনুকূলে গেলেই সঙ্গে সঙ্গেই যাতে শিলিগুড়ি ও লাগোয়া সমতলে রথযাত্রা শুরু করা যায়, সে জন্যও কোমর বাঁধছেন নেতারা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকেও যত দ্রুত সম্ভব শিলিগুড়িতে এনে সভা করাতে চাইছেন স্থানীয় নেতারা।
বিজেপির দার্জিলিং জেলা সভাপতি (সমতল) অভিজিৎ রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘ছত্তীসগঢ়ের ফল অপ্রত্যাশিত। দলের শীর্ষ নেতারা বিশ্লেষণ করছেন। তবে অন্যান্য রাজ্যে যেমন বিজেপি মুছে যাবে বলে কেউ কেউ ভেবেছিলেন তা একেবারেই হয়নি। তাই এখানে আমরাও আশাবাদী। যদি আদালতের নির্দেশ মেলে তা হলে রথযাত্রা শুরু হতে দেরি হবে না।’’ তিনি জানান, সব ঠিক থাকলে প্রধানমন্ত্রীর সভাও শিলিগুড়িতে হতে পারে।
দার্জিলিং পাহাড়ের তিন আসনের তুলনায় সমতলের ৪ আসন, অর্থাৎ শিলিগুড়ি, ফাঁসিদেওয়া, মাটিগাড়া-নকশালবাড়ি ও চোপড়ায় বিজেপি কম ভোট পায় গত লোকসভা ভোটে। বিধানসভা ভোটে শিলিগুড়ি সিপিএমের, ফাঁসিদেওয়া, মাটিগাড়া-নকশালবাড়ি কংগ্রেসের, চোপড়া নির্দলের (পরে তৃণমূলে যোগ দেন) দখলে যায়। ফলে, ওই এলাকাগুলিতে বিজেপি গত কয়েক বছরে সংগঠন বাড়াতে যেমন জোর দিয়েছে, তেমনই বাম, কংগ্রেস, তৃণমূলও শক্তি বাড়াতে চাইছে। হালে চোপড়ায় দুই যুবকের গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুর ঘটনাকে সামনে রেখে আন্দোলনের মাধ্যমে এলাকায় জোর বাড়াতে চাইছে বিজেপি।
তবে তৃণমূলের জেলা সভাপতি গৌতম দেব মনে করেন, বিজেপি ‘রাম-রথ’কে প্রধান হাতিয়ার করলেও বিশেষ সুবিধা করতে পারবে না। তাঁর যুক্তি, ‘‘আনাজ, জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি, কৃষকদের ক্ষতি বেড়ে যাওয়া, কর্মসংস্থান না হওয়ার ফল দিতে হচ্ছে বিজেপিকে।’’
উত্তরবঙ্গে কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক বিজয়েন্দ্র প্রতাপ সিংহ ইদানীং নিয়মিত যাতায়াত করছেন। তিনি বলেন, ‘‘তরাইয়ের চা বলয়ে শ্রমিকদের দুর্দশা আজও কেন ঘোচেনি, সেই জবাব বিজেপির কাছ থেকে বুঝে নেবেন মানুষ।’’ শিলিগুড়ির বিধায়ক অশোক ভট্টাচার্য মনে করেন, ‘‘পেটে খিদে নিয়ে হিন্দুত্বের রাজনীতি হিন্দিবলয়, উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যও মেনে নিতে পারছে না। তাই যতই রথযাত্রা হোক না কেন, তা থেকে বিজেপির লাভের চেয়ে ক্ষতিই বেশি হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy