Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

স্পিড পোস্টে স্পিডই নেই! ক্ষোভ রাজ্যের

সরকারি পরিষেবায় গতি হারিয়েছে ‘স্পি়ড পোস্ট’—এই অভিযোগে ডাক বিভাগের উপর বেজায় ক্ষুব্ধ রাজ্য সরকার। প্রশাসনের অভিযোগ, ডাক বিভাগের কারণেই সম্প্রতি ধাক্কা খেয়েছে সরকারি চিঠি চালাচালি প্রক্রিয়া। যদিও ডাক বিভাগের বক্তব্য, পুরনো বদলে নতুন সফটঅয়্যারের ব্যবহার শুরু হয়েছে। শীঘ্রই স্বাভাবিক হবে পরিস্থিতি।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

চন্দ্রপ্রভ ভট্টাচার্য
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ অক্টোবর ২০১৮ ০৪:২৪
Share: Save:

সরকারি পরিষেবায় গতি হারিয়েছে ‘স্পি়ড পোস্ট’—এই অভিযোগে ডাক বিভাগের উপর বেজায় ক্ষুব্ধ রাজ্য সরকার। প্রশাসনের অভিযোগ, ডাক বিভাগের কারণেই সম্প্রতি ধাক্কা খেয়েছে সরকারি চিঠি চালাচালি প্রক্রিয়া। যদিও ডাক বিভাগের বক্তব্য, পুরনো বদলে নতুন সফটঅয়্যারের ব্যবহার শুরু হয়েছে। শীঘ্রই স্বাভাবিক হবে পরিস্থিতি।

প্রশাসনিক সূত্রের খবর, সমস্যার শুরু মাস দু’য়েক আগে। সরকারি কাজে সুবিধার জন্য মহাকরণে ডাক বিভাগের (জিপিও) একটি শাখার মাধ্যমে বিভিন্ন দফতর প্রতিদিনই সরকারি চিঠি রাজ্যের মধ্যে এবং ভিন রাজ্যে পাঠিয়ে থাকে। কিন্তু অগস্ট মাসের শেষ সপ্তাহে চিঠি পাঠাতে গেলে মহাকরণের জিপিও শাখা রাজ্যের আধিকারিকদের জানিয়ে দেয়, ‘স্পিড পোস্টে’র জন্য চিঠি আপাতত গ্রহণ করা হবে না। কারণ হিসেবে মৌখিক ভাবে বলা হয়, বিভাগের সফটওয়্যার আপডেটের কাজের জন্যই এই পরিস্থিতি। কিন্তু লিখিত ভাবে সে তথ্য রাজ্য সরকারকে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ।

কয়েক দিন বাদে ‘স্পিড পোস্টে’র কাজ শুরু হলেও চিঠি পৌঁছনো বা পাওয়ার ক্ষেত্রে ডাক বিভাগের নির্ধারিত সময় বজায় থাকছে না বলেও অভিযোগ। আধিকারিকদের একাংশের ব্যাখ্যায়, আদর্শ পরিস্থিতিতে চিঠি পাঠানো থেকে উত্তর পাওয়ার মধ্যে সময় লাগত সর্বোচ্চ দু’সপ্তাহ। কিন্তু এখন অনেক ক্ষেত্রেই সেই প্রক্রিয়ায় মাস পার হয়ে যাচ্ছে। অভিযোগ উঠেছে, কেন দেরি হচ্ছে এই নিয়ে ডাক বিভাগের কাছে পাঠানো ই-মেলের জবাবও আসেনি প্রশাসনের কাছে। এমনকি, যোগাযোগ ভবনে গিয়ে অভিযোগের চিঠি সরাসরি পৌঁছে দেওয়া হলেও কোনও প্রত্যুত্তর মেলেনি ডাক বিভাগের তরফে। প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, ‘‘চিঠি জমা হলেও কোনও হেলদোল দেখা যাচ্ছে না ডাক বিভাগের তরফে।’’ শুক্রবার চিফ পোস্ট মাস্টার জেনারেল (ওয়েস্ট বেঙ্গল সার্কল) অরুন্ধতী ঘোষ বলেন, ‘‘সফটঅয়্যার সংক্রান্ত কিছু সমস্যা ছিল। সেটা মিটে গিয়েছে। রাজ্য সরকারকে তা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।’’

আরও পড়ুন: হাসপাতালে ফিরে এল হাজিরা খাতা

কী ধরনের কাজ ধাক্কা খাচ্ছে? প্রশাসনিক সূত্রের খবর, সাধারণ ভাবে যে কাজগুলির সঙ্গে সাধারণ মানুষের সরাসরি যোগাযোগ রয়েছে, সেগুলিতেই দেরি হচ্ছে। বিশেষ করে, নাগরিকত্ব, বিদেশে যাতায়াতের মতো এমন কিছু বিষয়ে সাধারণের থেকে নথি নিয়ে ‘স্পিড পোস্টে’র মাধ্যমে তা কেন্দ্রকে পাঠানো হয়। কেন্দ্রের প্রত্যুত্তরও আসে ‘স্পিড পোস্টে’র মাধ্যমে। সেই প্রক্রিয়াতেই আবেদনকারীর কাছে চিঠি পাঠায় রাজ্য সরকার। এই পুরো প্রক্রিয়াতেই দেরি হয়ে যাচ্ছে। সরকারি ব্যবস্থায় বেসরকারি কোনও ক্যুরিয়ার সংস্থার পরিবর্তে ডাক বিভাগের মাধ্যমেই চিঠি পাঠানোর রীতি চলে আসছে দীর্ঘদিন থেকে। তাই সরকার এই পদ্ধতির উপর খুবই নির্ভরশীল।

এক কর্তার কথায়, ‘‘সরকারকে জবাবদিহি করতে হয় সাধারণের কাছে। ছোট দফতরগুলি প্রতিদিন গড়ে ৫০-৭৫টি চিঠি পাঠায়। মাঝারি দফতরগুলির সেই সংখ্যা গড়ে ১০০-১৫০। বড় দফতরগুলিকে আরও বেশি চিঠি পাঠাতে হয়। বর্তমান পরিস্থিতি দ্রুত কেটে গেলেই মঙ্গল। তবে ডাক বিভাগের বার্তা শুক্রবার রাত পর্যন্ত আমরা জানতে পারিনি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE