Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

রূপান্তরকামীদের কেন্দ্রীয় বৃত্তিতে এ রাজ্য দ্বিতীয়

কেন্দ্রের সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রকের সাম্প্রতিক পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষে পশ্চিমবঙ্গের ২১৯ জন রূপান্তরকামী পড়ুয়া (দশম শ্রেণি পর্যন্ত) কেন্দ্রীয় বৃত্তি পেয়েছে।

নবান্ন। ফাইল চিত্র।

নবান্ন। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০১৯ ০৩:১০
Share: Save:

রাজ্য থেকে কেন্দ্র— সব সরকারই বিভিন্ন ভাবে রূপান্তরকামীদের উন্নয়নের চেষ্টা চালাচ্ছে। কেন্দ্রীয় সরকারের পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, সারা দেশে চলতি বছরে স্কুল স্তরে রূপান্তরকামী পড়ুয়াদের বৃত্তির তালিকায় পশ্চিমবঙ্গের স্থান দ্বিতীয়। এটা তাদের উন্নয়ন কর্মসূচির সাফল্য বলেই শাসক দল তৃণমূলের দাবি।

কেন্দ্রের সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রকের সাম্প্রতিক পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষে পশ্চিমবঙ্গের ২১৯ জন রূপান্তরকামী পড়ুয়া (দশম শ্রেণি পর্যন্ত) কেন্দ্রীয় বৃত্তি পেয়েছে। ৩০২ জন রূপান্তরকামী বৃত্তিপ্রাপক নিয়ে প্রথম স্থানে রয়েছে উত্তরপ্রদেশ। পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, গত শিক্ষাবর্ষের তুলনায় চলতি বছরে এই সংখ্যা বেড়েছে। গত শিক্ষাবর্ষে বাংলা থেকে ১৬৮ জন রূপান্তরকামী বৃত্তি পেয়েছিল।

শুধু গত বছর নয়, তার আগের শিক্ষাবর্ষের পরিসংখ্যানেও দেখা যাচ্ছে, বৃত্তিপ্রাপক রূপান্তরকামী পড়ুয়ার সংখ্যা বাড়ছে। ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষে রাজ্যে রূপান্তরকামী বৃত্তিপ্রাপকের সংখ্যা ছিল ৯১।

এই শিক্ষাবর্ষের পরিসংখ্যান অনুযায়ী পশ্চিমবঙ্গের পরেই অর্থাৎ তৃতীয় স্থানে রয়েছে মহারাষ্ট্র। সেখানে এই বৃত্তিপ্রাপকের সংখ্যা ১৫১। চতুর্থ ও পঞ্চম স্থানে রয়েছে যথাক্রমে পঞ্জাব ও কর্নাটক। পঞ্জাবে ১২৯ জন এবং কর্নাটকে ১২১ জন রূপান্তরকামী বৃত্তি পেয়েছে। কিন্তু বেশ কিছু রাজ্য আছে, যেখানে কোনও রূপান্তরকামী পড়ুয়াই এই বৃত্তি পায়নি।

স্কুলে রূপান্তরকামী পড়ুয়াদের পড়াশোনার ক্ষেত্রে নানা রকম বাধার সম্মুখীন হতে হয়। অনেক স্কুলে তাঁদের জন্য আলাদা শৌচালয় থাকে না। এ ছাড়াও নিত্যদিন বিভিন্ন ধরনের বাধা-বিড়ম্বনায় পড়তে হয় তাদের। একটি সমীক্ষার রিপোর্টে বলছে, এ দেশে রূপান্তরকামী সন্তানদের নিয়ে ৯৮ শতাংশ পরিবারই অস্বস্তিতে ভোগে। অনেক রূপান্তরকামীকে বাড়ি ছেড়ে চলেও যেতে হয়। এই পরিস্থিতিতে রূপাম্তরকামী বৃত্তিপ্রাপক পড়ুয়ার ক্রমবৃদ্ধিতে পশ্চিমবঙ্গে রূপান্তরকামীদের সার্বিক উন্নয়নেরই ছবি প্রকাশ পাচ্ছে বলে রাজ্যের সংখ্যালঘু উন্নয়ন দফতরের প্রতিমন্ত্রী গিয়াসুদ্দিন মোল্লার দাবি। তিনি বলেন, ‘‘রূপান্তরকামী পড়ুয়ারা সংখ্যালঘু পড়ুয়াদের মধ্যে পড়ে। রাজ্যে সার্বিক ভাবে সংখ্যালঘু পড়ুয়াদের পড়াশোনার মান উন্নত হয়েছে। এ রাজ্যে রূপান্তরকামী পড়ুয়াদের পড়াশোনার পরিবেশ অন্য অনেক রাজ্যের থেকে অনেক ভাল।’’

যদিও কেন্দ্রীয় সরকারের এই পরিসংখ্যান পুনরায় খতিয়ে দেখার প্রয়োজন আছে বলে মনে করছেন অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রান্সজেন্ডার হিজড়া ইন বেঙ্গলের সম্পাদিকা রঞ্জিতা সিংহ। তিনি বলেন, ‘‘শিক্ষা থেকে শুরু করে স্বাস্থ্য— এই রাজ্যে রূপান্তরকামীদের জন্য সব কিছুর পরিকাঠামোর অবস্থাই খুব খারাপ। স্কুলে রূপান্তরকামীদের পড়াশোনার পরিবেশই নেই। তাঁদের জন্য আলাদা শৌচালয় পর্যন্ত নেই। এমনকি রাজ্যে কত রূপান্তরকামী আছেন, নেই তার সম্পূর্ণ পরিসংখ্যানও। তাই কেন্দ্রের সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রক কিসের ভিত্তিতে এই পরিসংখ্যান প্রকাশ করল, তা খতিয়ে দেখার দরকার।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

LGBT Scholarship
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE