লকডাউনে শুনশান হাওড়া।—ছবি পিটিআই।
রাজ্যে চলতি সপ্তাহের একমাত্র সার্বিক লকডাউনেও পাশ করে গেল পুলিশ-প্রশাসন। তবে বুধবারও কলকাতা-সহ বেশির ভাগ জেলাতেই ধরপাকড় করতে হয়েছে পুলিশকে। ফলে লকডাউন মানা নিয়ে নাগরিকদের একাংশের মধ্যে যে এখনও গা-ছাড়া মনোভাব রয়েছে তা স্পষ্ট।
কলকাতা পুলিশ জানিয়েছে, এ দিন শহরে মোট ১০৫৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মাস্ক না-পরার জন্য ৪৯৭ জনের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। মালদহ ও পূর্ব মেদিনীপুরে পুলিশের হাত থেকে বাঁচতে তিন জন নিজেদের ‘জল পুলিশের আন্ডারে’ সঁপেছিলেন। তবে তাঁদের কোনও বিপদ হয়নি।
এ দিন সকাল থেকেই কলকাতার বড় রাস্তাগুলি জনশূন্য ছিল। বিকেলেও লেকটাউনে ভিআইপি রোডে পুলিশকে গার্ডরেল বসিয়ে গাড়ি তল্লাশি করতে দেখা গিয়েছে। তবে কোনও কোনও গলির ভিতরে অল্পস্বল্প জটলা ছিল। উত্তর ২৪ পরগনার বারাসত, কাঁকিনাড়ায় কিছু দোকান খুললেও পুলিশ সেগুলি বন্ধ করে দেয়। বসিরহাট, কাঁচরাপাড়ায় ভিড় আগের থেকে কমেছে।
এ দিন বেলা ১১টা নাগাদ মালদহের ইংরেজবাজারে কালিন্দী নদীর পাড়ে গল্পে মশগুল ছিলেন এক দল যুবক। পুলিশ ভ্যান দেখেই তাঁদের দু’জন সটান নদীতে ঝাঁপ দেন। পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দকুমার বাজারে একটি চায়ের দোকানে জড়ো হয়েছিলেন কয়েক জন। পুলিশ এসে দোকান বন্ধ করে দেয়। পুলিশের তাড়া খেয়ে এক জন পুকুরে নেমে যান।
হুগলির বৈদ্যবাটি চৌমাথায় দুই যুবককে ঘোরাঘুরি করতে দেখে পুলিশ পাকড়াও করে। পুলিশের নির্দেশে ডনবৈঠক দিয়ে ছাড় পেয়েছেন তাঁরা।
মুর্শিদাবাদে বহরমপুর থেকে ডোমকল, জঙ্গিপুর কিংবা বেলডাঙা দোকানপাট বন্ধ থাকলেও ইদের মুখে বিকেল থেকে লুকিয়ে-চুরিয়ে বিকিকিনির খবর মিলেছে। ইদের কেনাকাটা করতে এ দিন পুরুলিয়া জেলার ঝালদার হোসেনডি এলাকায় ভিড় নজরে এসেছে। মালদহ জেলায় লকডাউন ভাঙায় পুলিশ প্রায় ২০০ জনকে গ্রেফতার করেছে। বীরভূমে মোট গ্রেফতারের সংখ্যা ১৪৪।
শিলিগুড়িতে সকাল থেকে বিভিন্ন আনাজ বাজার খুললেও বেলার দিকে পুলিশ ধরপাকড় করেছে। বর্ধমান শহরেও কয়েকটি বাজারে মাছ, আনাজ নিয়ে বসেন কিছু ব্যবসায়ী। বেলা বাড়তে পুলিশ গিয়ে বাজার বন্ধ করে। হাওড়ায় পুরোদস্তুর লকডাউনের মধ্যে ব্যতিক্রম ছিল বাউড়িয়া। এখানে দু’টি চটকলই খোলা ছিল।
পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুকে সব বাজার-দোকান বন্ধ ছিল। তবে খোদ জেলাশাসকের অফিসের সামনে হলদিয়া-মেচেদা রাজ্য সড়কের পাশেই নির্মাণ কাজ চলছিল। পরে জেলাশাসকের নির্দেশে কাজ বন্ধ হয়। খড়্গপুর শহরের গোলবাজারে আনাজ ও মাছের দোকান বসলে পুলিশ গিয়ে উঠিয়ে দেয়। কাজে যাওয়ার পথে নদিয়ার কৃষ্ণনগর পুরসভার এক সাফাইকর্মীকে পুলিশ মেরেছে— এই অভিযোগে কৃষ্ণনগর বাসস্ট্যান্ডের কাছে বিক্ষোভ দেখান সাফাইকর্মীরা। পশ্চিম বর্ধমানে ১৯১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার মধ্যে ইচ্ছাকৃত ভাবে ‘লকডাউন’ অমান্য করার অভিযোগে গ্রেফতার ৩২ জন। সালানপুরে সীমানা এলাকায় লকডাউনেও বাড়তি টাকার বিনিময়ে দামোদরে খেয়া পারাপার চলছে বলেও অভিযোগ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy