Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
State News

জোড়াসাঁকোর ‘তীর্থে’ কাব্যময় শেখ হাসিনা

একাত্তরের উত্তাল দিনগুলোয় তাঁদের ঢাকার বাড়িতে রবীন্দ্রনাথের ছবিটির কথা ওঁর মনে পড়ছিল। হামলার সময়ে খানসেনারা কাজী নজরুলের ছবিটায় গুলি চালায়। কিন্তু রবি ঠাকুরের ছবিটা দেখে পিছিয়ে আসে! ‘‘বোধহয় ওঁর দাড়ি দেখে অন্য কিছু ভেবেছিল।’’— বলছিলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

অতিথি: জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়িতে শেখ হাসিনা। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক

অতিথি: জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়িতে শেখ হাসিনা। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ মে ২০১৮ ০৪:১৭
Share: Save:

জোড়াসাঁকোয় কবির প্রয়াণকক্ষে দাঁড়িয়েই অতীতে ফিরে গিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধুকন্যা!

একাত্তরের উত্তাল দিনগুলোয় তাঁদের ঢাকার বাড়িতে রবীন্দ্রনাথের ছবিটির কথা ওঁর মনে পড়ছিল। হামলার সময়ে খানসেনারা কাজী নজরুলের ছবিটায় গুলি চালায়। কিন্তু রবি ঠাকুরের ছবিটা দেখে পিছিয়ে আসে! ‘‘বোধহয় ওঁর দাড়ি দেখে অন্য কিছু ভেবেছিল।’’— বলছিলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়িতে এই প্রথম আসা। পরিকল্পনামাফিক বরাদ্দ ছিল আধ ঘণ্টা। কিন্তু শুক্রবার বিকেল পাঁচটা থেকে প্রায় একটি ঘণ্টা বিভোর হয়ে ছিলেন এই অতি বিশিষ্ট অতিথি! গাড়িতে ওঠার আগের মুহূর্তে লাল কার্পেটে দাঁড়িয়েও যেন রবীন্দ্রনাথময় তিনি। স্মৃতি থেকেই বললেন, ‘প্রথম দিনের সূর্য / প্রশ্ন করেছিল সত্তার নূতন আবির্ভাবে/ কে তুমি / মেলেনি উত্তর!’ কবির জন্মমৃত্যুর এই স্থানটির অভিজ্ঞতা কথায় ব্যাখ্যা করার অপারগতাটুকুই যেন বুঝিয়ে গেলেন মুজিবকন্যা। জোড়াসাঁকোর অতিথিদের খাতায় হাসিনার বিবৃতিতে মুক্তিযুদ্ধের বিপ্লবীদের উপরে রবীন্দ্র মননের ছাপের কথা লেখা হয়েছে। কিন্তু জীবন ও রাজনীতির নানা টানাপড়েনে অবিচল পোড়খাওয়া এক রাষ্ট্রনেতার বর্মহীন আবেগ দেখল জোড়াসাঁকো। মন্ত্রী ব্রাত্য বসু, ফিরহাদ হাকিমদের তিনি বললেন, এ তো তীর্থ করা হল।

বিশ্বভারতীর ভিজিটর্স বুকে শেখ হাসিনার লেখার অংশ।

ইদানীং এ দেশে দিল্লিতেই বেশি যান। কলকাতায় আসতেন ছোটবেলায় বাবার হাত ধরে। সেই কলকাতা কত পাল্টে গিয়েছে, মুগ্ধ স্বরে বলছিলেন হাসিনা। মহর্ষি ভবনের পারিবারিক খাওয়ার ঘর, রবীন্দ্র জন্মকক্ষ, কবির শেষ শল্য চিকিৎসার ঘর, চিন-জাপানের গ্যালারি, রবীন্দ্রনাথ-জগদীশ বসুকে নিয়ে প্রদর্শনী খুঁটিয়ে দেখতে দেখতে কবির নিজের ভাবনার ফসল ‘বিচিত্রা’র ভবনে ঢুকে হাসিনা ইচ্ছা প্রকাশ করেন, এ বাড়িতে বাংলাদেশের গ্যালারিটির দ্রুত রূপায়ণের। বাংলাদেশ সরকারের আগের উপহার, পদ্মার বোটের অনুকৃতিটিও হাসিনা দেখেন কিছু ক্ষণ। রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সব্যসাচী বসু রায়চৌধুরীর তখন অনুরোধ, যদি রবীন্দ্রস্মৃতি জড়িত পাতিসর, সাজাদপুর বা শিলাইদহ থেকে কিছু পাণ্ডুলিপি পাওয়া যায়।

একটি ঘণ্টায় দুই বাংলার সীমান্ত মিশে যেতে দেখল জোড়াসাঁকো।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE