Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

মার, আগুন, ছিনতাইয়ে শুরু পঞ্চায়েতের মনোনয়ন

হুগলির আরামবাগ, ধনেখালি, মুর্শিদাবাদের রঘুনাথগঞ্জ, বাঁকুড়ার কোতুলপুর, ইন্দাস, সোনামুখী, পাত্রসায়র, বর্ধমানের কেতুগ্রাম, মঙ্গলকোট, বীরভূমের রামপুরহাট, লাভপুরের মতো বিস্তীর্ণ এলাকায় সোমবার সকাল থেকেই মনোনয়নপত্র জমা দেওয়াকে ঘিরে তুলকালামের অভিযোগ এসেছে।

আহতের শুশ্রূষা।বিষ্ণুপুর ব্লক অফিস চত্বরে সোমবার। ছবি: শুভ্র মিত্র । মনোনয়ন তুলতে গিয়ে রোষের মুখে বিজেপি নেতা। সোমবার রামপুরহাটে। নিজস্ব চিত্র

আহতের শুশ্রূষা।বিষ্ণুপুর ব্লক অফিস চত্বরে সোমবার। ছবি: শুভ্র মিত্র । মনোনয়ন তুলতে গিয়ে রোষের মুখে বিজেপি নেতা। সোমবার রামপুরহাটে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০১৮ ০৩:৪৮
Share: Save:

তিন দফার পঞ্চায়েত ভোটের জন্য মনোনয়নপত্র জমা নেওয়া শুরু হতেই শুরু হয়ে গেল অশান্তি। প্রথম দিনেই মনোনয়ন জমা দেওয়াকে ঘিরে গোলমালের অভিযোগ এল দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে। অশান্তি হয়েছে উত্তরবঙ্গের কোচবিহার, উত্তর দিনাজপুরেও। প্রায় সব ক্ষেত্রেই কাঠগড়ায় শাসক দল।

হুগলির আরামবাগ, ধনেখালি, মুর্শিদাবাদের রঘুনাথগঞ্জ, বাঁকুড়ার কোতুলপুর, ইন্দাস, সোনামুখী, পাত্রসায়র, বর্ধমানের কেতুগ্রাম, মঙ্গলকোট, বীরভূমের রামপুরহাট, লাভপুরের মতো বিস্তীর্ণ এলাকায় সোমবার সকাল থেকেই মনোনয়নপত্র জমা দেওয়াকে ঘিরে তুলকালামের অভিযোগ এসেছে। শাসক দলের বাহিনীর হাতে বাম, কংগ্রেস এবং বিজেপি— সব বিরোধী দলের স্থানীয় নেতা-কর্মীদেরই আক্রান্ত হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে ভূরি ভূরি। কোথাও মারধরে আহত হয়েছেন বিরোধী দলের প্রতিনিধি, কোথাও ঘর জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। কোথাও মনোনয়নপত্র কেড়ে নিয়ে ছিঁড়ে ফেলার অভিযোগ আছে। বিষ্ণুপুর ও দিনহাটায় আবার তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষ বেধেছে!

কমিশনের যুগ্ম সচিব শান্তনু মুখোপাধ্যায় অবশ্য বলেছেন, ‘‘বিছিন্ন কিছু ঘটনার খবর এসেছে। কমিশনার সঙ্গে সঙ্গে হস্তক্ষেপ করেছেন। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক।’’

বিডিও দফতর ঘিরে যে ভাবে শাসক দলের দুর্বৃত্ত বাহিনী দাপিয়ে বেড়াচ্ছে, তাতে মনোনয়ন জমা দেওয়া প্রায় অসম্ভব বলে জানিয়ে মহকুমাশাসক ও জেলাশাসকের দফতরে বিকল্প ব্যবস্থা রাখার দাবি জানিয়েছে বিরোধীরা। প্রতিনিধিদল নিয়ে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী দ্বারস্থ হয়েছিলেন রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠীর। বামেদের তরফে রবীন দেব, প্রবীর দেবেরা গিয়েছিলেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনে। অধীরবাবুর দাবি, ‘‘রাজ্য পুলিশ থাকলে মানুষের ভোট দেওয়া তো দূরের কথা, বিরোধী দল মনোনয়নই দিতে পারবে না! বিরোধীশূন্য পঞ্চায়েত করার জন্য প্রহসন হচ্ছে!’’ বিজেপির সাংসদ সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়ার মন্তব্য, ‘‘বিরোধীদের জন্য প্রচারের সময় নেই, মনোনয়নে নিরাপত্তা নেই। যাদের অন্য ‘মেশিনারি’ আছে, তাদের তো প্রচার লাগে না!’’ তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের যদিও পাল্টা বক্তব্য, ‘‘কিছু না পেয়ে বিরোধীরা বাজে অভিযোগ করছে!’’

আরও পড়ুন: ‘উন্নয়ন’ দাঁড় করিয়ে পঞ্চায়েত দখল কেষ্টর

দিনভর লাগাতার অভিযোগের মুখে কমিশন জানিয়েছে, মনোনয়নপত্র জমা নেওয়ার জায়গায় জেলাশাসক, মহকুমাশাসক এবং কার্যনির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট চাইলে ১৪৪ ধারা জারি করতে পারেন। তবে কমিশনের আশ্বাসে বিশেষ ভরসা রাখছে না বিরোধীরা। রঘুনাথগঞ্জের কংগ্রেস বিধায়ক আখরুজ্জামান যেমন বলেছেন, ‘‘বিডিও এবং থানার আইসি মিলে ওখানে অন্যায়ে মদত দিয়েছেন। এ জিনিস চলতে থাকলে আমরাও লোকজন নিয়ে মনোনয়ন জমা দেওয়ার জায়গায় ঢুকে যাব!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE