Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

কিছুই রাখছে না! রাজভবনে অধীর, কমিশনে রবীনেরা

পঞ্চায়েতের জন্য মনোনয়ন তুলতে গিয়ে জেলায় জেলায় বিরোধীদের যে ভাবে বাধা দেওয়া হচ্ছে, তার প্রতিবাদ জানাতে সোমবার রাজভবন এবং রাজ্য নির্বাচন কমিশনে দরবার করেছেন কংগ্রেস ও বাম নেতারা।

অধীর চৌধুরী।

অধীর চৌধুরী।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০১৮ ০৩:৩৩
Share: Save:

পঞ্চায়েত নির্বাচন ঘিরে হিংসার ঘটনা এই প্রথম নয়। কিন্তু মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া জটিল করা থেকে শুরু করে প্রচারে কম সময়, সব মিলিয়ে অন্যদের কোনও সুযোগই না দেওয়ার চেষ্টা এই প্রথম বলে অভিযোগ করল বিরোধীরা। পঞ্চায়েতের জন্য মনোনয়ন তুলতে গিয়ে জেলায় জেলায় বিরোধীদের যে ভাবে বাধা দেওয়া হচ্ছে, তার প্রতিবাদ জানাতে সোমবার রাজভবন এবং রাজ্য নির্বাচন কমিশনে দরবার করেছেন কংগ্রেস ও বাম নেতারা। একই অভিযোগ বিজেপি সাংসদ সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়ারও।

জেলা এবং প্রদেশ নেতৃত্বের সঙ্গে এ দিন বিধান ভবনে আলোচনায় বসেছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। পরে তিনি যান রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠীর সঙ্গে দেখা করতে। অধীরবাবুর বক্তব্য, ‘‘পঞ্চায়েতে অশান্তি আগেও হতো। কিন্তু কিছু জায়গায় বিরোধীরা সাধ্যমতো লড়াই করতে পারতো। আমরা কিছু জেলা পরিষদও পেতাম। কিন্তু এখন মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করছেন, বিরোধীশূন্য পঞ্চায়েত চাই! মন্ত্রী বলছেন, পঞ্চায়েত দখল করতে পারলে পাঁচ কোটি টাকার কাজ দেব!’’ বিডিও-র দফতর ঘিরে শাসক দলের দুর্বৃত্ত বাহিনী বসে থাকায় মনোনয়ন জমা দেওয়া যাচ্ছে না বলে রাজ্যপালের কাছেও অভিযোগ জানিয়েছেন কংগ্রেস নেতারা। রাজভবন থেকে বেরিয়ে অধীরবাবুর বক্তব্য, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী তো বলছেন, তিনি নতুন বাংলার রূপকার! এত উন্নয়ন করে থাকলে বিরোধীদের ভোটে লড়তে দিতে ভয় কেন?’’

বিরোধীদের বক্তব্য, আগে একগুচ্ছ মনোনয়নপত্র নিয়ে এসে দলীয় দফতরে প্রার্থীদের নাম দিয়ে সে সব জমা দিতে পাঠানো হতো। কিন্তু এখন প্রার্থীর সশরীর হাজিরার নিয়ম হয়েছে। বিরোধীদের প্রশ্ন, পঞ্চায়েতে ৫০% আসন মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত। অশান্তির মধ্যে কোন মহিলা প্রার্থীকে তারা বিডিও দফতরে পাঠাবে? মহকুমাশাসক ও জেলাশাসকের দফতরে মনোনয়নের পাশাপাশি অনলাইনের দাবিও উঠেছে। তবে রাজ্যপাল এ দিন কংগ্রেস নেতাদের বলেছেন, এই বিষয়ে তিনি কমিশনের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। পঞ্চায়েত আইন সংশোধন না-করলে অনলাইনে মনোনয়ন চালু করা যাবে না। আর কমিশন জানিয়েছে, তাদের এবং জেলাশাসকদের ওয়েবসাইট থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করা যাবে।

আরও পড়ুন: বিশেষ দল গড়ে তদন্ত চাইছে কমিশন

অভিযোগ জানাতে গিয়ে এ দিনই রবীন দেবের নেতৃত্বে বাম প্রতিনিধিদলের সঙ্গে পুলিশের বচসা, ধাক্কাধাক্কি হয়েছে কমিশনের দফতরের সামনে। গোলমালের পরে ভিতরে ঢুকে রাজ্য নির্বাচন কমিশনার এ কে সিংহের হাতে গোলাপ তুলে দেন সিপিআই নেতা প্রবীর দেব! বিজেপি নেতা মুকুল রায়েরও অভিযোগ, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এমন ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠা করেছেন যে, ভোটে হারা-জেতা পর্যন্ত কেউ যেতেই পারবে না! মনোনয়নের সময়েই হাত-পা ভেঙে দেওয়া হবে, ঘর জ্বালিয়ে দেওয়া হবে!’’

তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় আবার বিরোধীদের কটাক্ষ করেছেন, ‘‘রাজ্যপাল তো বিজেপির প্রতিনিধি। এখন ওঁর কাছেই যাচ্ছেন। তা হলে কি ছুতমার্গ উঠে গেল?’’ যার জবাবে অধীরবাবু বলেছেন, ‘‘বিরোধীদের কথা আর কে শুনবে! রাজ্যপালের ভাগ্য ভাল যে, রাজভবন এখনও নীল-সাদা করে দেওয়া হয়নি!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE