মরণকূপ: কারখানার কুয়োর এই ভেতর পরিষ্কার করতে গিয়েই বেরিয়ে আসে গ্যাস। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়
কাগজ কারখানার গভীর কুয়ো থেকে একে একে উঠে এল দেহ। বিষাক্ত গ্যাসে প্রাণ গিয়েছে ৬ জনেরই। কারও বাড়ি ভিন্ রাজ্যে। কেউ স্থানীয় বাসিন্দা।
নৈহাটির হাজিনগরের ‘ইন্ডিয়ান পাল্প অ্যান্ড পেপার প্রাইভেট লিমিটেড’ কারখানায় বৃহস্পতিবার রাতে ঘটে দুর্ঘটনা। কর্তৃপক্ষের গাফিলতিকেই দুষছেন পরিজনেরা। থানায় লিখিত অভিযোগ করেন তাঁরা। পুলিশেরও অনুমান, কর্তৃপক্ষের তরফে কিছু গাফিলতি ছিল। নিরাপত্তা ছা়ড়াই ঝুঁকিপূর্ণ কাজে শ্রমিকদের পাঠানো হয়। কুয়োর ভিতরে কী ধরনের গ্যাসে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা গেলেন শ্রমিকেরা, তা দেখা হচ্ছে। গাফিলতির অভিযোগ মানতে চাননি কারখানার নিরাপত্তা আধিকারিক স্বপন সেন। ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে জানান তিনি। ভিন্ রাজ্যের শ্রমিকদের বাড়ির সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে বলে জানান ব্যারাকপুর কমিশনারেটের ডিসি জোন-১ কে কান্নান। পুলিশকে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কারখানার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টে (যে পথে জল ঢোকে বেরোয়) কিছু সমস্যা হচ্ছিল। কর্তৃপক্ষের নির্দেশে রাত ৮টা নাগাদ মিঠুন কুমার (৩২) ও উদয়রাজ সিংহ (৩০) পাইপ মেরামত করতে কিছু যন্ত্রপাতি নিয়ে গভীর কুয়োয় নামেন। উপরে দাঁড়িয়ে তখন বেশ কয়েক জন সহকর্মী। কাজ করতে গিয়ে বর্জ্যের পাইপ পেটে যায়। বিষাক্ত গ্যাস বেরোতে থাকে। উপরেও কটূ গন্ধ আসে। মিঠুন-উদয়দের চিৎকার শুনে কুয়োয় নেমে পড়েন মহম্মদ নাজিম (২৯)। তিনিও তলিয়ে যান। একে একে জলে নামেন অশোক বড়াল (৩২) ও অমিতকুমার যাদব (২৮)। তাঁরাও অসুস্থ হয়ে পড়েন। ঝুঁকে নীচের অবস্থা দেখছিলেন বিজয় বেম্বাসি (৩১)। টাল সামলাতে না পেরে পড়ে তলিয়ে যান। পুলিশ-দমকল-বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের কর্মীরা ৬ জনের দেহ উদ্ধার করেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy