Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী মেয়ে কেন এত মনমরা? মেয়ের চিঠিতে মা জানলেন...

মেয়েকে এক দিন একটি কাগজ লুকোতে দেখে তা কেড়ে নিয়ে পড়ার পরে চোখ কপালে ওঠে বাবা-মায়ের। ‘সুইসাইড নোট’ হিসেবে মেয়ের লেখা সেই কাগজ পড়ে তাঁরা জানতে পারেন, তার উপরে শারীরিক নির্যাতন চালিয়েছে চার তরুণ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কুলটি শেষ আপডেট: ৩০ মে ২০১৮ ০৪:৩৩
Share: Save:

দিন কয়েক পরে মাধ্যমিকের ফল বেরোবে। সে জন্যই হয়তো উৎকণ্ঠায় ভুগছে, মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী মেয়েকে মনমরা দেখে এমনই ভেবেছিলেন পরিজনেরা। কিন্তু, মেয়েকে এক দিন একটি কাগজ লুকোতে দেখে তা কেড়ে নিয়ে পড়ার পরে চোখ কপালে ওঠে বাবা-মায়ের। ‘সুইসাইড নোট’ হিসেবে মেয়ের লেখা সেই কাগজ পড়ে তাঁরা জানতে পারেন, তার উপরে শারীরিক নির্যাতন চালিয়েছে চার তরুণ।

পশ্চিম বর্ধমানের কুলটির বড়িরা গ্রামে অভিযুক্তদের মধ্যে তিন জনকে সোমবার রাতে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এক জন পলাতক। তাদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এবং ‘পকসো’য় মামলা রুজু হয়েছে। মঙ্গলবার আসানসোল আদালতে মেয়েটি গোপন জবানবন্দি দেয়। জেলা হাসপাতালে তার ডাক্তারি পরীক্ষা করানো হয়। দমদম থেকে পাঁশকুড়া, অশালীন ভিডিয়ো ছড়ানোর ভয় দেখিয়ে নির্যাতনের অভিযোগ সম্প্রতি বারবারই উঠেছে নানা এলাকায়। অনেক ক্ষেত্রে নির্যাতিতা এগিয়ে এসে অভিযোগ করায় ধরা পড়েছে অভিযুক্তেরা। আবার কিছু ক্ষেত্রে হুমকির জেরে নির্যাতিতার পরিবার প্রথম দিকে এগিয়ে না আসায় ঘটনার অনেক পরে পুলিশ সব জেনেছে।

কুলটির বছর পনেরোর ওই ছাত্রী এলাকার একটি স্কুল থেকে এ বার মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছে। পুলিশের কাছে তার বাবা অভিযোগ করেন, গত বুধবার দুপুরে বাড়ির কাছে পুকুরে স্নান করতে গিয়েছিল মেয়ে। ফেরার সময়ে পাশের পাড়ার মৃত্যুঞ্জয় বাউড়ি, প্রদীপ বাউড়ি, বিকাশ বাউড়ি ও দীপ বাউড়ি নামে চার যুবক তার রাস্তা আটকে জানায়, তারা স্নানের দৃশ্যের ভিডিয়ো তুলেছে। তা সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে পাশের ঝোপে টেনে নিয়ে গিয়ে মেয়েটিকে গণধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ।

আরও পড়ুন: জিটিএ ভোট এখনই নয়, বার্তা মমতার

বাবা-মা জানান, সে দিন বাড়ি ফিরে আসার পর থেকেই মেয়ে খুব চুপচাপ ছিল, কাউকে কিছু জানায়নি। তাঁদের দাবি, শনিবার বিকেলে বাড়িতে কারও না থাকার সুযোগে মেয়ে আত্মঘাতী হওয়ার পরিকল্পনা করে। তবে আচমকা তাঁরা বাড়ি ফিরে আসায় মেয়ে বেঁচে যায়। ‘সুইসাইড নোট’ও তাঁরা পান। মেয়েকে চেপে ধরতে সে সব জানিয়ে দেয়। সে রাতেই কুলটি থানায় অভিযোগ করেন বাবা-মা। সোমবার পুলিশ গ্রামে গেলে অভিযুক্তদের শাস্তির দাবি জানান বাসিন্দারা।

আসানসোল এবং দুর্গাপুর কমিশনারেটের এডিসিপি (পশ্চিম) অনমিত্র দাস জানান, সোমবার রাতে গ্রাম থেকেই ধরা হয় তিন অভিযুক্তকে। তবে দীপ পলাতক। অভিযুক্তদের বয়স ১৯-২১ বছরের মধ্যে। তারা পড়াশোনা বা কোনও কাজকর্ম করে না। মঙ্গলবার ধৃতদের তিন দিন পুলিশি হেফাজতে পাঠায় আসানসোল আদালত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE