Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

কেশরীকে যেতে মানা, অশান্তি থামাতে কেন্দ্রের সাহায্যতেও না মমতার

পার্থ চট্টোপাধ্যায় বুধবার বলেন, ‘‘রাজ্যপালকে আটকানো হয়েছে বলে আমার জানা নেই। উনি হয়তো যেতে চেয়েছিলেন। পরিস্থিতি আগে স্বাভাবিক হোক। শান্তি ফিরুক। তার পরে এ সব ভাবা যাবে।’’

বাঁ দিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (ফাইল চিত্র) এবং ডান দিকে শহরে এক অনুষ্ঠানে কেশরীনাথ ত্রিপাঠী। —নিজস্ব চিত্র।

বাঁ দিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (ফাইল চিত্র) এবং ডান দিকে শহরে এক অনুষ্ঠানে কেশরীনাথ ত্রিপাঠী। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা ও নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৯ মার্চ ২০১৮ ০৩:৩৭
Share: Save:

আসানসোল-রানিগঞ্জে চলতে থাকা অশান্তির জেরে তপ্ত হল কেন্দ্র-রাজ্য রাজনীতি। বুধবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক গোষ্ঠী সংঘর্ষের ঘটনা জানতে চেয়ে রাজ্যের কাছে রিপোর্ট তলব করে। সংঘর্ষ থামাতে নিজে থেকেই পাঠাতে চায় কেন্দ্রীয় বহিনী। রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠীও দুর্গাপুরে আহত পুলিশ কর্মীকে দেখতে যেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু কেন্দ্র বা রাজ্যপালের যাবতীয় প্রস্তাবে নবান্নের একটাই উত্তর ছিল, ‘‘না, এ সব প্রয়োজন নেই। রাজ্য একাই সব সামলে নেবে।’’

রাজ্য প্রশাসনের কর্তারা কেন্দ্রের সহযোগিতা নিয়েই পরিস্থিতি সামলানোর কথা ভেবেছিলেন। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী পত্রপাট তা নাকচ করে দেওয়ায় প্রশাসনিক কর্তারাও কেন্দ্রের বিরুদ্ধে পাঞ্জা-কষা অবস্থান নিতে বাধ্য হন। যদিও এ দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত গোলমাল থামেনি। কলকাতা থেকে তিনজন সিনিয়র আইপিএস অফিসারকে পাঠাতে হয়েছে আসানসোলে। বন্ধ করে দিতে হয়েছে ইন্টারনেট পরিষেবা। অপর্যাপ্ত নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে রাজ্যপালকে দুর্গাপুর যেতে দেওয়া না হলেও আজ, বৃহস্পতিবার তিনি ফের আহত পুলিশ কর্মীদের দেখতে যেতে পারেন বলে রাজভবন সূত্রের খবর।

যা শুনে তৃণমূলের মহাসচিব তথা রাজ্যের মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বুধবার বলেন, ‘‘রাজ্যপালকে আটকানো হয়েছে বলে আমার জানা নেই। উনি হয়তো যেতে চেয়েছিলেন। পরিস্থিতি আগে স্বাভাবিক হোক। শান্তি ফিরুক। তার পরে এ সব ভাবা যাবে।’’

কী সেই অশান্তি, তা জানতে চেয়েই নবান্নের কাছ থেকে রিপোর্ট চেয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব রাজীব গৌবা। সেই রিপোর্টও পাঠায়নি নবান্ন। গত বছর বসিরহাটে অশান্তি ঠেকাতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর সাহায্য চেয়েছিল মমতা প্রশাসন। দার্জিলিংয়ের সমস্যা মেটাতেও কেন্দ্রের তরফে পাঠানো হয়েছিল সেনা এবং আধাসেনা। এবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব তাই আগেই আধাসামরিক বাহিনীর পাঠানোর প্রস্তাব দিয়েছিলেন।

যদিও কেন্দ্রের এই প্রস্তাবও সটান ফিরিয়েছে রাজ্য। এ নিয়ে পার্থবাবুর জবাব, ‘‘কেন্দ্রের সাহায্যের দরকার নেই। এর চেয়ে কঠিন পরিস্থিতি নিজেদের ক্ষমতায় রাজ্য সরকার সামলেছে।’’ আর রাজ্যসভায় দলের নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েনের কথায়, ‘‘বিহারেও আগুন জ্বলছে। গোষ্ঠী সংঘর্ষ হচ্ছে। কিন্তু বিহারে শরিক দলের সরকার থাকায় চোখ বন্ধ মোদী সরকারের।’’ পাল্টা জবাবে বিজেপি নেতা প্রকাশ জাভড়েকর বলেন, ‘‘বিহারে ঘটনার পরেই অভিযোগ দায়ের করে দোষীদের গ্রেফতার করা হয়েছে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে প্রশাসন ঘুমিয়ে রয়েছে। তাই পদক্ষেপ করতে বাধ্য হয়েছে কেন্দ্র।’’

আরও পড়ুন: উত্তপ্ত আসানসোলে আবার আহত পুলিশ

যদিও সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রও এ দিন দাবি করেছেন, ‘‘আসানসোল-সহ উত্তেজনাপ্রবণ এলাকায় আধা-সামরিক বাহিনী মোতায়েন করা হোক। দরকারে সেনাবাহিনীর সাহায্য নিক রাজ্য সরকার।’’ কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়ের যুক্তি,‘‘রাজ্য যখন জ্বলছে তখনও রাজনীতি করতে ছাড়ছেন না মুখ্যমন্ত্রী। এটা তো বেস্ট বেঙ্গল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE