Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

ক্ষতিপূরণ নয়, দোষীদের শাস্তি চাই, বললেন হাফিজুলের স্ত্রী

যখন এই মিছিল হচ্ছে তখন বাড়িতে সবার সঙ্গে বসে আনাজ কাটছিলেন সাবিরা। বললেন, ‘‘ক্ষতিপূরণ দিয়ে কী হবে? কত টাকাই বা ক্ষতিপূরণ দেবে ওরা। আমার স্বামীকে যারা মেরেছে তাদের কঠোর সাজা চাই। তা হলেই ওঁর আত্মার শান্তি হবে। ওঁর খুনিরা এখনও প্রকাশ্যেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পুলিশ ধরছে না।’’

ব্যস্ত: বাড়ির সবার সঙ্গে সাবিরা। নিজস্ব চিত্র

ব্যস্ত: বাড়ির সবার সঙ্গে সাবিরা। নিজস্ব চিত্র

সামসুল হুদা
ভাঙড় শেষ আপডেট: ২১ মে ২০১৮ ০২:৪৭
Share: Save:

ক্ষতিপূরণ চান না। দোষীদের কঠোর সাজা চান ভাঙড়ের নিহত হাফিজুল মোল্লার স্ত্রী সাবিরা বিবি।

১১মে শাসকদলের ছোড়়া গুলিতে প্রাণ গিয়েছিল নির্দল প্রার্থী হাফিজুল মোল্লার। হাফিজুলের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ, তাঁর খুনিদের শাস্তি এবং জমি আন্দোলনকারী ৮ সদস্যকে নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে ভাঙড়ের মাছিভাঙায় রবিবার সকালে মিছিল করল জমি রক্ষা কমিটি।

তা ছাড়া নির্দল প্রার্থীদের জয়ের জন্যও এই মিছিল করা হয়েছে বলে জানায় জমি রক্ষা কমিটি।

যখন এই মিছিল হচ্ছে তখন বাড়িতে সবার সঙ্গে বসে আনাজ কাটছিলেন সাবিরা। বললেন, ‘‘ক্ষতিপূরণ দিয়ে কী হবে? কত টাকাই বা ক্ষতিপূরণ দেবে ওরা। আমার স্বামীকে যারা মেরেছে তাদের কঠোর সাজা চাই। তা হলেই ওঁর আত্মার শান্তি হবে। ওঁর খুনিরা এখনও প্রকাশ্যেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পুলিশ ধরছে না।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘এক-দু লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দিয়ে কী হবে আমার। হাফিজুর বেঁচে থাকলে অনেক বেশি টাকা উপার্জন করতে পারতেন। টাকা তো আর আমার স্বামীকে ফিরিয়ে দিতে পারবে না।’’

এ দিনের মিছিলে সাবিরা যাননি। মিছিলে হেঁটেছেন হাফিজুলের দাদা আজিজুল মোল্লা। সাবিরা বলেন, ‘‘আমার শরীর ভাল নেই। তা ছাড়া স্বামী মারা গিয়েছেন দশ দিনও হয়নি। কিছু নিয়মকানুন আছে।’’

সকালে নতুনহাট বাজার থেকে মিদ্দে পাড়া, বকুলতলা হয়ে মিছিল নতুনহাটেই শেষ হয়। মিছিলে ছিলেন জমি রক্ষা কমিটির মূল মাথা তথা নকশাল নেতা অলীক চক্রবর্তী, আইনজীবী ভারতী মৎসুদ্দি, পিডিএস নেতৃত্ব অনুরাধা পততুন্ডু ও সমীর পততুন্ডু-সহ অন্যরা।

আজিজুল মোল্লা বলেন, ‘‘আমার ভাইয়ের খুনিদের গ্রেফতারের দাবিতে আমি এই মিছিলে এসেছি। আমার ভাইয়ের খুনিরা এখনও নানা ভাবে হুমকি দিচ্ছে। জমি রক্ষা কমিটি আমার ভাইয়ের খুনিদের গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছে।’’

অলীক বলেন, ‘‘আমরা চাই হাফিজুলের খুনিদের অবিলম্বে গ্রেফতার করা হোক। তাঁর পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। আমাদের কমিটির ৮ জন সদস্যকে মুক্তি দিতে হবে। এর দাবিতেই এই মিছিল। এই দাবি পূরণ না হলে আমরা পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করব।’’

জমি রক্ষা কমিটির সদস্য মির্জা হাসান বলেন, ‘‘আমরা শুধু হাফিজুল নয়, আলমগির ও মফিজুলের মৃত্যুর ক্ষতিপূরণও চাই। ১৭ জানুয়ারি ২০১৬ জমি আন্দোলন করতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছিল ওঁরা। রাজ্য সরকার তো মদ খেয়ে মরলেও ২ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়। এ ক্ষেত্রেও দিতে হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE