কওসর আলি ঢালি। —নিজস্ব চিত্র।
নিউ টাউনে মরা ও পচা মুরগির মাংস-কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত কওসর আলি ঢালিকে গ্রেফতার করল পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার ভোরে কওসরকে উত্তর ২৪ পরগনার হাসনাবাদ থেকে গ্রেফতার করা হয়। মাসখানেক পর পুলিশের জালে ধরা পড়ল কওসর। এই নিয়ে এই মামলায় কওসর-সহ ছ’জনকে গ্রেফতার করা হল।
নিউ টাউনে নিজের খামারবাড়ি থেকেই শহর ও শহরতলিতে মরা ও পচা মুরগির মাংস সরবরাহ করত কওসর। গত এপ্রিলে পুলিশের নজরে পড়ার পর থেকেই থেকেই ই বেপাত্তা হয় সে। এ দিন গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, খাদ্য সুরক্ষা আইন ২০০৬-এর আওতায় কওসরের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছে। এ দিন তাকে আদালতে তোলা হবে।
কওসরের খোঁজে এ দিন ভোরে হাসনাবাদে যৌথ অভিযান করে এয়ারপোর্ট ও বিধাননগর থানার পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ। সূত্র মারফত খবর পেয়ে হাসনাবাদের শাকচূড়া এলাকায় চিরুনি তল্লাশি চালানো হয়। সেখান থেকেই কওসরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, মোবাইল টাওয়ার লোকেশনের সূত্র ধরে কওসরের ডেরার হদিশ মিলেছে।
আরও পড়ুন
পুরসভার সাফাইকর্মী থেকে হয়ে গেল ভাড়াটে খুনি!
পুলিশ সূত্রে খবর, বাংলাদেশ পালানোর ছক কষেছিল কওসর। পচা মাংস কাণ্ডে কওসরের নাম সামনে আসতেই গা-ঢাকা দিয়েছিল সে। পুলিশের দাবি, সীমান্তবর্তী একাধিক জায়গায় গা-ঢাকা দিয়েছিল কওসর। পুলিশকে ধোঁকা দিতে হাসনাবাদ ও বসিরহাট এলাকায় বিভিন্ন জায়গা পাল্টে পাল্টে গা ঢাকা দিয়ে থাকত সে।
আরও পড়ুন
এত পটল তুলবে কে? চিন্তায় শুল্ক অফিসারেরা
এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে নিউ টাউনের সিটি সেন্টার-২–এর পিছনে কওসরের খামারেও হানা দিয়েছিল পুলিশ। সেখানে ৬ কাঠা জমি জুড়ে রয়েছে তার খামারবাড়ি। ওই অভিযানে সেখান থেকে প্রচুর পরিমাণ মরা মুরগি পাওয়া যায়। খামারে মুরগি মরলে তা ফেলে দেওয়া হত না। বরং ৯টি বড় বড় ফ্রিজারে সেই মরা মুরগি রেখে দেওয়া হত। এর পর সেই মরা এবং পচা মুরগির মাংসই বিভিন্ন নামি বিপণিতে সরবরাহ করত কওসর।
খামারে তল্লাশি চালিয়ে পুলিশ একটি রেজিস্টার খাতাও পেয়েছিল। এবং সেখান থেকেই জানা যায়, কলকাতা শহর এবংর শহরতলির একাধিক নামি বিপণি ছিল কওসরের ‘ঢালি চিকেন সেন্টারে’র ক্রেতার তালিকায়। প্রথম তল্লাশির দিন থেকেই বেপাত্তা ছিল কওসর। মূল বাড়ি বসিরহাট এলাকাতে হলেও কলকাতায় দক্ষিণদাঁড়িতে একটি ভাড়াবাড়িতে থাকত সে। এর আগে সেখানেও তল্লাশি চালিয়েছিল পুলিশ। সেখান থেকে কিছু নথিপত্রও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল।
মূলত চাষি পরিবারের ছেলে কওসর। কিন্তু, গত কয়েক বছর মুরগির ব্যবসা করে রীতিমতো ফুলেফেঁপে ওঠে সে। খামারের কর্মী হিসেবে নিজের বাড়ির এলাকার যুবকদেরও নিয়োগ করত সে। যাতে মরা মুরগির এই ব্যবসার কথা বাইরের কেউ জানতে না পারেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy