তখনও বেঁচে। সাপ জড়িয়েই হাসপাতালে অনিল রায়।
বাড়ির গা লাগোয়া দোকান। তার মধ্যে সাপ ঢুকে গিয়েছে শুনে বাড়ির লোক তো বাইরে চলেই এসেছেন, প্রতিবেশীরাও ভিড় করে আছেন। যেটুকু দেখা গিয়েছে, তাতে বোঝা যাচ্ছে জাত গোখরো। তাই কেউই সাপ ধরতে ঢুকতে চাইছেন না। আচমকা এক যুবক এসে হাজির। নেশায় টলমল করছেন। কিন্তু দাবি করলেন, সাপ ধরতে সিদ্ধহস্ত। কেউ আর না বলেননি। সেই যুবক ঘরেও ঢুকে পড়লেন। কিছুক্ষণ বাদে সাপটি নিয়ে বেরিয়েও এলেন।
সবাই যখন স্বস্তিতে হাসছেন, সাপটি দিল এক ছোবল বসিয়ে। অনিল রায় (৩৫) নামে ওই যুবক তাতেও নির্বিকার। কোচবিহারের হলদিবাড়ির বটের ডাঙা গ্রামের লোকজন এ বার আর অনিলবাবুর কথা শোনেননি। তাঁকে জোর করে জলপাইগুড়ি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সাপটিকে গলায় পেঁচিয়ে অনিল হাসপাতালে ঢোকেন। সেখানে সবাই সেই দৃশ্য দেখে আঁতকে উঠলেও, সাপ ছাড়তে চাননি অনিল। হইচই পড়ে যায় হাসপাতালে। শেষ পর্যন্ত অনেক অনুরোধে যখন গোখরোটিকে রেহাই দেন, তত ক্ষণে নিজেও কাহিল হয়ে পড়েছেন। চিকিৎসা শুরু হয়েছিল। কিন্তু অনিলকে বাঁচানো যায়নি।
অনিলের বাড়ি হলদিবাড়ির বসরাজবালা গ্রামের কাকপাড়ায়। তাঁর স্ত্রী খবর শুনে বারবার জ্ঞান হারাচ্ছেন। তাঁদের দুই মেয়ে এবং এক ছেলে। বড় মেয়ে সরলা পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী পড়ে। ছোট মেয়ে দীপালি দ্বিতীয় শ্রেণীতে। ছেলে অমিত দুধের শিশু। অনিল কাঠ কাটার কাজ করতেন। কিন্তু তাঁর প্রতিবেশীদের দাবি, অনিল নিয়মিত মদ খেতেন। কোনওদিন সাপ ধরেননি। বৃহস্পতিবার সন্ধেয় যখন শোনেন, কাছেই একটি গ্রামের ঘরে সাপ ঢুকেছে, মদের ঘোরেই সেই সাপ ধরতে চলে যান। সাপটিকে ধরে তার গায়ে মোবাইল দিয়ে মারতে সেটি তাকে ছোবল দেয় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন। তাঁদের বক্তব্য, ওস্তাদ সাপুড়েরা অনেক সময় নেশা করেন। তাই অনিল নেশাগ্রস্ত থাকলেও তাঁরা তাঁকে বাধা দেননি। অনিল যে সাপ ধরতে জানতেন না, সে কথাও তাঁরা বুঝতে পারেননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy