প্রতীকী ছবি।
কর্মসংস্থানের তাগিদে শিল্পের সঙ্গে শিক্ষার সমন্বয় জোরদার করা যে দরকার, শিক্ষা ও শিল্প দুই শিবিরই সেই বিষয়ে একমত। এই অবস্থায় রাজ্যের বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজগুলিতে ২০১৮-’১৯ শিক্ষাবর্ষ থেকেই বৃত্তিমূলক পাঠ্যক্রম চালু করতে উদ্যোগী হয়েছে মৌলানা আবুল কালাম আজাদ ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি (ম্যাকাউট)। এই বিষয়ে একটি কমিটিও গড়া হয়েছে।
প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, বৃত্তিশিক্ষার এই পাঠ্যক্রম (বি ভোক) হবে তিন বছরের। দ্বাদশ শ্রেণি উত্তীর্ণ পড়ুয়ারা এই সব কোর্সে ভর্তির সুযোগ পাবেন। বি টেক কোর্সে ভর্তি হতে গেলে এ রাজ্যে জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষায় বসতে হয়। বৃত্তিমূলক পাঠ্যক্রমে ভর্তির ক্ষেত্রে বাছাইয়ের পদ্ধতি কী হবে, রাজ্য সরকারের কাছে তা জানতে চাওয়া হয়েছে।
যে-সব ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ বৃত্তিমূলক পাঠ্যক্রম চালু করতে আগ্রহী, সম্প্রতি অল ইন্ডিয়া কাউন্সিল ফর টেকনিক্যাল এডুকেশন (এআইসিটিই) তাদের সম্মতি দিতে শুরু করেছে। ম্যাকাউটের উপাচার্য সৈকত মৈত্র জানান, অনেক কলেজ সরাসরি তাঁদের কাছে এই বিষয়ে আগে আবেদন জানিয়েছে।
ওই সব কলেজে বৃত্তিমূলক পাঠ্যক্রম পড়ানোর মতো পরিস্থিতি আদৌ রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে তাঁরা একটি কমিটি গঠন করেছেন। কোন কলেজে কোন কোন বিষয়ের পঠনপাঠন চালু করা যেতে পারে, তার পরিকাঠামো কতটা কী আছে, সেখানকার পাঠ্যক্রম সম্পূর্ণ করে পড়ুয়ার চাকরি পাওয়ার সম্ভাবনা কতটা, শিল্প ক্ষেত্রের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কলেজের যোগাযোগ— এই সব বিষয় খতিয়ে দেখবে ওই কমিটি।
আগ্রহী কলেজগুলিকে ডেকে প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এখন তাদের সম্পর্কে সবিস্তার তথ্য জেনে নিচ্ছেন। উপাচার্যের বক্তব্য, বিভিন্ন রাজ্যে বিভিন্ন ধরনের শিল্প রয়েছে। তাই রাজ্য-ভেদে বৃত্তিশিক্ষার পাঠও হবে আলাদা। ‘‘অন্য রাজ্যে যে-সব বিষয়ের চাহিদা বেশি, আমাদের রাজ্যে সেগুলোর কদর থাকবে, এমনটা না-ও হতে পারে। তাই কোন কোন বিষয় পড়ানো হবে, সেই বিষয়ে সবিস্তার আলোচনা চলছে,’’ বলেন সৈকতবাবু। তাঁর ব্যাখ্যা, এ রাজ্যে তথ্যপ্রযুক্তি, নির্মাণ, পর্যটন প্রভৃতি ক্ষেত্রে কুশলী কর্মীর খুব দরকার। তাই এই ধরনের বিষয় পড়লে ছাত্রছাত্রীদের চাকরি পাওয়ার সম্ভাবনাও বেশি। যে-সব কলেজকে যোগ্য বলে মনে হবে, ২০১৮-’১৯ শিক্ষাবর্ষেই তাদের বি ভোক পাঠ্যক্রম চালু করার সম্মতি দেওয়া হবে।
অনেক বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ বি টেক কোর্সে পড়ুয়া পাচ্ছে না। এই অবস্থায় বৃত্তিমূলক পঠনপাঠন চালু করলে পড়ুয়া পাওয়ার সম্ভাবনা বাড়বে বলে মনে করেন জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ডের প্রাক্তন চেয়ারম্যান এবং যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন সহ-উপাচার্য সিদ্ধার্থ দত্ত। একই সঙ্গে তিনি জানাচ্ছেন, বি ভোক পড়লে পড়ুয়াদের চাকরি পাওয়ার সম্ভাবনা হয়তো বাড়বে। কিন্তু এ রাজ্যে তো উৎপাদন শিল্পের আকাল। তাই চাকরি কতটা হবে, সেই প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy