সাড়ে তিন মাসের অচলাবস্থা কাটিয়ে পাহাড় স্বাভাবিক হয়েছে গত বছর পুজোর মুখে। আপাতত নেই আলাদা রাজ্য গঠনের দাবিতে কোনও জোরালো আন্দোলনও। বাজার-হাট, সরকারি কাজকর্ম, পর্যটন সবই স্বাভাবিক দার্জিলিংয়ে। এর মধ্যেই গোর্খা জাতিসত্তার ১১১ বছরের ইতিহাস ও দাবিদাওয়া নিয়ে ফের পাহাড়ে সরব হচ্ছে একটি সংগঠন। ন্যাশনাল গোর্খাল্যান্ড কমিটি (এনজিসি) নামে গোর্খা বিশিষ্টজনেদের ওই মঞ্চ আগামিকাল, শনিবার দার্জিলিংয়ে গোর্খাল্যান্ড বিষয়ক ‘ভিশন ডকুমেন্ট’ প্রকাশের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেখানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে পাহাড়ের সমস্ত রাজনৈতিক দল, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে। কলকাতায় যখন পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে ডামাডোল চলছে, তখন পাহাড়ে নতুন করে গোর্খাল্যান্ডের দাবি খুঁচিয়ে তোলার পিছনে বড় ধরনের রাজনৈতিক চাল দেখছেন অনেকে। যদিও এনজিসি-র দাবি, তাঁদের এই পদক্ষেপ একান্ত ভাবেই অরাজনৈতিক।
সূত্রের খবর, এনজিসি-র মাথায় রয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত সেনা অফিসার শক্তি গুরুং। তিনিই দেশের প্রথম গোর্খা সেনা অফিসার, যিনি অসম-অরুণাচল প্রদেশে চার নম্বর কোরের প্রধান হিসাবে কাজ করেছেন। এ ছাড়াও অন্ধ্রপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যসচিব ত্রিলোক দেওয়ান ও দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মুনীশ তামাং রয়েছেন সংগঠনের সামনের সারিতে। দার্জিলিংয়ে এঁরাই নতুন করে গোর্খাল্যান্ডের ইতিহাস তুলে ধরবেন বলে ঠিক করেছেন।
কেন হঠাৎ এমন পদক্ষেপ?
রাজ্যের পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেবের মতে, ‘‘এর পিছনে বড় ধরনের রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র রয়েছে। ১০৫ দিনের বন্ধের পরে অনেক কষ্টে পাহাড় আবার হাসছে। এখানে নতুন করে গোলমাল ছড়়াতে এলে প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক ভাবে তা প্রতিহত করা হবে।’’
যদিও এনজিসি-র সহ-সভাপতি ত্রিলোক দেওয়ান বলেছেন, ‘‘আমরা অরাজনৈতিক সংগঠন। কোনও রাজনীতি বা আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত থাকতে চাই না। তবে গোর্খাল্যান্ড আন্দোলনের পথ নির্দেশক হিসাবে আমরা কাজ করব। ভিশন ডকুমেন্টে দেখানো হবে ১৯০৭ সাল থেকে গোর্খারা পৃথক রাজ্যের জন্য লড়ছেন। সেই অনুষ্ঠানে রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা এলে স্বাগত।’’
প্রশাসনিক কর্তাদের একাংশ যদিও এত সহজে বিষয়টিকে দেখছেন না। তাঁদের একাংশের প্রশ্ন, বিমল গুরুং দার্জিলিংয়ে ঢুকতে পারছেন না। বিনয় তামাংরা ভালই চালাচ্ছেন জিটিএ। আপাতত সব কিছু স্বাভাবিক। তা হলে কেন গোর্খাল্যান্ড প্রসঙ্গ ফিরে আসছে? এ প্রসঙ্গে পর্যটনমন্ত্রীর দাবি, ‘‘বিজেপি নোংরা খেলা খেলতে নেমেছে। জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন যে ভাবে রাজ্যকে আক্রমণ করে গেলেন, তা কোনও সাংবিধানিক পদাধিকারী করতে পারেন না। বিজেপির স্বার্থরক্ষার জন্যই এ সব হচ্ছে।’’
বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ অবশ্য দলের যোগ থাকার কথা অস্বীকার করেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘সবেতেই এখন বিজেপির ভূত দেখছে তৃণমূল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy