Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

তৃণমূলের কাজিয়ায় নিহত ১

সোমবার গভীর রাতে মালদহের কালিয়াচকে তৃণমূলের সেই বুথস্তরের আলোচনাসভা থেকে শেষ অবধি গুলি চালানো হয় বলে অভিযোগ। তখন বাড়ি ফিরছিলেন এলাকার বাসিন্দা মিজারুল রহমান (২৫)। গুলি এসে লাগে তাঁর মাথায়।

মিজারুল রহমান

মিজারুল রহমান

নিজস্ব সংবাদদাতা
মালদহ শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০১৮ ০৩:১৬
Share: Save:

এক একটি গ্রাম পঞ্চায়েতের পদে প্রার্থী হওয়ার দাবিদার প্রচুর। ফলে আলোচনাসভা দ্রুতই বদলে গিয়েছে ঝগড়া এবং মারামারিতে। সোমবার গভীর রাতে মালদহের কালিয়াচকে তৃণমূলের সেই বুথস্তরের আলোচনাসভা থেকে শেষ অবধি গুলি চালানো হয় বলে অভিযোগ। তখন বাড়ি ফিরছিলেন এলাকার বাসিন্দা মিজারুল রহমান (২৫)। গুলি এসে লাগে তাঁর মাথায়। কিছু ক্ষণের মধ্যে মৃত্যু হয় প্যান্ডেলকর্মী মিজারুলের।

গুলির শব্দে দরজায় খিল এঁটেছিলেন এলাকার মানুষ। মঙ্গলবার তাঁদেরই কেউ কেউ বলেন, ভোট এলে এক তৃণমূলের সঙ্গে অন্য তৃণমূলের মারামারি এখন জলভাত। তাঁরা আশঙ্কায় রয়েছেন, এর পরে এমন ঘটনা যে আরও ঘটবে না, তা কে বলতে পারে!

জাল নোট, আফিম, বেআইনি অস্ত্রের কারবারে শিরোনামে থাকা কালিয়াচকে রাজনৈতিক ক্ষমতা দখলের লড়াই বরাবরই রক্তক্ষয়ী। তৃণমূলের স্থানীয় নেতারাও মেনে নেন, এখানে দলের একাধিক গোষ্ঠী সক্রিয় এবং শক্তিশালী। সোমবার পঞ্চায়েতের প্রার্থী বাছাইয়ের জন্য কালিয়াচক থানার জোলাকান্দি গ্রামে বুথস্তরের কর্মীদের ডেকে যে আলোচনাসভা বসেছিল, তাতেও একাধিক দুষ্কৃতী এসেছিল বলে অভিযোগ।

আরও পড়ুন:
মনোনয়নে অস্ত্রের খোঁচা, জখম বিজেপি নেতা
প্রতিরোধ জোট বেঁধে, সঙ্কেত বিরোধী ঘরে

স্থানীয় সূত্রে অভিযোগ, আলোচনা থেকে ঝগড়া রাস্তায় নেমে এলে বৈঠকে হাজির মাসিবর শেখ এলোপাথাড়ি তিন-চার রাউন্ড গুলি চালায়। তার সঙ্গে আরও দুই যুবক ছিল। তখন বাড়ি ফিরছিলেন মিজারুল। গুলি তাঁর মাথায় লাগে। বেগতিক দেখে মাসিবর পালায়। স্থানীয় কয়েক জন তখন মিজারুলকে নিয়ে যান মালদহ মেডিক্যালে। তবে তাঁর অবস্থা দেখে রাতেই তাঁকে কলকাতায় নিয়ে যেতে বলেন চিকিৎসকেরা। রাস্তাতেই মৃত্যু হয় মিজারুলের।

তৃণমূল জেলা সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন অবশ্য গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথা অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘প্রার্থী বাছাই নিয়ে ওই গ্রামে বৈঠক হয়েছে ঠিকই। তবে শান্তিপূর্ণ ভাবে তা শেষ হয়। পরে গ্রামেরই কিছু দুষ্কৃতী মদ্যপ অবস্থায় গুলি চালিয়েছে। এর সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক নেই।’’ তবে ঘটনায় যে নিরীহ এক গ্রামবাসীর মৃত্যু হয়েছে, তা তিনি মেনে নিয়েছেন। যদিও মিজারুলের বাবা মহম্মদ আব্দুল হায়াতের দাবি, ‘‘তৃণমূলের বৈঠকে নিজেদের মধ্যে গোলমালের জেরেই গুলি চালায় মাসিবর। তাতেই আমার ছেলের মৃত্যু হয়েছে।’’

জেলা পুলিশ সুপার অর্ণব ঘোষ বলেন, “প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে, মদ্যপ অবস্থায় গোলমালের জেরে ঘটনাটি ঘটেছে। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে, সুকতারুল আলম নামে এক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মূল অভিযুক্ত এখনও অধরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Death Turmoil TMC Panchayat Election 2018
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE