Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

বেতন নিয়ে পার্থের উল্টো সুরে বিস্ময়

রাজ্যের অর্থ ও উচ্চশিক্ষা দফতরের প্রতিনিধিরা ২২ মে রাজ্যের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক করেন। সেখানে জানানো হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমে আর বেতন নয়। ট্রেজারি থেকে সরাসরি বেতন পৌঁছে যাবে শিক্ষক-কর্মী-অফিসারদের হাতে।

পার্থ চট্টোপাধ্যায়।

পার্থ চট্টোপাধ্যায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৯ মে ২০১৮ ০৩:২৪
Share: Save:

রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির কর্মীদের বেতন ট্রেজারি থেকে সরাসরি তাঁদের দেওয়ার ব্যাপারে কোনও চিন্তাভাবনা নেই বলে জানালেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তিনি সোমবার বলেন, ‘‘এই ধরনের কোনও প্রস্তাব আছে বলে আমার জানা নেই।’’

স্বভাবতই বিষয়টি নিয়ে বিস্ময়ের সৃষ্টি হয়েছে। কারণ রাজ্যের অর্থ ও উচ্চশিক্ষা দফতরের প্রতিনিধিরা ২২ মে রাজ্যের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক করেন। সেখানে জানানো হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমে আর বেতন নয়। ট্রেজারি থেকে সরাসরি বেতন পৌঁছে যাবে শিক্ষক-কর্মী-অফিসারদের হাতে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলির যাবতীয় খরচ নিয়ন্ত্রণ করা হবে ট্রেজারি থেকে।

তার পরেই বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মীরা ক্ষোভ প্রকাশ করতে থাকেন। প্রশ্ন ওঠে, তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মী হয়ে সরকারি কোষাগার থেকে বেতন নেবেন কেন? এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক স্বাধিকার ক্ষুণ্ণ হবে বলে মনে করেন তাঁরা। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি (জুটা) ইতিমধ্যেই কর্তৃপক্ষের কাছে এর প্রতিবাদ জানিয়েছে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মী-অফিসারদের যৌথ মঞ্চ এ দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের বৈঠকে স্মারকলিপি দেয়।

আরও পড়ুন: মিশ্র পাঠের কাঁটা সেই শিক্ষক-সঙ্কট

এ দিনই বাম নেতৃত্বাধীন কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ওয়েবকুটা-র প্রতিনিধিরা শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে ট্রেজারির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মীদের বেতনের দেওয়ার বিরোধিতা করেন। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক শ্রুতিনাথ প্রহরাজ জানান, শিক্ষামন্ত্রী তাঁদের বলেছেন বিষয়টির ভুল ব্যাখ্যা হচ্ছে। বেতন যে-ভাবে হয়, সেই ভাবেই হবে। ‘‘শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মীরা সরকারি কর্মচারী নন। তাই তাঁদের বেতন বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই হবে,’’ বলেন শ্রুতিনাথবাবু। তিনি জানান, তাঁরা শিক্ষামন্ত্রীকে বলেছেন, যদি বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে আর্থিক অনিয়ম হয়, সরকার সে দিকে নজরদারি বাড়াক। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আর্থিক স্বাধিকার যেন ক্ষুণ্ণ না-হয়।

পার্থবাবু ট্রেজারি থেকে সরাসরি বেতন নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি বেমালুম অস্বীকার করায় ২২ মে-র বৈঠকে উপস্থিত বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিনান্স অফিসারেরা হতবাক। এমনই এক অর্থ অফিসার এ দিন জানান, সে-দিন তাঁদের বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছিল, বেতন ট্রেজারি থেকে সরাসরি যাবে কর্মীদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য খরচের হিসেব দেওয়ার পরে ট্রেজারি থেকে টাকা যাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টে। শিক্ষামন্ত্রী এ দিন কেন বিষয়টি অস্বীকার করলেন, সেটা তাঁদের বোধগম্য হচ্ছে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE