Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

ভদ্রেশ্বরের ভাগাড় নিয়েও এ বার প্রশ্ন

ভদ্রেশ্বরের সুভাষ ময়দানের পাশেই ভাগাড়। ঘেরা জায়গা। বাইরে থেকে কিছু ঠাহর হয় না। মৃত কুকুর-বিড়াল বা গবাদি পশুর দেহ সেখানে ফেলা হয়। ভাগাড়ের মধ্যেই একটি ঘর রয়েছে।

হুগলির ভদ্রেশ্বরের ভাগাড় নিয়েও এ বার প্রশ্ন উঠে গেল। ফাইল চিত্র।

হুগলির ভদ্রেশ্বরের ভাগাড় নিয়েও এ বার প্রশ্ন উঠে গেল। ফাইল চিত্র।

প্রকাশ পাল ও তাপন ঘোষ
ভদ্রেশ্বর শেষ আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০১৮ ০৪:০০
Share: Save:

ভাগাড় থেকে মৃত পশুর মাংস কোথায় যাচ্ছে, তা নিয়ে তোলপাড় কলকাতা। হোটেল-রেস্তরাঁয় কিসের মাংস বিক্রি হচ্ছে, তা নিয়ে চর্চা চলছে। হুগলির ভদ্রেশ্বরের ভাগাড় নিয়েও এ বার প্রশ্ন উঠে গেল।

ভদ্রেশ্বরের সুভাষ ময়দানের পাশেই ভাগাড়। ঘেরা জায়গা। বাইরে থেকে কিছু ঠাহর হয় না। মৃত কুকুর-বিড়াল বা গবাদি পশুর দেহ সেখানে ফেলা হয়। ভাগাড়ের মধ্যেই একটি ঘর রয়েছে। সেখানে ওই সব পশুর দেহ থেকে ছাল ছাড়িয়ে মাংস আলাদা করা হয়। সেই মাংস গাড়িতে বা সাইকেলে চাপিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।

কোথায় যায় মাংস?

পুরসভা সূত্রের খবর, তাদের সঙ্গে চুক্তি রয়েছে চাঁপদানির জনৈক মহম্মদ ইয়াসিনের সঙ্গে। ২০১৭ সালে দু’বছরের জন্য চুক্তি হয় ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকায়। মরা পশু এলেই দুই যুবক তৈরি থাকেন মাংস কাটার জন্য। উপার্জনও হয় ভালই। ইয়াসিনের দাবি, ওই মাংস নৈহাটিতে নিয়ে যাওয়া হয় হাইব্রিড মাগুরের খাদ্য হিসেবে। তিনি বলেন, ‘‘দীর্ঘদিন ধরেই তো এই ব্যবসা করি। চামড়া, মাংস আমরাই নিয়ে যাই। পুরসভার সঙ্গে সেই চুক্তি আমাদের আছে।’’

শুক্রবারই ওই মাংস নিয়ে যাওয়ার কথা জানাজানি হওয়ায় পুরসভার চুক্তি নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। পুরসভার বিরোধী দলনেতা, সিপিএমের দেবগোপাল চক্রবর্তী বলেন, ‘‘সত্যিটা সব মানুষেরই জানা দরকার। সত্যটা যাদের বের করার কথা, তারা সেটা করুক।’’ বিষয়টি নিয়ে হইচই শুরু হতেই শনিবার ভাগাড়ের ঘরটি তালাবন্ধ করে দেন পুর কর্তৃপক্ষ। ভদ্রেশ্বর থানার পুলিশ ভাগাড়ে সরেজমিন তদন্তে যায়। সেখানে কড়া নজরদারি চালানো হচ্ছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

পুর কর্তৃপক্ষ থেকে জেলা প্রশাসন— চুক্তি কারও কাছেই সদুত্তর মেলেনি। শুক্রবার উপ-পুরপ্রধান প্রকাশ গোস্বামী জানিয়েছিলেন, আগে নজরদারিতে কিছুটা ঘাটতি থাকলেও নবান্নের নির্দেশের পর থেকে মরা পশু মাটিতে পুঁতে ফেলা হচ্ছে। শনিবার তিনি অবশ্য মেনে নেন, মাছ চাষের জন্য মাংস নিয়ে যাওয়া হয়।

পুরপ্রধান প্রলয় চক্রবর্তী বলেন, ‘‘সবে কয়েক মাস হল দায়িত্ব নিয়েছি। এ ব্যাপারে কিছুই জানতাম না। সব কাগজপত্র খতিয়ে দেখছি। পুরসভা প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থাই নেবে।’’ জেলাশাসক সঞ্জয় বনশল বলেন, ‘‘বিষয়টি আমাদের গোচরে ছিল না। তবে প্রশাসন বিষয়টি হালকা ভাবে নিচ্ছে না। প্রশাসনিক স্তরে যা ব্যবস্থা নেওয়ার, অবশ্যই নেওয়া হবে।’’ ঠিক কী চুক্তি হয়েছিল, কী ভাবে কোথায় মাংস যাচ্ছিল, সবটাই দেখা হবে বলে জেলাশাসক জানান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE