Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

বরফে চাপা দিয়ে রাখা থাকছে মাংস

নিরাপদ মাছ মাংস চেনার উপায় কী? কাঁচা মাছ মাংস তাও বোঝার উপায় রয়েছে। কিন্তু রান্না করা মাংস বোঝা সত্যিই শক্ত। নিরাপদ মাছ মাংস চেনার উপায় কী? কাঁচা মাছ মাংস তাও বোঝার উপায় রয়েছে। কিন্তু রান্না করা মাংস বোঝা সত্যিই শক্ত।

অখাদ্য: মালদহে পুরসভার অভিযানে নামী রেস্তোরাঁয় ধরা পড়ল এই পচা মাংস। নিজস্ব চিত্র

অখাদ্য: মালদহে পুরসভার অভিযানে নামী রেস্তোরাঁয় ধরা পড়ল এই পচা মাংস। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৩ মে ২০১৮ ০২:০৯
Share: Save:

খেতে গেলেই এখন নানা চিন্তা। কিন্তু চিন্তা রয়েছে বাজারেও। বাসি মাংসে টাটকা রক্ত ছড়িয়ে দেওয়া হয় অনেক সময়। থাকলে সেটাও ধরা যাবে বলে তাঁরা মনে করেন। কদিন আগেই জলপাইগুড়িতে একাধিক হোটেলে তল্লাশি চালিয়ে দেখা গিয়েছে বাসি মাংসের সম্ভার মজুত রয়েছে। কোথাও দেখা গিয়েছে মাংসে ছত্রাক হয়ে গিয়েছে। পুলিশ ও পুরসভা একযোগে গিয়ে তা বন্ধ করেছে।

শিলিগুড়ির হিলকার্ট রোডের একাধিক রেস্তোরাঁ মালিক একান্তে স্বীকার করেছেন, শিলিগুড়িতেই পুলিশ-প্রশাসন যৌথভাবে হোটেলের ফ্রিজ, স্টোর রুমে হানা দিলে অনেক অজানা তথ্য সামনে আসতে পারে। কিন্তু, শিলিগুড়িতে বাছাই কিছু হোটেলে তল্লাশি হলেও ৯০ শতাংশ রেস্তোরাঁই এখনও পুরসভা-প্রশাসনের তল্লাশির আওতার বাইরে রয়ে গিয়েছে বলে হোটেল মালিকদের কয়েকজন জানিয়েছেন।

শিলিগুড়িতে তিন দশক ধরে পাঁঠা, খাসি সরবরাহ করেন এক ব্যবসায়ী। তিনি জানান, একশ্রেণির মাংস দোকানে অবিক্রিত মাংস, হাড়গোড় বরফ দিয়ে ঢেকে রাখা হয়। সেগুলো পরে টাটকার সঙ্গে মিশিয়ে বিক্রি করে দেওয়া হয়ে থাকে বলে তিনি শুনেছেন। এমনকী, পাঁঠা, ছাগলের মাথাও বরফের নীচে রেখে দু-চারদিন পরে বিক্রি হয় বলেও তিনি জানিয়েছেন। যদিও শিলিগুড়ির মাংস ব্যবসায়ীরা প্রায় সকলেই সে কথা অস্বীকার করেছেন। তাঁরা দাবি করেছেন, কোথাও অসাধু উপায়ে বাসি মাংস বিক্রি করা হয় না।

পুরসভা দাবি করছে, বেশ কিছু দোকানে অবিক্রিত মাংস বিক্রির কারবার চলে। সম্প্রতি শিলিগুড়ির সুভাষপল্লিতে, যেখানে খোদ মেয়র অশোক ভট্টাচার্য়, খোদ মন্ত্রী গৌতম দেব মাঝেমধ্যেই বাজার করতে যান, সেখানে তল্লাশিতে গিয়ে দেখা গিয়েছে পচা মাংস বরফের নীচে রাখা হয়েছে। ধরার পড়ার পরে সেই ব্যবসায়ী দাবি করেছেন, নেপালে খামারে পাঠানোর জন্য তা রাখা হয়েছে।

ফলে, আতঙ্ক কিন্তু থেকেই যাচ্ছে। শিলিগুড়ি পুরসভার মেয়র অবশ্য দাবি করেছেন, রোজ তল্লাশি চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কাজেই শহরবাসীর দুশ্চিন্তার কিছু নেই বলে তাঁর দাবি।

যা শুনে হেসেছেন পুরসভার বিরোধী দলনেতা রঞ্জন সরকার। তৃণমূলের ওই কাউন্সিলর বলেছেন, ‘‘শহরে পচা মাংস, বাসি মাংস কোথায়, কী ভাবে কারা মেশাচ্ছে তা ধরতে নিয়মিত নজদরদারি দরকার। শিলিগুড়ির মেয়র তো বেশির ভাগ সময়ে দলের কাজে এধার-উধার থাকেন। পুরসভা কী ভাবে চলছে তা সেখানে গেলেই বোঝা যায়। সে জন্যি তো আমরা কাউন্সিলররা নিয়মিত নজর রাখছি। বেচাল দেখলেই প্রাণিসম্পদ দফতরকে জানিয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছি।’’

দলাদলি, চাপানউতর চলবেই। শিলিগুড়িবাসীর সিংহভাগ এখন চান, নিরাপদ মাংস যেন পাতে পড়ে সেটা নিশ্চিত করুক পুরসভা-পুলিশ-প্রশাসন। শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের একাদিক অফিসার জানান, তাঁরা ভাগাড় কাণ্ডের পরে আপাতত মাংস খাওয়া ছেড়ে দিয়েছেন।

ফলে ভেজাল মাংসের হাত থেকে কী ভাবে পুরোপুরি রেহাই মিলবে সেই প্রশ্নের উত্তর কিন্তু মেলেনি শহরবাসীদের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Carcass Meat Rotten Meat Ice
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE