Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
State News

দিল্লি পারল, বঙ্গে স্কুল ফি নিয়ন্ত্রণ কবে

বিভিন্ন বেসরকারি স্কুল অতিরিক্ত ফি নেওয়ায় ব্যাপক ক্ষোভ রয়েছে পশ্চিমবঙ্গেও। ফি নিয়ন্ত্রণে উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য সরকার। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। ‘‘বিষয়টি নিয়ে আমরাও আলাপ-আলোচনা করছি। এখানে পাকাপাকি ভাবে একটা সুরাহার কথা ভাবছি। যত দ্রুত সম্ভব এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করব,’’ বলেছেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ মে ২০১৮ ০৫:২২
Share: Save:

করে দেখাল দিল্লি। পশ্চিমবঙ্গ কবে বেসরকারি স্কুলের ফি নিয়ন্ত্রণ করবে, সে-দিকেই তাকিয়ে শিক্ষা শিবির।

দিল্লির বিভিন্ন বেসরকারি স্কুল ২০১৬ সালের জুন থেকে ২০১৮ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত বাড়তি ফি নিয়েছিল। এই ধরনের ৫৭৫টি বেসরকারি স্কুলকে ৯% সুদ-সহ সেই টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে দিল্লি সরকার। ষষ্ঠ বেতন কমিশনের প্রস্তাব অনুসারেই অরবিন্দ কেজরীবাল সরকারের এই নির্দেশ।

দিল্লি হাইকোর্টের গঠিত একটি কমিটি সম্প্রতি বিভিন্ন বেসরকারি স্কুলে সমীক্ষা চালায়। ষষ্ঠ বেতন কমিশনের সুপারিশ রূপায়ণের আগে স্কুলগুলির ফি-কাঠামো খতিয়ে দেখতে গিয়েই এই বাড়তি ফি-র বিষয়টি সেই কমিটির নজরে পড়ে। তার পরেই ফি নিয়ন্ত্রণের সিদ্ধান্ত নেয় কেজরীবাল সরকার।

বিভিন্ন বেসরকারি স্কুল অতিরিক্ত ফি নেওয়ায় ব্যাপক ক্ষোভ রয়েছে পশ্চিমবঙ্গেও। ফি নিয়ন্ত্রণে উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য সরকার। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। ‘‘বিষয়টি নিয়ে আমরাও আলাপ-আলোচনা করছি। এখানে পাকাপাকি ভাবে একটা সুরাহার কথা ভাবছি। যত দ্রুত সম্ভব এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করব,’’ বলেছেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।

গত বছর মে মাসে খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উদ্যোগী হয়ে ‘সেল্ফ রেগুলেটরি কমিশন’ তৈরি করে দিয়েছিলেন। তার পরে প্রায় এক বছর কেটে গিয়েছে। এত দিনেও বেসরকারি স্কুলগুলির ফি বৃদ্ধিতে লাগাম পরাতে পারেনি রাজ্য। স্কুলশিক্ষা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সেই কমিশন তৈরি হলেও কাজ বিশেষ এগোয়নি। গত সেপ্টেম্বরে এক বৈঠকের পরে প্রাথমিক প্রস্তাব তৈরি হয়েছিল।

ওই কমিশনে স্কুলশিক্ষা সচিব, রাজ্য পুলিশের ডিজি এবং কলকাতার পুলিশ কমিশনারেটের এক জন করে প্রতিনিধির পাশাপাশি বাছাই করা কয়েকটি স্কুলের প্রতিনিধিদেরও রাখতে বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কলকাতার বিশপ অশোক বিশ্বাস এবং আর্চবিশপ টমাস ডি’সুজাকেও কমিশনে থাকতে অনুরোধ করেন তিনি। কিন্তু পরবর্তী কালে তাঁরা দু’জনেই ওই কমিশন থেকে বেরিয়ে আসার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। তার পরে সেখান থেকে কয়েকটি স্কুলও বেরিয়ে যায়। সেই সব বেসরকারি স্কুলের মধ্যে রয়েছে সংখ্যালঘু পরিচালিত প্রায় ৭০০ স্কুল। স্কুলগুলির বিষয়ে সরকার কতটা হস্তক্ষেপ করতে পারে, সেই প্রশ্নও রয়েছে বলে জানান স্কুলশিক্ষা দফতরের এক কর্তা। কেননা সংবিধানে এই ধরনের স্কুলের স্বাধিকারের কথা বলা আছে।

স্কুলের ফি নির্ধারণ করতে একটি সাব-কমিটি গড়া হয়েছিল। কিন্তু তাতেও তেমন কাজ হয়নি বলেই দাবি সদস্যদের। মার্চে দ্য অ্যাসেম্বলি অব গড চার্চ স্কুলে ফি বৃদ্ধি নিয়ে অভিভাবকদের বিক্ষোভের পরে কমিশনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।

স্কুলশিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, কয়েকটি স্কুল নিজেরাই সরকারের কাছে প্রস্তাব দিয়েছে, বছরে সর্বোচ্চ ১০ শতাংশের বেশি ফি বৃদ্ধি হবে না। সেই সঙ্গেই তাদের ইচ্ছে, ছাত্র-শিক্ষক অনুপাত, স্কুলের অবস্থান এবং পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে স্কুলের ‘র‌্যাঙ্কিং’ বা মান-পর্যায় ঠিক করা হোক এবং তার ভিত্তিতে অভিভাবকদের সঙ্গে নিয়ে ফি বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিক স্কুল। শিক্ষামন্ত্রী কিছু দিন আগে জানিয়েছিলেন, তাঁদের কাছে নতুন ফি-কাঠামো নিয়ে কিছু প্রস্তাব এসেছে। সব ক’টি প্রস্তাব একসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হবে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন তিনিই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE